পাঁচ দিনের রিমান্ডে চিদাম্বরম প্রতিবাদে সরব বিরোধীরা

গণতন্ত্র কাঁদছে : প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা

প্রকাশ | ২৩ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
গ্রেপ্তারের পর পি চিদাম্বরম
ভারতের সাবেক কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ও প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরমকে 'আইএনএক্স মিডিয়া' দুর্নীতি মামলায় তার বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করার একদিন পর বৃহস্পতিবার পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই। এদিকে, বরেণ্য এই রাজনীতিকের গ্রেপ্তারে ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে দেশটির বিরোধীরা। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ আইএনএক্স মিডিয়া প্রতারণা মামলায় চিদাম্বরমকে 'হন্যে হয়ে খুঁজছিল' ভারতের সেন্ট্রাল বু্যরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। চিদাম্বরমের দেশ ছাড়ার ওপরও জারি হয় নিষেধাজ্ঞা। জারি করা হয়েছিল 'লুক আউট' নোটিস। তার মধ্যেই মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে 'লাপাত্তা' ছিলেন চিদাম্বরম। দিলিস্নতে চিদাম্বরম তার গাড়ির চালককে গাড়ি থেকে নামিয়ে ফোন বন্ধ করে নিজেই গাড়ি চালিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন সিবিএ কর্মকর্তারা। এরপরই বুধবার প্রকাশ্যে আসার পর তিনি গ্রেপ্তার হন। ২০১০ সালে ভারতে ইউপিএ সরকারের আমলে প্রথম আইএনএক্স দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আসে। পরে তা ধামাচাপা পড়ে গেলেও ২০১৪ সালে সরকার বদলের পর নতুন করে গতি পায় তদন্ত। চিদাম্বরমকে গ্রেপ্তারের পর কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা এক বিবৃতিতে বলেন, 'অর্থনীতি নিয়ে মুখ খোলার ফলেই বিজেপি সরকারের রোষের মুখে পড়তে হয়েছে চিদম্বরমকে। রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই সাবেক অর্থমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করিয়েছে মোদি সরকার।' এর আগে স্থানীয় সময় বুধবার রাত ৮টা নাগাদ সংবাদ সম্মেলন করে চিদাম্বরম নিজেই দাবি করছিলেন, তিনি প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো প্রমাণ সিবিআইয়ের কাছে নেই। এমনকি, তার বিরুদ্ধে চার্জশিটও পেশ করা হয়নি। তারপরই মসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় প্রচার। অনেকে বলতে শুরু করেন, অমিত শাহকে ২০১০ সালে গ্রেপ্তার করিয়েছিলেন, তার বদলা নিতেই চিদাম্বরমকে গ্রেপ্তার করালেন শাহ। বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের বৈঠকেও এই সুরই প্রতিধ্বনিত হয়। রণদীপ বলেন, ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই চিদাম্বরমকে জেলে পাঠিয়েছে সরকার। অমিত শাহর নাম না করলেও কংগ্রেস যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেই তোপ দাগল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। গণতন্ত্র আজ কাঁদছে, কড়া প্রতিক্রিয়া মমতার এদিকে, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদাম্বরমের গ্রেপ্তার নিয়ে মুখ খুলেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, 'অনেক সময় অনেক পদক্ষেপে পদ্ধতিগত ত্রম্নটি থেকে যাচ্ছে। আমি আইন নিয়ে কিছু বলতে পারি না। কিন্তু চিদাম্বরমের মতো একজন প্রবীণ, দক্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, একজন সাবেক মন্ত্রীকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হলো, তা খুবই নিন্দনীয় এবং দুঃখজনক। সত্যি আজ গণতন্ত্র কাঁদছে।' মমতা বলেন, 'চিদাম্বরমের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা মেনে নেয়া যায় না। সফল গণতন্ত্রের যে চারটি স্তম্ভ, তার সবকটিই ভেঙে দেয়ার চেষ্টা চলছে। সংবাদমাধ্যমেরও মুখ বন্ধ করে নিজেদের পক্ষে কথা বলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।'