আরও সংকটে কংগ্রেস, এবার পদত্যাগ জ্যোতিরাদিত্যর

মুম্বাই কংগ্রেস নেতা মিলিন্দ দেওরাও একই পথে

প্রকাশ | ০৮ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া
রাহুল গান্ধীর পর এবার জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। আরও একটি উইকেট পড়ল ভারতের কংগ্রেসের। রোববার দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ ছেড়েছেন দলটির সাবেক এমপি। লোকসভায় পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের ৪০টি আসনের পর্যবেক্ষক ছিলেন সিন্ধিয়া। সেই সঙ্গে মধ্যপ্রদেশের গুণা আসনের কংগ্রেস প্রার্থীও ছিলেন তিনি। জ্যোতিরাদিত্যের পর্যবেক্ষণে থাকা কোনো আসনেই জেতেনি কংগ্রেস। এমনকি তিনি নিজে পারিবারিক আসন গুণা থেকে পরাজিত হয়েছেন। পরাজয়ের সব দায় নিয়ে, এবার সরে দাঁড়ালেন সেই জ্যোতিরাদিত্য। সংবাদসূত্র : ইনডিয়ান এক্সপ্রেস দলের সভাপতির পদ থেকে রাহুল গান্ধীর ইস্তফার জল্পনা শুরু হতেই কংগ্রেসে পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে। এরই মধ্যে অন্তত ২০০ নেতা পদত্যাগ করেছেন। রাহুল নিজে সরে দাঁড়ানোর পর তার ঘনিষ্ঠরাও একে একে পদত্যাগ করতে শুরু করেছেন। তবে, এখন পর্যন্ত তালিকায় সবচেয়ে বড় নাম সিন্ধিয়া। তার পদত্যাগের ফলে, মধ্যপ্রদেশেও বড় ধরনের ধাক্কা খেল কংগ্রেস। কারণ, এরই মধ্যে দলের রাজ্য সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ। পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন, দলের আরও দুই বর্ষীয়ান নেতা। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার পদত্যাগ অবশ্য কৌশলগত পদক্ষেপও হতে পারে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, রাহুলের পর নবীন ব্রিগেডের সদস্যরা একে একে পদ ছেড়ে এসে প্রবীণদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছেন। একা জ্যোতিরাদিত্য নয়, এদিন তরুণ ব্রিগেডের আরও একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা পদত্যাগ করেছেন। তিনি হলেন, যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি কেশবচাঁদ যাদব। তিনিও রাহুলের পদত্যাগকেই নিজের পদ ছাড়ার কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন। কেশব বলেন, 'আমি রাজনীতিতে এসেছিলাম রাহুল গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই। ২০১৯ লোকসভায় পরাজয়ের দায় নিয়ে সরে দাঁড়াচ্ছি। আগের মতোই একজন কংগ্রেস কর্মী হিসেবে কাজ করে যাব।' এদিকে রোববার পদত্যাগ করেছেন, মুম্বাই কংগ্রেস কমিটির প্রধান মিলিন্দ দেওরাও। তিনি জানান, পদত্যাগ করলেও, দল ছাড়ছেন না তিনি। আপাতত সংগঠনের কাজ করতে চান বলে জানিয়েছেন দেওরা। তার মন্তব্য, জাতীয় পর্যায়ে কংগ্রেসকে চাঙ্গা করতে যদি কোনো সাহায্য তিনি করতে পারেন, তাহলে সেই কাজও মাথা পেতে নেবেন তিনি। তবে মহারাষ্ট্রে সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে মুম্বই কংগ্রেসের প্রধানের পদত্যাগে যথেষ্ট চিন্তায় কংগ্রেস। মিলিন্দ বলেন, মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ বিজেপি শিবসেনা জোটের মোকাবেলা করা। সেই লক্ষ্যে আরও শক্তিশালী সংগঠন দরকার। জুন মাসের ২৬ তারিখেই দিলিস্নতে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকের পর পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন মিলিন্দ দেওরা। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, তার পদত্যাগপত্র পৌঁছে গেছে দলের সাধারণ সম্পাদক মলিস্নকার্জুন খাড়্‌গে ও কেসি বেণুগোপালের কাছে। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে মিলিন্দ দেওরাকে মুম্বাই কংগ্রেসের সভাপতি করা হয়। তবে লোকসভা ভোটে মহারাষ্ট্রে আশানুরূপ ফল করতে পারেনি কংগ্রেস। মিলিন্দ দেওরা বলেন, মুম্বাই ইউনিট সামলানোর জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হোক। সেই কমিটিকে সহযোগিতা করার জন্য সবসময় তিনি প্রস্তুত বলে জানান। উলেস্নখ্য, লোকসভা নির্বাচনে মুম্বাই দক্ষিণ আসনে শিবসেনা প্রার্থী অরবিন্দ সাওয়ান্তের কাছে হেরে যান মিলিন্দ দেওরা। গত শনিবার পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং প্রকাশ্যে বলেছিলেন, রাহুল গান্ধীর উত্তরাধিকারী হতে পারেন একমাত্র তরতাজা কোনো তরুণ নেতা। তারপরই দলের তিন গুরুত্বপূর্ণ তরুণ নেতার পদত্যাগ। এসবকে একপ্রকার কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল বলেই মনে করা হচ্ছে।