অভিযোগ পাকিস্তানের

পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ভারত

প্রকাশ | ২১ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়াই উজানের একটি বাঁধ খুলে দেয়ায় পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ভারতের বিরুদ্ধে বাঁধ খুলে দেয়ার অভিযোগ এনেছে পাকিস্তানের পানি ও বিদু্যৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এভাবে দেশটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সর্বমুখী যুদ্ধ শুরু করেছে বলে অভিযোগ করছে ইসলামাবাদ। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, পার্স টুডে পাকিস্তান অভিযোগ করেছে, ভারত আগে থেকে না জানিয়ে যৌথ নদী সুতলেজের একটি বাঁধের অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দিয়েছে। বাঁধের পানিতে সীমান্ত অঞ্চলের আরও অনেক এলাকা বন্যা কবলিত হতে পারে, এমন আশঙ্কায় শঙ্কিত পাকিস্তান। এর মাধ্যমে দিলিস্ন তাদের ওপর 'পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধ' চাপিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। ইসলামাবাদ সোমবার জানায়, দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের মধ্যে যেসব চুক্তি বহাল রয়েছে, সেগুলোকে অবজ্ঞা করার চেষ্টার অংশ হিসেবেই দিলিস্ন হঠাৎ করে সুতলেজ নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণ ছেড়ে দিয়েছে। পাকিস্তানের পানি ও বিদু্যৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (ওয়াপদা) চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মুজাম্মিল হুসেইন বলেন, 'তারা আমাদের কূটনীতিকভাবে একঘরে করতে চেষ্টা করছে, অর্থনীতির প্রবাহ রোধ করার চেষ্টা করছে, এমনকি পানি সম্পদের ওপরও চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। অর্থনীতি, কৃষি ও সেচের ক্ষেত্রে পানির সরাসরি প্রভাব আছে।' উজানে থাকার সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে ভারত পাকিস্তানের ওপর 'পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধ' চাপিয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ তার। তবে সোমবার ভারত পাকিস্তানের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দিলিস্ন বলছে, দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী পানি নির্ধারিত মাত্রা অতিক্রম করার পরই সোমবার অতিরিক্ত পানি ছাড়ার বিষয়টি ইসলামাবাদকে জানানো হয়েছে। ভারতের স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সুতলেজ নদীর পানি নির্ধারিত মাত্রার ওপরে উঠে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গেই তা পাকিস্তানকে জানানো হয় বলে বিবৃতিতে দাবি করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এরপর একইদিন ভারতের কেন্দ্রীয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় জানায়, দুই দেশের মধ্যে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, জলাধারগুলো থেকে অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেয়া ও বন্যার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেই কেবল আগেভাগে এ বিষয়ক তথ্য বিনিময়ের কথা বলা হয়েছে। চলতি বন্যা মৌসুমে এ পর্যন্ত ভারতের দিক থেকে অতিরিক্ত পানি ছাড়ের বিষয়টি দেখা যায়নি বলে দাবি করেছে তারা। পাকিস্তানের সঙ্গে হওয়া এ বিষয়ক চুক্তির প্রতি তারা প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ বলেও মন্ত্রণালয়টি দাবি করেছে। প্রতিবেশী এই দুই দেশের বিবাদ নতুন নয়। চলতি মাসে ভারত তাদের নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর অংশের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিলের পর দেশ দুটির সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে। উভয় দেশই দীর্ঘদিন ধরে কাশ্মীরের মালিকানা দাবি করে আসছে। কাশ্মীরের পাশাপাশি পানি ব্যবস্থাপনা নিয়েও ভারত-পাকিস্তানের বিরোধ পুরনো। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় দেশ দুটির মধ্যে সিন্ধু নদ ও এর শাখা-প্রশাখার পানির প্রবাহ নিয়ে একটি চুক্তি হয়েছিল। চলতি বছরের ফেব্রম্নয়ারিতে পাকিস্তানভিত্তিক একটি জঙ্গি সংগঠন কাশ্মীরে বোমা হামলা চালিয়ে ভারতীয় আধাসামরিক পুলিশের ৪০ জনের বেশি সদস্যকে হত্যার পর পাকিস্তানের সঙ্গে ভারত নদীর অতিরিক্ত পানি ভাগাভাগি বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছিল। ২০১৬ সালে সিন্ধু চুক্তি সংক্রান্ত একটি বৈঠক স্থগিত করার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে 'পানি ও রক্ত একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না' বলে মন্তব্য করেছিলেন।