এক দেশ এক দল নীতিতে হাঁটছে বিজেপি!

প্রতিবাদ কংগ্রেসের

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ
যাযাদি ডেস্ক 'এক দেশ, এক ভাষা' তত্ত্ব নিয়ে বিতর্কের রেষ কাটতে না কাটতেই ফের নতুন বিতর্কে জড়ালেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দেশটির রাজনৈতিক মহলে একটাই প্রশ্ন, এবার কি তবে এক দেশ, এক দল নীতিতে হাঁটছে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার! ভারতীয় গণতন্ত্রের বহুদলীয় সংসদীয় কাঠামো নিয়ে বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রশ্ন তোলার পর জনমানসে এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি সম্প্রতি দেশের অভিন্ন ভাষা হিসেবে 'হিন্দির' পক্ষে সাফাই গাইছিলেন অমিত। দিলিস্নর 'অল ইন্ডিয়া ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন'-এর একটি অনুষ্ঠানের মঞ্চে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার বলেন, 'স্বাধীনতার ৭০ বছর পরে মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে, বহুদলীয় সংসদীয় ব্যবস্থা আসলে ব্যর্থ কিনা? ওই ব্যবস্থা কি দেশবাসীর লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছে?' তারপর নিজেই জবাব দিয়েছেন, 'মানুষ আশাহত।' তার দাবি, আঞ্চলিক দলগুলো আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারেনি। মূলত দ্বিতীয় ইউপিএ আমলের দুর্নীতির অভিযোগ এনে অমিত ওই মন্তব্য করলেও বিরোধীদের অনেকের মত, এই বক্তব্যে যেমন বিজেপির 'স্বৈরতান্ত্রিক' মনোভাব স্পষ্ট, তেমনই ভাষার পর বহুদলীয় ব্যবস্থা নিয়ে বিতর্ক তৈরি করে বেহাল অর্থনীতি থেকে নজর ঘোরানোর কৌশলও রয়েছে। অনুষ্ঠানে 'টার্গেট' ছোঁয়ার কৌশল ব্যাখ্যা করে অমিত বলেন, 'অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি, দৃঢ় নেতৃত্ব, দক্ষ পরিকল্পনার সঙ্গে ১৩০ কোটি মানুষকে একাত্ম করলে তবেই প্রধানমন্ত্রীর নতুন ভারতের লক্ষ্য পূরণ সম্ভব। নীতির ভিন্নতায় যে লক্ষ্য পূরণ অসম্ভব।' এদিকে, অমিতের এমন মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে কংগ্রেস। দলটির মতে, এমন ভাবনা ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপরে সরাসরি আক্রমণ। কংগ্রেসের মুখপাত্র আনন্দ শর্মা বলেন, 'বহুদলীয় গণতন্ত্রকে গুরুত্বহীন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্য ভয়াবহ এবং সেটা যে ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে, তা গৃহীত হলে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে সরাসরি আঘাত করবে।' তিনি আরও বলেন, 'এমন বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। এনডিএ নিজেই তো একাধিক দলকে নিয়ে তৈরি এবং সেইসব দল বিভিন্ন রাজ্যে সরকারও গড়েছে।' বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে তাদের শরিক দলের নেতাদের নাম করে এই কংগ্রেস নেতা বলেন, 'নীতিশ কুমার, প্রকাশ সিংহ বাদল, উদ্ধব ঠাকুরেরা নিশ্চয়ই শুনছেন। তারা উত্তর দিন।' প্রশ্ন ওঠছে, অমিতের ধারাবাহিক মন্তব্য কি বৃহত্তর চিত্রনাট্যের অংশ? বিজেপি নেতৃত্ব প্রকাশ্যে নীরব থাকলেও ঘটনা হলো, চলতি মাসের শুরুতে রাজস্থানের পুষ্করে বৈঠকে বসেছিলেন শরিক দল এনডিএ ও বিজেপির শীর্ষ নেতারা। নীতিগতভাবে 'এক দেশ, এক ভাষা, এক ঝান্ডা এবং এক হিন্দু রাষ্ট্র' গড়ার পক্ষে তারা। তাদের দাবি, আঞ্চলিক দলগুলোর কারণেই 'বিভেদের রাজনীতি' তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রে একটি মাত্র দল থাকলে বিভেদ দূর করা সম্ভব। রাজধানীতে জল্পনা, সঙ্ঘের সেই ইচ্ছাই কি ফুটে উঠল অমিতের মন্তব্যে? আঞ্চলিক দলগুলো এমনিতেই অস্বস্তিতে। লালুপ্রসাদ জেলে। অখিলেশ-মায়াবতী নীরব। তদন্তের ফেরে আটকা চন্দ্রবাবু নাইডু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়ার রাস্তায় নবীন পট্টনায়ক। নীতীশ জোটে থেকেও অস্বস্তিতে।