আবারও অগ্নিগর্ভ জম্মু-কাশ্মীর দফায় দফায় গোলাগুলি

নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ

প্রকাশ | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীর থেকে কারফিউ উঠে গেলে সেখানে রক্তবন্যা বয়ে যেতে পারে বলে শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বিশ্বনেতাদের সতর্ক করার পর শনিবার জম্মু-কাশ্মীর অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে। এদিন উপত্যকাটির বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয়দের দফায় দফায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সংবাদসূত্র : এবিপি নিউজ, হিন্দুস্থান টাইমস শনিবার সকালের দিকে জম্মু-কাশ্মীরের অন্তত দুই জায়গায় বন্দুকযুদ্ধ ও অপর এক স্থানে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত দুই-তিনজনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম। কাশ্মীরের শ্রীনগর মহাসড়কে একটি যাত্রীবাহী চলন্ত বাসকে থামানোর চেষ্টা করে ২-৩ জনের একটি দল। শ্রীনগর মহাসড়কের রামবান জেলার বাটোটের কাছে বাস থামানোর এই চেষ্টার পর সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাটোটের কাছে শ্রীনগর মহাসড়কে যাত্রীবাহী একটি বাসের চালক সন্ত্রাসীদের দেখার পর গতি বাড়িয়ে জঙ্গিদের ধাক্কা দিয়ে ঘটনাস্থল পেরিয়ে যান। সন্ত্রাসীরা ভারতীয় সামরিক বাহিনীর পোশাক পরিহিত ছিল বলে বাসের চালক জানিয়েছেন। পরে ওই ব্যক্তি কিছু দূর বাস চালিয়ে যাওয়ার পর পুলিশকে এ ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তলস্নাশি অভিযান শুরু করে। ওই এলাকায় সন্ত্রাসীরা একটি বাড়িতে ঢুকে একজন প্রবীণ ব্যক্তিকে জিম্মি করেছে বলে 'হিন্দুস্থান টাইমস'র এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, 'আমি অন্তত দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি।' ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল দেবেন্দর আনন্দ বলেন, 'বাটোটে সকাল থেকেই গোলাগুলি চলছিল। পরে সেখানে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীরা একটি বাড়িতে ঢুকে ওই পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে রেখেছিল। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ওই বাড়ি চারদিক থেকে ঘিরে রাখে।' এছাড়া নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে কাশ্মীরের গেন্ডারবলে গোলাগুলি হয়েছে। গেন্ডারবলে অনুপ্রবেশের চেষ্টা রুখতে গিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গুলি বিনিময় হয়েছে। তৃতীয় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে শ্রীনগরে। সেখানে সন্ত্রাসীরা একটি জনবহুল এলাকার আশপাশে গ্রেনেড ছোড়ে। তবে এতে কেউ হতাহত হননি। নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ এদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ভাষণের প্রভাবে বিক্ষোভ শুরু হতে পারে শঙ্কায় ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরজুড়ে লোকজনের চলাফেরায় বিধিনিষেধ আরোপ করেছে পুলিশ। শনিবার পুলিশের স্পিকার লাগানো ভ্যানগুলো শ্রীনগরের কয়েকটি এলাকায় ঘুরে ঘুরে লোকজনের চলাফেরার ওপর বিধিনিষেধ আরোপের কথা ঘোষণা করে। যেকোনো ধরনের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দমনে রাস্তায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়। সেনারা কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে শ্রীনগরের প্রধান ব্যবসায়িক কেন্দ্রে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, 'জাতিসংঘে ইমরান খানের ভাষণের পরই শ্রীনগর শহরজুড়ে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ায় এটি অপরিহার্য হয়ে উঠেছিল।'