মার্কিন সেনা হত্যার জের

তালেবানের সঙ্গে আলোচনা বাতিল

ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়নি তালেবান, তবে তারা 'বিস্মিত' বলে ধারণা

প্রকাশ | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
বছরখানেক ধরে চলা কূটনীতিতে হঠাৎ ছেদ টেনে তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা বাতিল করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার টুইটারে দেয়া এক বার্তায় এ কথা ঘোষণা করেন তিনি। কাবুলে আত্মঘাতী বোমা হামলায় মার্কিন সেনাসহ ১২ জনকে হত্যার দায় স্বীকার করার পর তালেবান নেতাদের সঙ্গে আলোচনা বাতিল করেন তিনি। এর ফলে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সরানোর ক্ষেত্রে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিল। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, সানডে টাইমস মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি রোববার মেরিল্যান্ডের ক্যাম্প ডেভিডের প্রেসিডেন্ট কম্পাউন্ডে তালেবানের 'মুখ্য নেতাদের' সঙ্গে গোপন বৈঠক করার পরিকল্পনা করেছিলেন এবং আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সঙ্গেও বৈঠকের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু তালেবান কাবুলে বৃহস্পতিবার চালানো আত্মঘাতী বোমা হামলার দায় স্বীকার করার পর তাৎক্ষণিকভাবে ওই বৈঠক বাতিল করেছেন। ট্রাম্প আরও বলেন, 'অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই শান্তি বৈঠক চলাকালে তারা যদি একটি অস্ত্রবিরতিতে রাজি না হয়, আর ১২ জন নিরপরাধ লোককে হত্যা করে, তাহলে তারা সম্ভবত একটি তাৎপর্যপূর্ণ চুক্তির আলোচনা করার ক্ষমতা রাখে না। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে ফাঁপা উদ্দেশ্য সাধনের জন্য তারা কাবুলে হামলা চালিয়েছে।' অপর একটি বার্তায় ওই হামলার নিন্দা করে ট্রাম্প বলেন, 'এরা কেমন লোক, যারা নিজেদের দর বাড়ানোর জন্য এত জনকে খুন করতে পারে?' তার মতে, ওই হামলার পর পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করে তুলেছে তালেবান। তালেবানের সঙ্গে আপস আলোচনায় মার্কিন পক্ষের প্রধান আলোচনাকারী জালমে খলিলজাদ 'নীতিগতভাবে' তালেবানের সঙ্গে একটি শান্তিচুক্তি হচ্ছে বলে সোমবার ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু ট্রাম্পের এই ঘোষণা প্রস্তাবিত ওই শান্তিচুক্তির ভবিষ্যৎকে সন্দেহের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তালেবান তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে তারা বিস্মিত হয়ে গেছে, এমনটি মনে হচ্ছে বলে মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে। কাতারের রাজধানী দোহায় খলিলজাদসহ মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তালেবান পক্ষের আলোচক মোলস্না আবদুল গনি বারাদারের আলোচনার বিষয়ে জ্ঞাত এক জ্যেষ্ঠ তালেবান নেতা ট্রাম্পের টুইটের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে জানিয়েছিলেন, চুক্তিটি স্বাক্ষরের বিষয়ে সমঝোতা প্রায় হয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে। কাতারের রাজধানী দোহায় মার্কিন ও তালেবান প্রতিনিধিদের মধ্যে ৯ দফা আলোচনার পর সমঝোতার এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। প্রস্তাবিত ওই চুক্তি অনুযায়ী, ২০ সপ্তাহের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ হাজার ৪০০ সেনা প্রত্যাহারের কথা ছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনুমোদন দিলেই চুক্তিটি চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছিলেন খলিলজাদ। তালেবান যোদ্ধারা ২০০১ সালের পর থেকে যেকোনো সময়ের চেয়ে এখনই আফগানিস্তানের সবচেয়ে বেশি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। গত সপ্তাহে তারা দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহর কুন্দুজ ও পুল-ই-খুমরিতে হামলা চালানোর পাশাপাশি রাজধানী কাবুলে বড় ধরনের দুটি আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায়। এগুলোর মধ্যে বৃহস্পতিবার কাবুলের আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহতদের মধ্যে মার্কিন সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট ফার্স্ট ক্লাস অ্যালেস এ. ব্যারেটো ওটিজও আছেন। তাকে নিয়ে চলতি বছর আফগানিস্তানে নিহত মার্কিন সেনার সংখ্যা ১৬ জনে দাঁড়িয়েছে।