মার্কিন হুমকি উপেক্ষা

তুরস্কে পৌঁছাল রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা

ম রাজধানী আঙ্কারার একটি বিমান ঘাঁটিতে নেয়া হয়েছে এস-৪০০

প্রকাশ | ১৩ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
রুশ এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার হুমকি উপেক্ষা করে রাশিয়ার এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তুরস্কে পৌঁছেছে। শুক্রবার এ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার সরঞ্জামের প্রথম চালান পেল আঙ্কারা। রাশিয়া এ চালান তুরস্কে পাঠানোর কথা নিশ্চিত করেছে। ওদিকে, এস-৪০০'র এই চালান রাজধানী আঙ্কারার একটি বিমান ঘাঁটিতে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সংবাদসূত্র : বিবিসি তুরস্কের বিমান-বিধ্বংসী এই রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেয়ার পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষুব্ধ করবে। তুরস্ক একইসঙ্গে রুশ এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র এবং মার্কিন এফ-৩৫ জঙ্গি বিমান রাখতে পারে না বলে যুক্তরাষ্ট্র এর আগে দেশটিকে সতর্ক করেছিল। তুরস্ক এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই ন্যাটো সামরিক জোটভুক্ত দেশ। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গেও তুরস্ক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলছে। তুরস্ক আড়াইশ কোটি ডলার ব্যয়ে রাশিয়ার অত্যাধুনিক এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনা ছাড়াও এ ব্যবস্থার প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য নিজেদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের রাশিয়ায় পাঠিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ১০০টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার জন্য তুরস্ক এর আগে চুক্তি করেছিল এবং এফ-৩৫ কর্মসূচিতে তারা প্রচুর বিনিয়োগও করেছে। তুরস্কের কোম্পানিগুলো বিমানের ৯৩৭টি খন্ডাংশ তৈরি করেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের সঙ্গে টানাপড়েনের সম্পর্ক চলার মাঝেও তুরস্ক ক্রমাগত আরও বেশি স্বাধীন প্রতিরক্ষা নীতির পথে হাঁটছে। এতেই আপত্তি যুক্তরাষ্ট্রের। দেশটির দাবি, রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ন্যাটো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ এবং তা নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করে। যুক্তরাষ্ট্র চায় রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের বদলে তুরস্ক মার্কিন প্যাট্রিয়ট বিমান বিধ্বংসী ব্যবস্থা কিনুক। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ওই অঞ্চলে ন্যাটোর আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হবে না। তারা বলছেন, এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান এবং এস-৪০০ ব্যবস্থা কাছাকাছি থাকা ঠিক নয়। এতে রুশ টেকনিশিয়ানদের এফ-৩৫ এর দুর্বলতা খুঁজে বের করে ফেলতে পারার আশঙ্কা আছে। তুরস্ক রাশিয়ার এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা নিলে তাদেরকে এফ-৩৫ কর্মসূচি থেকে বের করে দেয়াসহ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকিও দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক বৈঠকের পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়ে্যপ এরদোয়ান বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে না। তুরস্ক রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলেছে, দুটো ব্যবস্থা বসানো হবে দুটি ভিন্ন জায়গায়। তাছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র বিকল্প একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিতে দেরি করায় তারা রুশ ব্যবস্থা কিনছে। যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র তুরস্কের অবস্থান কৌশলগত। সিরিয়া, ইরাক ও ইরানের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে তাদের। সিরিয়া যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে তুরস্ক। কয়েকটি বিদ্রোহীগোষ্ঠীকে সেনা ও সামরিক সহায়তা দিয়েছে দেশটি। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কয়েকটি ন্যাটোভুক্ত দেশের সঙ্গে সম্প্রতি সম্পর্কের অবনতি হয়েছে তুরস্কের। ২০১৬ সালের অভু্যত্থান চেষ্টার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট আরও বেশি কর্তৃত্বশীল ভূমিকা নিয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছে তারা।