জম্মু-কাশ্মীরে অচলাবস্থা

টেলিফোন, মোবাইল, ইন্টারনেট সেবা আংশিক চালু

এলাকা অনুযায়ী স্কুল খুলবে আজ

প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে টানা ১২ দিনের অচলাবস্থার কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করেছে। শনিবার স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শ্রীনগরের কয়েকটি অংশসহ কাশ্মীর উপত্যকার প্রায় ৫০ হাজারের বেশি টেলিফোন লাইন সচল করা হয়েছে এবং পাঁচ জেলার মোবাইল, ইন্টারনেট পুনরায় চালু হয়েছে। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, পিটিআই গত ৪ আগস্ট থেকেই জম্মু-কাশ্মীরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় টেলিফোন ও মোবাইল ইন্টারনেট। অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের মাধ্যমে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয় পুরো উপত্যকা। এমন পরিস্থিতিতেই ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। লাদাখ ও কাশ্মীরকে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে পার্লামেন্টে বিল আনা হয়। বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ বিরোধিতার অভাবে ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভা দুই কক্ষেই পাস হয়ে যায় বিলটি। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে থেকে সেখানে আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে এসব ফোনের লাইন বন্ধ করা হয়েছিল। প্রায় দুই সপ্তাহ পর সেগুলো আবার চালু হলো। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, এর মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। যদিও উপত্যকাটির শতাধিক টেলিফোন এক্সচেঞ্জের মধ্যে মাত্র ১৭টি চালু করা হয়েছে শনিবার। কেন্দ্রীয় কাশ্মীরের বুদগাম, সোনামার্গ ও মানিগাম এলাকায়, উত্তর কাশ্মীরের গুরেজ, তাংমার্গ, উরি কেরান কার্নাহ ও টাংধর এলাকায় এবং শ্রীনগরের সিভিল লাইন এলাকা, ক্যান্টনমেন্ট ও বিমানবন্দর এলাকায় ল্যান্ডলাইন সেবা সচল করা হয়েছে। জম্মু অঞ্চলের জম্মু, রেয়াসি, সাম্বা, কাঠুয়া ও উধমপুর, এই পাঁচটি জেলায় টু-জি মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ ফের চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি জম্মু অঞ্চলের কয়েকটি স্থানে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। এদিকে, জম্মু-কাশ্মীরের সরকারি দপ্তরগুলোর কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন দাবি করেছে। নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার জন্য কী কী পদক্ষেপ নেয়া যায়, তারও পর্যালোচনা চলছে বলে জানিয়েছে তারা। আজ (সোমবার) থেকে 'এলাকা অনুযায়ী' স্কুল খুলবে এবং ধাপে ধাপে টেলিফোন সেবাগুলো চালু করা হবে বলে শুক্রবার জানিয়েছেন কাশ্মীরের মুখ্য সচিব বিভিআর সুব্রাহ্মনিয়াম। এ ব্যাপারে জম্মু-কাশ্মীরের গভর্নর সত্যপাল মালিকও গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। প্রতিদিন কাশ্মীরের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে ভারতের সর্বোচ্চ আদালতকে শুক্রবার জানিয়েছে দেশটির সরকার। এরপরও কাশ্মীর উপত্যকার কয়েকটি অংশ এখনো পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে। কাশ্মীর উপত্যকার অধিকাংশ স্থানে ফোন সার্ভিস ও ইন্টারনেট সংযোগ স্থগিত আছে এবং সেখানে কারফিউয়ের মতো বিধিনিষেধ বলবৎ আছে। কাশ্মীর উপত্যকার চারশরও বেশি রাজনৈতিক নেতাকে আটক ও গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুলস্নাহ ও মেহবুবা মুফতিও রয়েছেন।