মার্কিন সেনা থাকার অনুমতি দিলেন সৌদি বাদশাহ

প্রকাশ | ২১ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সৌদি বাদশাহ সালমান
আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে নিজ দেশের মাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সদস্যদের থাকার অনুমতি দিয়েছেন সৌদি বাদশাহ সালমান। শুক্রবার সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনও এ খবর নিশ্চিত করেছে। 'ক্রমবর্ধমান, বিশ্বাসযোগ্য হুমকি মোকাবেলায় বাড়তি প্রতিরক্ষা প্রদানের' জন্য সৌদি আরবে সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, বিবিসি উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে যখন সামরিক উত্তেজনা অব্যাহতভাবে বাড়ছে, তখনই মার্কিন সেনাদের জন্য ঘাঁটি গড়ার কথা জানালো সৌদি। এদিকে, শুক্রবার তেহরান জানিয়েছে, হরমুজ প্রণালি থেকে তারা একটি ব্রিটিশ তেলবাহী ট্যাংকার আটক করেছে। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি ইরানি ড্রোন ভূপাতিতের যে দাবি করেছিলেন, তাও প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরান। সৌদি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, 'আঞ্চলিক নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও এর শান্তিরক্ষায় যৌথ সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য' মার্কিন বাহিনীকে সৌদিতে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আপাতত প্রায় ৫০০ সেনা সৌদিতে মোতায়েন করা হবে। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনা উপস্থিতি বাড়ানোর বিষয়ে গত মাসে পেন্টাগন যে ঘোষণা দিয়েছিল, তার অংশ হিসেবেই এসব সেনা সৌদিতে মোতায়েন করা হচ্ছে। জুনে মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছিল, মধ্যপ্রাচ্যে এক হাজার সেনা মোতায়েন করবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে তাদেরকে ঠিক কোথায় মোতায়েন করা হবে, তা তখন জানানো হয়নি। সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তা আভাস দিয়েছিলেন, ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সৌদি আরবের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক আরও জোরালো করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই অংশ হিসেবে দেশটিতে নতুন করে ৫০০ মার্কিন সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ওয়াশিংটন। মার্কিন দুই কর্মকর্তা জানান, ট্রাম্প প্রশাসন সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের উত্তর অংশে অবস্থিত প্রিন্স সুলতান বিমানঘাঁটিতে ৫০০ সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিমানঘাঁটিতে আগে থেকেই অল্প সংখ্যক সেনা রয়েছে। তবে ওই ঘাঁটিতে মোতায়েন থাকা মার্কিন প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাসহ রানওয়ে রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিমানঘাঁটির উন্নয়নের জন্য আরও কিছু সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সৌদি আরবে সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল শুরু করে ওয়াশিংটন। এরই মধ্যে দুই দফায় চুক্তি থেকে আংশিক সরে যাওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে তেহরান। আর ইরানের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ বৃদ্ধির অংশ হিসেবে উগসাগরীয় এলাকায় বিমানবাহী রণতরী, ক্ষেপণাস্ত্রসহ যুদ্ধ সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের হুমকি মোকাবিলায় ওয়াশিংটন এই পদক্ষেপ নেয়ার কথা বললেও তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে 'মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ' শুরুর অভিযোগ এনেছে। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে একাধিক তেলবাহী ট্যাংকারে বিস্ফোরণের ঘটনায় ইরানকে দায়ী করে আসছে ওয়াশিংটন। তেহরান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। গত ২০ জুন 'আরকিউ-৪ গেস্নাবাল হক' নামে একটি মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করে ইরানের সেনাবাহিনী। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে পেন্টাগনের পক্ষ থেকে ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার কথা স্বীকার করা হয়।