আল-জাজিরাকে ইমরান খান

পাক-ভারত যুদ্ধের পরিণাম হবে ভয়াবহ

ম কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ পাক প্রধানমন্ত্রীর ম গভীর উদ্বেগ মালালার, পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর পাক-ভারত সীমান্তে ফের উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রতিদিনই চিরবৈরী এই দুই প্রতিবেশী দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষের মতো ঘটনা ঘটছে। এমন সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আবারও বলেছেন, 'কাশ্মীর ইসু্য নিয়ে ভারতের সঙ্গে তার দেশের পরমাণু যুদ্ধ বেধে যেতে পারে। যার পরিণাম হবে ভয়াবহ।' 'আল-জাজিরা'কে দেয়া সাক্ষাৎকারে শনিবার তিনি এ কথা বলেন। সংবাদসূত্র : আল-জাজিরা, ইনডিয়া টুডে, এনডিটিভি কাশ্মীর ইসু্যতে জাতিসংঘের কাছ থেকে তেমন কোনো ভূমিকা প্রত্যাশা করেন না উলেস্নখ করে ইমরান বলেন, 'প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর গঠিত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো; বিশেষ করে জাতিসংঘের কাছ থেকে আমরা বেশি কিছু আশা করি না। কাশ্মীর ইসু্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে পাকিস্তান কথা বলেছে।' কাশ্মীরের বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা ভারত সরকার বাতিল করার পর বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'দুর্ভাগ্যবশত, পুরো বিষয়টির পেছনে রয়েছে বড় বাজার। কিছু দেশ বড় বাজারের দিকে নজর রাখে। তারা ভারতকে ১০০ কোটি মানুষের বাজার হিসেবে দেখে। ওরা বুঝতে পারে না যে, যদি এই মুহূর্তে তারা হস্তক্ষেপ না করে, তাহলে এর পরিণতি কেবল উপমহাদেশ নয়, পুরো বিশ্ব বাণিজ্যকেই বহন করতে হবে- প্রত্যেকে এর মাধ্যমে প্রভাবিত হবে।' পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সঙ্গে পরমাণু যুদ্ধের যে সম্ভাবনার কথা বলেছেন, তাতেও সমর্থন জানান ইমরান। তিনি বলেন, 'যা ঘটছে তা হচ্ছে ভারত সরকার কম-বেশি গণহত্যা চালাচ্ছে। এটা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো বর্ণবাদী হামলা। আমি মনে করি না, জার্মানির নাৎসিদের পর এ রকম আর দেখা গেছে। ৮০ লাখ মুসলমান প্রায় ছয় সপ্তাহ ধরে অবরুদ্ধ। এটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে জ্বলন্ত বিন্দু হয়ে দাঁড়ানোর কারণে হচ্ছে, ভারত কাশ্মীরে তাদের অবৈধ দখল ও গণহত্যা থেকে বিশ্বের নজর অন্যদিকে সরাতে চাইছে।' পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার প্রসঙ্গে ইমরান বলেন, 'আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ যখন যুদ্ধ করে, তারা যদি প্রচলিত যুদ্ধ করে- তাহলে তা পরমাণু যুদ্ধ দিয়ে শেষ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।' কাশ্মীর নিয়ে গভীর উদ্বেগ মালালার এদিকে, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী পাকিস্তানের নারী অধিকারকর্মী মালালা ইউসুফজাই। অবরুদ্ধ ওই উপত্যকার শিশুদের সহায়তায় পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আসন্ন সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে বিশ্বনেতাদের দৃষ্টিও আকর্ষণ করেন মালালা। গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়। ৩৭০ ধারা বাতিলের আগ মুহূর্তে জম্মু-কাশ্মীরে আধাসামরিক বাহিনীর ৩৫ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়। পরে নতুন করে সেখানে নিয়োজিত হয় আধা-সামরিক বাহিনীর আরও বিপুল পরিমাণ সদস্য। দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার পর সেগুলো খুলে দেয়া হলেও ভয়ের কারণে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাচ্ছে না। এসব শিশুদের নিরাপদে তাদের স্কুলে ফিরে যেতে সহায়তা করতে এক টুইট বার্তায় মালালা জাতিসংঘ ও বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। চলতি মাসের শেষের দিকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে নিউইয়র্কে। তাতে ভারত-পাকিস্তান ছাড়াও বিশ্বনেতারা উপস্থিত থাকবেন। মালালা বলেন, 'শিশুসহ প্রায় চার হাজার মানুষকে জোরপূর্বক আটক ও দন্ড দেয়া হয়েছে, শিক্ষার্থীরা গত ৪০ দিন ধরে স্কুলে যেতে পারছে না। এমন খবর শুনে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।' বিশ্বনেতাদের উদ্দেশ্য করে মালালা বলেন, 'আমি উদাত্ম আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা কাশ্মীরিদের দাবি শুনুন, সেখানে শান্তি ফিরিয়ে আনতে কাজ করুন।