কাশ্মীর সংকট

মোদির পদক্ষেপ অসাংবিধানিক :প্রিয়াঙ্কা

ভুয়া খবরে প্ররোচিত হয়ে রাহুল কাশ্মীরকে অশান্ত করার চেষ্টা করছেন : গভর্নর বিরোধীদের একটি প্রতিনিধি দল এবং আমি জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ যাব : রাহুল

প্রকাশ | ১৫ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

ৎযাযাদি ডেস্ক
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী
ভারতের জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে মোদি সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন জাতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি বলেছেন, অসাংবিধানিক পথে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এদিকে, কাশ্মীরের গভর্নর সত্যপাল মালিক অভিযোগ করেছেন, ভুয়া খবরে প্ররোচিত হয়ে রাহুল কাশ্মীর সংকটের রাজনীতিকরণ করছেন। কাশ্মীরের সত্যিকারের পরিস্থিতি জানতে তাকে ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দেখার পরামর্শ দিয়েছেন কাশ্মীরের গভর্নর। সংবাদসূত্র : টাইমস অব ইনডিয়া, দ্য হিন্দু সম্প্রতি ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ওই দিন সকাল থেকে জম্মু-কাশ্মীর কার্যত অচলাবস্থার মধ্যে রয়েছে। দোকান, স্কুল, কলেজ ও অফিস বন্ধ রাখা হয়েছে। কোনো গণপরিবহন নেই। ইন্টারনেট-মোবাইল পরিষেবাও সীমিত। শুক্রবার জুমার নামাজ ও ঈদকে সামনে রেখে কারফিউ শিথিলের ঘোষণা দিয়েও গত রোববার তা পুনর্বহাল করা হয়। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশের সোনভদ্র সফরে গিয়ে প্রিয়াঙ্কা বলেন, 'কাশ্মীরে যখন ৩৭০ অনুচ্ছেদ বহাল করা হয়েছিল, তখন বেশ কিছু নিয়মও তৈরি হয়েছিল। সে নিয়মগুলো না মেনেই কেন্দ্রের মোদি সরকার তা খারিজ করার কথা ঘোষণা করেন। কারও কোনো মতামতই নেয়নি বিজেপি সরকার। কিন্তু কংগ্রেস সবার মতামতের সমান গুরুত্ব দিয়ে এসেছে সবসময়। সবার মতামত নিয়েই আলোচনা করেছে।' গত ৫ আগস্ট কাশ্মিরের ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজ করে দিয়ে লাদাখ ও কাশ্মীরকে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে সরব হলেও প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে লোকসভা ও রাজ্যসভা- দুই কক্ষেই পাশ করে বিজেপি সরকার। কাশ্মীরকে অশান্ত করার চেষ্টা করছেন রাহুল : গভর্নর এদিকে, গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর কাশ্মীরের কয়েকটি স্থানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে টিয়ার গ্যাস ও ছররা গুলির তান্ডব চালানো হয়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বিক্ষোভ ও সহিংসতার খবর এলেও তা অস্বীকার করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। শনিবার কংগ্রেসের সদ্য সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী সহিংসতার কথা তুললে সোমবার তার বক্তব্য নাকচ করে দেন কাশ্মীরের গভর্নর সত্যপাল মালিক। তিনি বলেন, 'তিনি কাশ্মীরকে অশান্ত করার চেষ্টা করছেন। তই আমি রাহুল গান্ধীকে এখানে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আমি আপনাকে একটি বিমান পাঠাতে পারি, যাতে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে কথা বলতে পারেন। আপনি একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি আপনার এভাবে কথা বলা উচিত নয়'। এরপর মঙ্গলবার এক টুইট বার্তায় সত্যপালের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানান রাহুল। তিনি লেখেন, 'আপনার আমন্ত্রণ গ্রহণ করছি। বিরোধীদের একটি প্রতিনিধি দল এবং আমি জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ যাবো। আমাদের কোনো বিমান চাই না। কিন্তু দেখবেন আমাদের যেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হয়। যেকোনো জায়গায় যেতে দেয়া হয়। আমরা ওখানকার রাজনৈতিক নেতা, সাধারণ মানুষ ও জওয়ানদের সঙ্গেও কথা বলতে চাই।' ওই টুইটের জবাবে মালিক দাবি করেন, জম্মু-কাশ্মীরের বিষয়টি ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনীতিকরণ করছেন রাহুল গান্ধী। তার অভিযোগ, এ ধরনের আচরণ করে পরিস্থিতি অশান্ত করে তুলতে চাইছেন রাহুল। সত্যপালের দাবি, ভুয়া খবর বিশ্বাস করে এ ধরনের মন্তব্য করছেন রাহুল গান্ধী। তিনি রাহুলের উদ্দেশে বলেন, 'কাশ্মীর সম্পর্কে জানতে হলে ভারতীয় চ্যানেলগুলো দেখুন। গত সপ্তাহে এখানে ২০টি টিভি চ্যানেল ছিল। তাদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি যাচাই করে, তারপর কথা বলা উচিত তার।' উলেস্নখ্য, গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ওই দিন সকাল থেকে জম্মু-কাশ্মীরের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগর কার্যত অচলাবস্থার মধ্যে রয়েছে।