ব্রেক্সিট সংকট

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতে রাজি ব্রিটিশ বিরোধী নেতা

প্রকাশ | ১৬ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
জেরেমি করবিন
যাযাদি ডেস্ক চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল ও সরকারের একাংশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিরোধী নেতা জেরেমি করবিন অনাস্থা প্রস্তাব এনে সরকার ভেঙে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সংবাদসূত্র : এএফপি, ডয়চে ভেলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ব্রেক্সিটের প্রশ্নে কড়া অবস্থান নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এখন তিনি নিজেই এমন চাপের মুখে পড়েছেন যে, তার গদি নিয়েই টানাটানি শুরু হয়েছে। তিনি প্রয়োজনে আগামী ৩১ অক্টোবর চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট কার্যকর করার হুমকি দিয়ে আসছেন। তবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এই অবস্থানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ বাড়ছে। প্রথমে স্পিকার জন বার্কো, তারপর প্রধান বিরোধী দলের নেতা জেরেমি করবিন প্রধানমন্ত্রী বরিসকে সাবধান করে দিয়েছেন। লেবার দলের পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বুধবার বলেছেন, চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের বিপর্যয় এড়াতে তিনি যত দ্রম্নত সম্ভব সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চলেছেন। সব দলের নেতা ও সরকারি দলের এমপিদের উদ্দেশে লেখা এক চিঠিতে তিনি দাবি করেছেন, সরকারের হাতে 'নো ডিল ব্রেক্সিট'র কোনো ম্যান্ডেট বা জনাদেশ নেই। করবিন জানিয়েছেন, অনাস্থা ভোটে সরকারের পরাজয় ঘটলে তিনি নিজে সীমিত সময়ের জন্য তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেবেন। তারপর তিনি পার্লামেন্ট নির্বাচনের আয়োজন করে ব্রেক্সিটের সময়সীমা বাড়ানোর উদ্যোগ নেবেন। নির্বাচনী প্রচারে লেবার পার্টি ইইউ ছাড়ার (ব্রেক্সিট) প্রশ্নে আবার গণভোটের পক্ষে অবস্থান নেবে এবং তার ফল মেনে নেবে, এমন কথাও জানিয়েছেন করবিন। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ বা টোরি দলের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কড়া অবস্থানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ বাড়ছে। বুধবার সাবেক অর্থমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড বরিস জনসনের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে ইইউ'র সঙ্গে আলোচনা বানচাল করার অভিযোগ এনেছেন। সেইসঙ্গে তিনি বলেন, পার্লামেন্টের হাতে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট থামানোর ক্ষমতা রয়েছে। 'দ্য টাইমস' সংবাদপত্রে এক লেখায় তিনি মনে করিয়ে দেন, ব্রিটিশ জনগণ ও পার্লামেন্ট চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে। তার মতে, আপাতত টোরি দলের কট্টরপন্থিরা সরব থাকলেও সংখ্যার বিচারে তাদের শক্তি কম। এদিকে, কোণঠাসা প্রধানমন্ত্রী বরিস ঘরে-বাইরে এই প্রতিরোধের সমালোচনা করেছেন। তার মতে, পার্লামেন্টে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের বিরোধিতার ফলে ইইউ'র সঙ্গে আলোচনার টেবিলে ব্রিটিশ সরকারের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়ছে। ফলে পার্লামেন্ট চুক্তিহীন ব্রেক্সিট বন্ধ করতে সফল হয় কি না, তা দেখতে ইইউ অপেক্ষা করবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যে বিদায় নিতে আর ৯০ দিনও বাকি নেই। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বারবার বলে চলেছেন, যেকোনো মূল্যে নির্ধারিত এই তারিখে ব্রেক্সিট কার্যকর করা হবে। অর্থাৎ প্রয়োজনে কোনো চুক্তি ছাড়াই যুক্তরাজ্য ইইউ ত্যাগ করবে। এই অবস্থায় আগামী ৩ সেপ্টেম্বর গ্রীষ্মকালীন বিরতির পর পার্লামেন্ট অধিবেশনের দিকে সবার নজর থাকবে। তবে যুক্তরাজ্যের অলিখিত সংবিধান বর্তমান সংঘাতকে জটিল করে তুলতে পারে। কারণ ব্রেক্সিটকে ঘিরে বর্তমান অচলাবস্থা যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে নজিরবিহীন। স্বল্পমেয়াদি অধিবেশনে সরকারের হাতে পার্লামেন্টের কর্মসূচি থাকায় এমপিরা বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন।