ট্রাম্পকে পিয়ংইয়ং সফরের আমন্ত্রণ কিমের

আলোচনার জন্য নিরাপত্তা চায় উত্তর কোরিয়া

প্রকাশ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
দুই কোরীয় সীমান্তে ট্রাম্প ও কিম
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পিয়ংইয়ং সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন। গত আগস্টে লেখা এক চিঠিতে এ আমন্ত্রণ জানান তিনি। এটি এক মাসের মধ্যে ট্রাম্পকে পাঠানো কিমের দ্বিতীয় চিঠি। এদিকে, স্থবির হয়ে পড়া পরমাণু আলোচনা পুনরায় শুরুর পূর্বশর্ত হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দাবি করেছে উত্তর কোরিয়া। সংবাদসূত্র : সিএনএন, এএফপি অনলাইন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক স্বল্পমাত্রার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার আগেই চিঠিটি পাঠানো হয়েছিল। গত আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে এটি ট্রাম্পের হাতে পৌঁছায়। এতে কিম লিখেছেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে আরেকটি বৈঠকে মিলিত হতে আগ্রহী। তবে হোয়াইট হাউস, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিংবা জাতিসংঘে নিযুক্ত উত্তর কোরীয় মিশনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। চলতি মাসের গোড়ার দিকে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন উত্তর কোরিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী চোই সোন হুই। দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা 'কেসিএনএ'তে প্রকাশিত এক নিবন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পুনরায় আলোচনা শুরুর ব্যাপারে নিজ দেশের আগ্রহের কথা জানান তিনি। চোই সোন হুই বলেন, দুই পক্ষের সম্মতিতে সেপ্টেম্বরের শেষে যেকোনো সময়ে ও স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনায় বসতে আগ্রহী পিয়ংইয়ং। তবে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র পূর্ববর্তী মনোভাব না বদলালে চুক্তির সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাবে। গত ফেব্রম্নয়ারিতে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে ট্রাম্প-কিম বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়াকে সব ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগের কথা বললে পিয়ংইয়ং মার্কিন নেতৃত্বাধীন সব আন্তর্জাতিক অবরোধ তুলে নেয়ার দাবি করে। দুই পক্ষ পারস্পরিক সম্মতিতে পৌঁছতে ব্যর্থ হওয়ায় ভেস্তে যায় আলোচনা। হ্যানয়ের বৈঠক ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার পর গত ৩০ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক বৈঠকে 'ওয়ার্কিং লেভেলে' আলোচনা পুনরায় শুরুর বিষয়ে সম্মত হন উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উন। তবে এখনো সেই আলোচনা শুরু হয়নি। উত্তর কোরিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, ওয়াশিংটনের নতুন মনোভাব প্রয়োজন। নইলে আলোচনা ভেস্তে যাবে। তার ভাষায়, 'আমি বিশ্বাস করতে চাই, দুই পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করবে এবং আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এমন গাণিতিক পদ্ধতির ভিত্তিতে বিকল্প কিছু নিয়ে অগ্রসর হবে যুক্তরাষ্ট্র। আলোচনার জন্য নিরাপত্তা চায় উত্তর কোরিয়া এদিকে, উত্তর কোরিয়া পরমাণু আলোচনা পুনরায় শুরুর পূর্বশর্ত হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দাবি করায় আগামী কয়েক সপ্তাহে দুই দেশের ওয়ার্কিং লেভেলে বৈঠকের যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল, এ দাবির কারণে তা হোঁচট খেল মনে করছেন বিশ্লেষকরা। উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সোমবার বলেন, 'সব ধরনের সংশয়ের ঊর্ধ্বে গিয়ে আমাদের নিরাপত্তা পদ্ধতি বিপন্নকারী হুমকি ও প্রতিবন্ধকতা সম্পূর্ণভাবে দূর করলেই কেবল আলোচনা ও পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করা সম্ভব।' উত্তর কোরিয়া সবসময়ই জোর দিয়ে বলে আসছে, যেকোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে হলে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা খুবই জরুরি। গত ফেব্রম্নয়ারিতে উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে কোনো চুক্তি ছাড়াই বৈঠকের পর থেকে কার্যত পরমাণু আলোচনা থমকে আছে। কিন্তু জুন মাসে দুই কোরিয়াকে বিভক্তকারী অসামরিকীকরণ এলাকায় এ দুই নেতা আলোচনা পুনরায় শুরুর বিষয়ে একমত হয়েছিলেন। এমনকি গত সপ্তাহে পিয়ংইয়ং সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দিয়েছিল। একে উৎসাহব্যঞ্জক বলে বর্ণনা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।