অভিশংসন তদন্ত

ডেমোক্রেটদের ওপর চটেছেন ট্রাম্প

কড়া ভাষায় আক্রমণসহ অসৎ ও রাষ্ট্রদ্রোহী আখ্যা মার্কিন প্রেসিডেন্টের 'ট্রাম্পকে ইমপিচ করতে হবে দিতে হবে নির্জন কারাগারে'

প্রকাশ | ০৪ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
যাযাদি ডেস্ক অভিশংসন তদন্তে প্রয়োজনীয় নথি সরবরাহে হোয়াইট হাউসের ওপর আইনি সমন জারির ঘোষণায় ডেমোক্রেটদের ওপর বেজায় চটেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডেমোক্রেট নেতাদের কড়া ভাষায় আক্রমণের পাশাপাশি তাদের 'অসৎ' ও 'রাষ্ট্রদ্রোহী' বলেও অ্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, বিবিসি ডেমোক্রেটরা (কংগ্রেসনাল কমিটি) অভিশংসন তদন্তের পক্ষে অবস্থান নিয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে তা সম্পন্নের অঙ্গীকার করেছেন। কংগ্রেসনাল কমিটিগুলো হোয়াইট হাউসের কাছে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ইউক্রেনের যোগাযোগ ও সম্পর্ক সংক্রান্ত নথিপত্র চাইছে, যাকে কেন্দ্র করেই এখন অভিশংসন তদন্ত ঘুরপাক খাচ্ছে। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপ নিয়ে এক দহুইসেলবোয়ারের (তথ্য ফাঁসকারী) অভিযোগের সূত্রেই এ তদন্ত শুরু হয়। ওই ফোনালাপে ট্রাম্প আগামী বছরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট মনোনয়নপ্রত্যাশী জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টার বাইডেনের দুর্নীতি তদন্তে জেলেনস্কিকে চাপ দিয়েছিলেন বলে পরে মার্কিন প্রশাসনের প্রকাশিত নথিতে দেখা গেছে। যদিও বাইডেন ও ইউক্রেনের একটি গ্যাস কোম্পানির হয়ে কাজ করা হান্টার সংক্রান্ত কোনো অন্যায়ের তথ্য এখনো আলোর মুখ দেখেনি। গত ২৫ জুলাইয়ের ওই ফোনালাপের কয়েকদিন আগেই ট্রাম্প ইউক্রেনে ৪০ কোটি ডলারের মার্কিন সামরিক সহায়তা আটকে দিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সম্ভাব্য প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে ব্যক্তিগত লাভ নিশ্চিত করতেই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট এমনটা করেছিলেন বলে অভিযোগ সমালোচকদের। জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে বাইডেন ও তার ছেলের বিরুদ্ধে তদন্তের বিষয়টি তোলার কথা স্বীকার করলেও দরকষাকষির জন্য সামরিক সহায়তা আটকে দেয়ার কথা ট্রাম্প অস্বীকার করেছেন। জুলাইয়ে আটকে দিলেও মার্কিন প্রশাসন পরে ওই সহায়তার অর্থ ছাড় করে। বুধবার ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সউলি নিনিস্তোর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনেও বাইডেন ও তার ছেলেকে 'ভয়াবহ দুর্নীতিগ্রস্ত' বলে অভিহিত করেন ট্রাম্প। কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দা বিষয়ক কমিটির ডেমোক্রেট চেয়ারম্যান অ্যাডাম স্কিফকে 'চতুর' অ্যাখ্যা দিয়ে তার পদত্যাগ করা উচিত বলেও ট্রাম্প মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, 'সত্যিকার অর্থে, তাদের (কংগ্রেসনাল কমিটি) উচিত তার (স্কিফ) বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ খতিয়ে দেখা।' তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, কেবল 'আইনসম্মত' হুইসেলবোয়ারদেরই সুরক্ষা দেয়া উচিত। অভিশংসন তদন্তকে 'ধাপ্পাবাজি' ও 'মার্কিন জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়া জালিয়াতি' অ্যাখ্যা দিলেও কংগ্রেসকে 'সবসময়ই সহায়তা করারও' প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন তিনি। এর আগে টুইটারেও স্কিফ ও প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিকে একহাত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ডেমোক্রেটরা 'আবোলতাবোল' বিষয়ে নজর দিচ্ছে অভিযোগ করে পেলোসিকে তার নিজের শহর সান ফ্রান্সিসকোর দিকে বেশি মনোযোগ দিতেও পরামর্শ দিয়েছেন ট্রাম্প। শহরটিতে বাস্তুহারা মানুষের সংখ্যার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি সানফ্রান্সিসকো 'তাঁবুর শহর' বলেও অ্যাখ্যা দিয়েছেন। 'ট্রাম্পকে ইমপিচ করতে হবে দিতে হবে নির্জন কারাগারে' এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অবশ্যই 'ইমপিচ' করতে হবে এবং তাকে নির্জন কারাগারেও দিতে হবে। বুধবার এমন মন্তব্য করেছেন ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ম্যাক্সিন ওয়াটার্স। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে যেসব ডেমোক্রেট নেতা প্রথম থেকে 'ইমপিচ' করার দাবি জানিয়ে আসছেন ম্যাক্সিন ওয়াটার্স তাদের একজন। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ইমপিচমেন্টের তদন্ত শুরু করার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দেয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন। প্রতিনিধি পরিষদের এ সদস্য বলেন, 'আমি কংগ্রেস সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানাবো, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অশ্লীল কথা বলা থেকে আপনারা বিরত রাখুন এবং গোপন তথ্য ফাঁসকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে মাস্তানের মতো ভাষা ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখুন।' ম্যাক্সিন ওয়াটার্স আরও বলেন, 'ট্রাম্পের জন্য শুধু ইমপিচমেন্ট যথেষ্ট নয়, তাকে নির্জন কারাগারেও দিতে হবে; তবে এ মুহূূর্তে ইমপিচমেন্ট জরুরি।'