সৌদি তেলক্ষেত্রে হামলায় ইরানই দায়ী : অভিযোগ পম্পেওর

এটাকে দায়িত্বজ্ঞানহীন সরল বক্তব্য বললেন ডেমোক্রেট সিনেটর

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও
ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা সৌদি আরবের দুটি তেলক্ষেত্রে ড্রোন হামলার দায় স্বীকার করলেও যুক্তরাষ্ট্র তা মানতে নারাজ। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও টুইটে দাবি করেছেন, ইরানই এই হামলা চালিয়েছে। পাশাপাশি তেহরানের কূটনৈতিক 'ভানের' নিন্দাও করেছেন। কারণ হিসেবে পম্পেও বলেছেন, শনিবারের হামলাগুলো ইয়েমেন থেকে হয়েছে এর কোনো প্রমাণ নেই। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স পম্পেও বলেন, রুহানি আর জারিফ যখন কূটনীতিতে ব্যস্ত থাকার ভান করছেন, তখন তেহরান সৌদি আরবে প্রায় ১০০টি হামলা চালিয়েছে। উত্তেজনা নিরসনের এত আহ্বানের পরও ইরান বিশ্বের জ্বালানি সরবরাহে নজিরবিহীন আঘাত হেনেছে। আমরা বিশ্বের সব দেশকে প্রকাশ্যে ও দ্ব্যর্থহীনভাবে ইরানি হামলার নিন্দা জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি।' মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন ইরানকে তার 'আগ্রাসী ভূমিকার জন্য জবাবদিহি' করতে কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পম্পেও এসব দাবি করলেও তার দাবির পক্ষে প্রমাণ দিতে রাজি হয়নি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বছরখানেকের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির পর সম্প্রতি কূটনৈতিক যোগাযোগের পথ উন্মোচিত হওয়ার যে সামান্য আভাস দেখা গিয়েছিল, পম্পেওর টুইটে তার উল্টো সুর দেখা যাচ্ছে বলে ভাষ্য পর্যবেক্ষকদের। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর টুইট তেহরানের প্রতি ওয়াশিংটনের কট্টর অবস্থানেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। সম্প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের 'সাইডলাইনে' (পার্শ্ব বৈঠক) ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে বৈঠকে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এ ধরনের বৈঠক কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই হতে হবে বলে শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও। অন্যদিকে, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো ধরনের বৈঠকে বসবে না বলে জানিয়েছেন রুহানি। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত, মার্কিন সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য লিন্ডসে গ্রাহাম বলেন, ইরান যে শান্তিতে নয়, উল্টো পারমাণবিক অস্ত্র এবং মধ্যপ্রাচ্যের কর্তৃত্ব নিতে বেশি আগ্রহী শনিবারের হামলাই তার নজির। তিনি বলেন, ইরান যদি এ ধরনের উসকানি কিংবা তাদের পারমাণবিক সমৃদ্ধি অব্যাহত রাখে, তাহলে তাদের তেল শোধনাগারে হামলার বিষয়টি ভাবার সময় হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।' মার্কিন কংগ্রেসের অনেক সদস্য অবশ্য পম্পেওর অভিযোগ নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির ডেমোক্রেট সদস্য ক্রিস মারফি বলেন, 'এটা এক ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন সরল বক্তব্য, আর এভাবেই আমরা অহেতুক যুদ্ধে জড়িয়ে যাই। ইরান হুতিদের সমর্থন দিচ্ছে এবং তারা খারাপ পক্ষ; কিন্তু এর মানে এত সরল নয় যে, হুতি আর ইরানকে এক করে দেখতে হবে।' গতবছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে ওয়াশিংটনকে বের করে আনলে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান উত্তেজনার পারদ ফের চড়তে শুরু করে। এরপর পুরনো সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করার পাশাপাশি ইরানের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করে ট্রাম্প প্রশাসন, যা ইরানের অর্থনীতিকে অনেকখানিই পঙ্গু করে দিয়েছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।