ইসরাইলের 'মানবিক' সফরের শর্ত প্রত্যাখ্যান রাশিদার

প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
রাশিদা তালিব
ভিসা প্রত্যাখ্যানের পর ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতা রাশিদা তালিবকে ফিলিস্তিনে 'মানবিক কারণে' পারিবারিক সফরের অনুমতি দিলেও পশ্চিম তীরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন তিনি। সেখানে রাশিদার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ না করার শর্তে ইসরাইলের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে এই অনুমতি দেয়। তবে শুক্রবার ইসরাইলের ওই শর্তকে 'নিপীড়নমূলক' উলেস্নখ করে ফিলিস্তিনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রাশিদা। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, ট্রিবিউন শুক্রবার সকালে এক টুইট বার্তায় রাশিদা বলেন, 'আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই নিপীড়নমূলক শর্ত মেনে দাদিকে দেখতে যাওয়ার মানে হলো আমি যে বর্ণবাদ, নির্যাতন ও অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশ্বাস করি, তার বিরুদ্ধে যাওয়া'। রাশিদা তালিব যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রথম মুসলমান নারী কংগ্রেস সদস্য। তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রগতিশীল অংশের সঙ্গে যুক্ত। মার্কিন এই নারী আইনপ্রণেতা ট্রাম্প ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরাইলের নীতির কঠোর সমালোচক। ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত রাশিদা ফিলিস্তিনপন্থী বিডিএস আন্দোলনেরও সমর্থক। বিশেষ করে পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরাইলের নীতির কারণে তিনি বিডিএস আন্দোলনকে সমর্থন দিচ্ছেন। ইসরাইলি আইন অনুসারে, বিডিএস সমর্থকদের ইসরাইলে প্রবেশের ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে দেশটি। 'ভয়েস অব আমেরিকা'র এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার ইসরাইলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরিয়েহ দেরিকে লেখা এক চিঠিতে রাশিদা তালিব দাদিকে দেখতে যাওয়ার জন্য তাকে অনুমতি দেয়ার অনুরোধ করেছিলেন। বলেছিলেন, এটি হতে পারে তার দাদিকে শেষবার দেখার সুযোগ। তিনি আরও লিখেছিলেন, তার যাওয়ার বিষয়ে যে কোনো নিয়ম বা সীমাবদ্ধতা ঠিক করে দেয়া হলে তা তিনি পালন করবেন, তার প্রতি সম্মান দেখাবেন। ইসরাইল তখন বলেছিল, ইসরাইলকে বয়কট করতে পারে, এমন কোনো কাজকে উৎসাহিত করতে পারবেন না রাশিদা; এই শর্তে তার পারিবারিক সফরের অনুরোধকে 'মানবিক আবেদন' হিসেবে বিবেচনা করবে দেশটি। পরে শুক্রবার তার এ সফরের আবেদনে অনুমোদন দেয় ইসরাইলের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু শুক্রবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরাইলের শর্তসাপেক্ষ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে 'অহঙ্কার' করার জন্য রাশিদার সমালোচনা করেছেন। মার্কিন আইনপ্রণেতা রাশিদা এই চিঠি প্রকাশ্যে উলেস্নখ করেননি এবং তিনি কেন নিজের মত পরিবর্তন করেছেন, তাও পরিষ্কার নয়। তবে ফিলিস্তিন সমর্থক একাধিক শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব বলেছেন, বাকস্বাধীনতা ছাড়া সফর করার মানেই হলো ইসরাইলের কাছে আত্মসমর্পণ করা। এর আগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক পার্টির দুই নারী কংগ্রেস সদস্য ইলহান ওমর ও রাশিদা তালিবকে দেশটিতে সফরের অনুমতি বাতিল করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই দুই নারী কংগ্রেস সদস্যকে ইসরাইলে প্রবেশ করতে না দেয়ার আহ্বান জানানোর পর গত বৃহস্পতিবার এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। বৃহস্পতিবারের সিদ্ধান্তকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি অবজ্ঞা বলে উলেস্নখ করেছেন ইলহান ওমর। ইসরাইল শুরুতে এই দুই মার্কিন কংগ্রেস সদস্যকে ভিসা দিয়েছিল। কিন্তু পরে ট্রাম্পের চাপের মুখে নেতানিয়াহু তা বাতিল করেন। শনিবার এই বিষয়ে ইসরাইলকে চাপ দেয়ার খবর প্রকাশিত হলেও হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়।