ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ

ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার হুমকি

প্রকাশ | ০৯ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও
ইরানের বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। মাত্র একদিন আগেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধের মাত্রা আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ইরান। দেশটির এমন ঘোষণার পরই তাদের বিরুদ্ধে নতুন করে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিল যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইরানের ধ্বংসাত্মক পরিণতির জন্য চরম মূল্য দিতে হবে। অন্যদিকে, ইরান কোনো দেশের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল আবদুলরহিম মৌসাভি। সোমবার তিনি এই মন্তব্য করেন। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, বিবিসি ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘন করে ইরান তাদের ইউরেনিয়ামের মাত্রা আরও সমৃদ্ধ করছে। এ বিষয়ে এক টুইট বার্তায় পম্পেও বলেন, ইরানের সাম্প্রতিক ইউরেনিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধির ঘোষণা বিশ্ব থেকে তাদের আরও বিচ্ছিন্ন করে দেবে এবং তাদের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। ছয় বিশ্বশক্তির দেশের সঙ্গে ইরানের ওই পরমাণু চুক্তি থেকে গত বছরই বেরিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার এক বছর পূর্তিতে নিষেধাজ্ঞাগুলো এড়ানোর উপায় বের করতে চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ৬০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিল ইরান। কিন্তু ওই সময়সীমা শেষ হয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি ইউরোপীয় দেশগুলো। এরপরেই নিজেদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধের মাত্রা বৃদ্ধির ঘোষণা দেয় ইরান। রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে আব্বাস আরাকচি বলেন, আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা তিন দশমিক ৬৭ শতাংশের বেশি বাড়ানো হবে। ইরানের বুশেহর বিদু্যৎকেন্দ্রের জ্বালানি সরবরাহের জন্যই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধের মাত্রা বৃদ্ধি করা হচ্ছে বলে উলেস্নখ করেন তিনি। এর আগে ইরানের এক কর্মকর্তা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা পাঁচ শতাংশে উন্নীত করা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেন। পরমাণু অস্ত্র বানাতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ৯০ শতাংশ বা তার বেশি হতে হয়। ইরান গত চার বছর ধরে পরমাণু সমঝোতা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করলেও ২০১৮ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর ইউরোপ ইরানকে এ সমঝোতা বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলেও তা পালনে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকেই ইরানের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে চলেছে। এক ঘোষণায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ বলেন, তার দেশ এখনো যেকোনো সময় আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছে এবং ইউরোপীয়রা তাদের প্রতিশ্রম্নতি পালন করলে ইরানও আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। এদিকে, তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়ার পর দেশটির গতিবিধি পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)। জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের চুক্তি থেকে সরে এসে তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আইএইএ সজাগ রয়েছে। ইরানে থাকা সংস্থাটির পরিদর্শকরা শিগগিরই তাদের পর্যালোচনা প্রতিবেদন পাঠাবেন। অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা সংস্থার সদর দপ্তরে এ প্রতিবেদন পাঠানো হবে। গত বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে সিরিয়াগামী ইরানি তেল ট্যাংকার 'গ্রেস ওয়ান'কে আটক করে যুক্তরাজ্যের রাজকীয় নৌবাহিনী। ট্যাংকার আটককে অবৈধ উলেস্নখ করে ক্ষোভ জানিয়েছে ইরান। তেহরানে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকেও তলব করেছে দেশটি। ট্যাংকার আটকের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে শুক্রবার টুইট করেন ইরানের রেভু্যলিউনারি গার্ডের প্রধান মেজর জেনারেল মোহসেন রেজাই বলেন, 'যুক্তরাজ্য যদি ইরানি তেল ট্যাংকারকে ছেড়ে না দেয়, তবে একটি ব্রিটিশ তেল ট্যাংকারকে আটকে রাখাটা ইরানি কর্তৃপক্ষের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে যায়।'