দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন

অচলাবস্থায় অনাহার-অর্ধাহারে দিন কাটছে কাশ্মীরিদের

জ্জ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা

প্রকাশ | ০৯ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাজার থেকে সবজি কিনছেন এক কাশ্মীরি
যাযাদি ডেস্ক ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে চলমান অচলাবস্থায় বন্ধ হয়ে গেছে স্বাভাবিক খাবার সরবরাহ। নেই বাইরের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ। ব্যাংক ও এটিএম বুথগুলোতেও টাকা নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে কাশ্মীরবাসী। ৭২ ঘণ্টা পার না হতেই দোকানগুলোতে শেষ হয়ে গেছে খাদ্যসামগ্রী। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে গেছে বহুগুণ। তিনদিন ধরে চলা এই অচলাবস্থায় অনাহার-অর্ধাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে নিম্নবিত্ত অনেক কাশ্মীরিকে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কাশ্মীরবাসীর এই দুর্দশা। গত সোমবার ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়। এদিকে, জম্মু-কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে পার্লামেন্টে একটি বিলও পাস করা হয়েছে। এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে কাশ্মীরজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেখানকার শতাধিক স্থানীয় নেতাকে। ইন্টারনেট-মোবাইল ফোন পরিসেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি। এই অচলাবস্থায় সেখানে খাদ্যের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। সোমবার থেকে বন্ধ রয়েছে যোগাযোগও। কারফিউ থাকায় চলাচলেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। খাবারের স্বল্পতা ও এটিএম কাজ না করায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ফলে বিপাকে পড়েছে নিম্নবিত্তরা। সানা নামে ২৩ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী জানান, 'তার কাছে পাঁচ ছয়জন ব্যক্তি এসে দাবি করেছিল, তাদের পরিবার না খেয়ে আছে। তিনি বলেন, 'মুদির দোকানে যেন মানুষের বন্যা ছিল। মসলা ও শাকসবজির দোকানেও ছিল ভিড়। হাজার হাজার মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। এছাড়া গ্যাস স্টেশনগুলোতেও দেখা গেছে গাড়ির লম্বা লাইন। ব্যাংকগুলোতেও টাকা শেষ হয়ে গেছে।' ভারতীয় সংবাদমাধ্যম 'দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস'র উপ-সম্পাদক মুজামিল জলিল বলেন, 'তারা শ্রীনগরের সব এটিএমেই খোঁজ নিয়ে দেখেছেন; টাকা নেই। অনেকেই এখন হাতে হাতে টাকা নিয়ে ঘুরছে। আর দরিদ্র শ্রেণির হাতে কোনো জমা টাকাও নেই।' তবে ভারতের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এই খাদ্যাভাবের ঘটনাকে অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, 'কাশ্মীর উপত্যকায় তিন মাসেরও বেশি খাবার মজুত রয়েছে।' অধিকারকর্মীদের আশঙ্কা, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রেখে আন্দোলনকারী ও বিরোধীপক্ষের নেতাদের গ্রেপ্তার করছে কেন্দ্রীয় সরকার। স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, এখন পর্যন্ত তিন শতাধিক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুলস্নাহও রয়েছেন। বিরোধীদলের অভিযোগ, সরকার ভারতের জনতাত্ত্বিক নকশাই পরিবর্তন করে দিতে চাইছে।