হংকং সংকট

এবার লন্ঠন জ্বালিয়ে পাহাড়ে ব্যতিক্রমী মানববন্ধন

ব্রিটিশ কনসু্যলেটের বাইরে অবস্থান নেয়ার কথা ভাবছে বিক্ষোভকারীরা

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক টানা কয়েক মাসের বিক্ষোভের পর হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীরা চীন নিয়ন্ত্রিত শহরটিতে আরও গণতন্ত্র চেয়ে এবার লন্ঠন ও মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় ব্যতিক্রমী মানববন্ধন করেছে। শুক্রবার রাতের এ মানববন্ধনের পর তারা এখন হংকংয়ের বিভিন্ন বিপণিবিতানে অবস্থান ধর্মঘটেরও পরিকল্পনা করছে। সংবাদসূত্র : রয়টার্স বেইজিংকে ১৯৮৪ সালে স্বাক্ষরিত সিনো-ব্রিটিশ যৌথ ঘোষণার প্রতি সম্মান দেখানোর দাবি জানাতে রোববার ব্রিটিশ কনসু্যলেটের বাইরে অবস্থান নেয়ার কথাও ভাবছে তারা। সিনো-ব্রিটিশ ওই যৌথ ঘোষণা অনুযায়ীই ১৩ বছর পর ১৯৯৭ সালে হংকংকে চীনের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়। মধ্য-বসন্ত উৎসবে গান ও স্স্নোগানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থিদের এ মানববন্ধন ছিল আগের সহিংস কর্মসূচিগুলোর একেবারেই বিপরীত। তিন মাস ধরে চলা সেসব বিক্ষোভে পুলিশকে প্রায়ই কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও জলকামান ছুড়তে দেখা গিয়েছিল। বিক্ষোভকারীরা সে সময়ও বিভিন্ন বিপণিবিতানে জড়ো হতো; মাঝেমধ্যে তাদের সঙ্গে পতাকাবাহী চীনা সমর্থকদের হাতাহাতিও হয়েছে। বিচারের জন্য হংকংয়ের বাসিন্দাদের চীনের মূল ভূখন্ডে পাঠানোর সুযোগ রেখে আইন সংশোধনের একটি বিল নিয়ে জুনে বেইজিং-ঘনিষ্ঠ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সূচনা হয়। টানা আন্দোলনের মুখে প্রথমে বিতর্কিত ওই বিলটি 'স্থগিত' করে হংকং প্রশাসন। তাতেও কাজ না হলে পরে সেটি 'পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেয়ার' ঘোষণা দেন প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম। তবে এতে আশ্বস্ত হতে না পেরে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে সেখানকার নাগরিকরা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে হংকংয়ের স্বাধীনতা, বৃহত্তর গণতন্ত্র ও চীনের নিযুক্ত নির্বাহী প্রধানের পদত্যাগের দাবি। হংকংয়ের কারণেই চীনকে 'এক দেশ দুই ব্যবস্থার' নীতি চালিয়ে যেতে হচ্ছে। অঞ্চলটির নিজস্ব বিচার ও আইন ব্যবস্থা রয়েছে, যা মূল চীনের চেয়ে ভিন্ন। হস্তান্তরের সময় যুক্তরাজ্য বেইজিংয়ের কাছ থেকে শহরটির জন্য পৃথক বিচার ব্যবস্থাসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে স্বায়ত্তশাসনের প্রতিশ্রম্নতি আদায় করে নিয়েছিল। গণতন্ত্রপন্থিদের দাবি, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেইজিং হংকংয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ আরও সুদৃঢ় করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। চীন ১ অক্টোবর তাদের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের আগেই হংকয়ের বিক্ষোভকে শান্ত করতে উদ্‌গ্রীব। দেশটি হংকংয়ের অস্থিরতার জন্য পশ্চিমা শক্তি, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যকে দায় দিচ্ছে। এদিকে, যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, চীন যেন ১৯৮৪ সালের যৌথ ঘোষণা মেনে চলে, তা নিশ্চিতে লন্ডনেরও দায়দায়িত্ব আছে। জুনে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র বলেছিলেন, স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য সরকার এ অবস্থানে অটুট থাকবে। ওই যৌথ ঘোষণা যুক্তরাজ্য ও চীনের মধ্যে আইনি চুক্তি, ৩০ বছর আগে স্বাক্ষরিত ও কার্যকর হওয়ার সময়ও সেটি যেমন বৈধ ছিল, আজও তা বৈধ।