আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস

ভারতে এখন 'সুপার ইমার্জেন্সি' চলছে : মমতার তোপ

ম মানুষের সাংবিধানিক অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার প্রতি তাগিদ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ভারতের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে আবারও তোপ দাগালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রোববার আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে এক বার্তায় মমতা বলেন, 'ভারতে এখন সুপার ইমার্জেন্সি চলছে। আসুন আমরা সকলে আমাদের দেশের সাংবিধানিক পরিকাঠামোকে অক্ষুণ্ন রাখার অঙ্গীকার করি। এই সুপার ইমার্জেন্সির জমানায় মানুষের সাংবিধানিক অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য যা যা করতে হবে আমরা তা অবশ্যই করব।' সংবাদসূত্র : টাইমস অব ইনডিয়া, ওয়ান ইনডিয়া এর আগে শনিবার জাতীয় 'হিন্দি দিবস' উপলক্ষে হিন্দিকে জাতীয় ভাষা করার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্যের জবাবে মমতা বলেছিলেন, 'আঞ্চলিক ভাষাকে সম্মান দেয়া উচিত। মাতৃভাষাকে কখনই ভোলা উচিত নয়।' হিন্দি দিবস উপলক্ষে অমিত শাহ বলেছিলেন, কোনো ভাষা যদি দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারে, তবে তা হলো হিন্দি। কারণ, ওই ভাষাতেই দেশের বহু মানুষ কথা বলেন। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিরোধী রাজনীতিকরা। বিরোধীদের মতে, জনগণের জরিপ থেকে দেখা গেছে, ভারতের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ছয় জনেরই মাতৃভাষা হিন্দি নয়। দেশের মাত্র ৪৩.৬৩ শতাংশ মানুষ হিন্দিতে কথা বলে। এরপরই রয়েছে বাংলা। মোট ৮.০৩ শতাংশ মানুষ বাংলায় কথা বলেন। তারপর রয়েছে অন্যান্য ভাষা। এদিকে, ভারতের নাগরিক তালিকা ইসু্যতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কঠোর সমালোচনা করেছেন বিজেপি বিধায়ক সুরেন্দ্র সিং। রোববার উগ্র হিন্দুত্ববাদী এ বিজেপি নেতা হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, 'মমতার বিরোধিতা সত্ত্বেও আসামের মতো পশ্চিমবঙ্গেও নাগরিক তালিকা করা হবে। তালিকায় যারা অবৈধ চিহ্নিত হবে, তাদেরকে ভারতের মাটি থেকে বিতাড়ন করা হবে।' গত ৩১ আগস্ট প্রকাশিত হয় আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি)। এ থেকে বাদ পড়ে রাজ্যটির প্রায় ১৯ লাখ ছয় হাজার ৬৫৭ জন। বাদ পড়া ব্যক্তিদের ভারতের পক্ষ থেকে 'অবৈধ' বলে দাবি করা হচ্ছে। আসামের মতো পশ্চিমবঙ্গেও এনআরসি করার হুমকি দেয়া হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে। হুমকির প্রতিবাদে শনিবার রাজপথে নামেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনআরসি ইসু্যতে মমতার পদক্ষেপের সমালোচনা করতে গিয়ে বিজেপি বিধায়ক অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গে অবৈধদের স্থান করে দিতে মমতা এনআরসির বিরোধিতা করছেন। তিনি হুশিয়ার করে বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে যে এনআরসি প্রয়োগ করা হবে, তা নিশ্চিত। চূড়ান্ত তালিকার পর পশ্চিমবঙ্গে যারা ভারতের নাগরিক হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করবে না, তাদের ভারত ছাড়তে হবে।' উলেস্নখ্য, তৃণমূল নেত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বড় সমালোচক। একাধিকবার তিনি অভিযোগ করেছেন, মোদির সরকার সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী মোদিকে গণতন্ত্রের থাপ্পড় দেয়ার কথা বলেছিলেন। এ নিয়ে যথেষ্ট বিতর্কও হয়েছিল। পরে তৃণমূলের পক্ষ থেকে সাফাই দিয়ে বলা হয়েছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে যা বলেছিলেন তা হলো, 'নরেন্দ্র মোদি যখন পশ্চিমবঙ্গে এসে তার দলকে চাঁদাবাজ বলেন, তখন ইচ্ছা করে একটা গণতন্ত্রের থাপ্পড় কষিয়ে দিই।'