সৌদি ও আমিরাতে অস্ত্র বিক্রি নয়

প্রতিনিধি পরিষদে প্রস্তাব পাস

প্রকাশ | ১৯ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি বন্ধের প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ। সিনেটে অনুমোদন পাওয়ার প্রায় এক মাসের মাথায় বুধবার প্রস্তাবগুলো কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে পাস হলো। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তাবগুলো এখন হোয়াইট হাউসে যাবে। সেখানে ট্রাম্প এ বিষয়ে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংবাদসূত্র : এএফপি, সিএনএন গত মে মাসে কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে সৌদি আরবের কাছে ৮০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ধরনের অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে সাধারণত কংগ্রেসের অনুমোদনের দরকার হলেও বিশেষ অবস্থায় প্রশাসনিক আদেশ দিয়ে তা অনুমোদনের ক্ষমতা ব্যবহার করেছেন তিনি। ইরানের কাছ থেকে হুমকি বৃদ্ধিকে কারণ হিসেবে উলেস্নখ করেন ট্রাম্প। গত জুনে সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি নিষিদ্ধ করতে তিনটি প্রস্তাব অনুমোদন করে সিনেট। আর বুধবার প্রস্তাবগুলো পাস করেছে প্রতিনিধি পরিষদও। তিনটি প্রস্তাবের দুটি ২৩৮-১৯০ ভোটে এবং তৃতীয়টি ২৩৭-১৯০ ভোটে পাস হয়েছে। তিনটি প্রস্তাবেই সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় আঘাতের সক্ষমতা সম্পন্ন মার্কিন অস্ত্র ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাদি বিক্রি নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরব। সিরিয়া ও ইয়েমেন যুদ্ধ ছাড়াও ইরাক ও লেবাননে বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যে তাদের অবস্থানও বিপরীতমুখী। অন্যদিকে, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র সৌদি। ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে বেসামরিক মানুষের ওপর মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ থাকলেও রিয়াদের পক্ষে অবস্থান নেয়ার কথা বেশ কয়েকবারই স্পষ্ট করেছেন ট্রাম্প। এ ছাড়া প্রতিনিধি পরিষদ খুব সহজে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে এ অস্ত্র বিক্রিকে বাধা দিতে পারলেও ট্রাম্পের ভেটো ক্ষমতাকে অগ্রাহ্য করতে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে প্রায় ৫০টি ভোট পাওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে। সৌদিতে ৫০০ সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র! এদিকে, ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সৌদি আরবের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক আরও জোরালো করছে যুক্তরাষ্ট্র। এর অংশ হিসেবে দেশটিতে নতুন করে ৫০০ মার্কিন সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানিয়েছে। ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল শুরু করে ওয়াশিংটন। এরই মধ্যে দুই দফায় চুক্তি থেকে আংশিক সরে যাওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে তেহরান। আর ইরানের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ বৃদ্ধির অংশ হিসেবে উগসাগরীয় এলাকায় বিমানবাহী রণতরী, ক্ষেপণাস্ত্রসহ যুদ্ধ সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের হুমকি মোকাবেলায় ওয়াশিংটন এই পদক্ষেপ নেয়ার কথা বললেও তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে 'মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ' শুরুর অভিযোগ এনেছে। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে একাধিক তেলবাহী ট্যাংকারে বিস্ফোরণের ঘটনায় ইরানকে দায়ী করে আসছে ওয়াশিংটন। তেহরান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। গত ২০ জুন 'আরকিউ-৪ গেস্নাবাল হক' নামে একটি মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করে ইরানের সেনাবাহিনী। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে পেন্টাগনের পক্ষ থেকে ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার কথা স্বীকার করা হয়। তবে ইরানের আকাশসীমায় প্রবেশের অভিযোগ নাকচ করে তারা দাবি করে, আন্তর্জাতিক সীমার মধ্যে অবৈধভাবে তেহরান তাদের ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যেই সৌদি আরবে মার্কিন সেনা পাঠানোর ব্যাপারে ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনার কথা প্রকাশ করেছে গণমাধ্যম। ওই দুই কর্মকর্তার জানান, ট্রাম্প প্রশাসন সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের উত্তর অংশে অবস্থিত প্রিন্স সুলতান বিমান ঘাঁটিতে ৫০০ সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা জানিয়েছেন, বিমান ঘাঁটিতে আগে থেকেই অল্পসংখ্যক সেনা রয়েছে।