কানাডার সঙ্গে উত্তেজনা

এবার টরন্টোগামী বিমান চলাচল স্থগিত সৌদির

প্রকাশ | ০৮ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সৌদি আরবে আটক সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও নারী অধিকার কমীের্দর ছেড়ে দেয়ার দাবি জানানোয় এবার কানাডার টরন্টোতে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা স্থগিত করেছে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন্স। অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘হস্তক্ষেপের’ অভিযোগে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি এরই মধ্যে কানাডার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার ও তাদের সঙ্গে সব ধরনের নতুন বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। রিয়াদের এসব পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় কানাডা বলেছে, মানবাধিকারের পক্ষে তাদের সমথর্ন অব্যাহত থাকবে। সংবাদসূত্র : বিবিসি কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেছেন, রাষ্ট্রদূত বহিষ্কারের ঘটনায় তিনি ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’। তিনি জানান, বিশ্বজুড়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নারী অধিকারসহ মানবাধিকার সুরক্ষায় সব সময় অবস্থান নেবে কানাডা। এই মূল্যবোধকে উৎসাহিত করতে কখনোই ইতস্তত করব না আমরা, আন্তজাির্তক ক‚টনীতির ক্ষেত্রেও এই সংলাপকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বপূণর্ বলেই মনে করি।’ ফ্রিল্যান্ডের এই প্রতিক্রিয়ার আগেই টুইটারে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইর কানাডা ‘ভ্রান্ত তথ্যের’ ভিত্তিতে অবস্থান নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন। আটকদের মানবাধিকার রক্ষায় সৌদি আইন নিশ্চয়তা দেয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। অটোয়া ও রিয়াদের মধ্যে উত্তেজনার নজির দেখা গেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। সৌদি কতৃর্পক্ষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্টে টরন্টোর বিখ্যাত সিএন টাওয়ারের দিকে বিমান উড়ে যাওয়ার ছবিতে লেখা একটি বাক্য নিয়েও চলছে আলোচনা-সমালোচনা। ছবির ওপর লেখা ওই বাক্যে আরবি ভাষায় বলা হয়েছে, ‘যাতে তার উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই, এমন কিছু তাকে সন্তুষ্ট করছে না বলে দেখতে পায় কেউ কেউ।’ টুইটারের ওই ছবি ও লেখার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার ছবির সাদৃশ্য পাওয়ার পর তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় তুমুল বিতকর্। সৌদি কতৃর্পক্ষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওই ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট পরে ছবিটি সরিয়ে ফেললেও, এর ‘ক্যাশড ভাসর্ন’ এখনো অনলাইনে ঘুরছে। গত ৩১ জুলাই জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কাযার্লয় ১৫ মে থেকে সৌদি সরকারের সমালোচক হিসেবে পরিচিত অন্তত ১৫ জন নারী অধিকার ও মানবাধিকার কমীের্ক নিবির্চারে গ্রেপ্তার ও আটকের কথা জানানোর পর অটোয়া ও রিয়াদের মধ্যে ক‚টনৈতিক উত্তেজনার সূত্রপাত ঘটে। ‘প্রক্রিয়াগত পযাের্লাচনা’ মুলতবি রেখে এদের মধ্যে আটজনকে পরে ছেড়ে দেয়া হলেও বাকিদের মধ্যে অনেকের অবস্থান এখনো অজানা। যাদের গ্রেপ্তারের কারণে অটোয়া উদ্বেগ জানিয়েছে, তাদের মধ্যে কারাগারে থাকা বøগার রাইফ বাদাউয়ির বোন, সৌদি-মাকির্ন মানবাধিকার কমীর্ সমর বাদাউয়িও আছেন। আটক কয়েকজনের বিরুদ্ধে ‘বিদেশি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সন্দেহ করার মতো যোগাযোগসহ বেশকিছু গুরুতর অভিযোগও আনা হয়েছে। প্রমাণ হলে যার জন্য সবোর্চ্চ ২০ বছরের কারাদÐও মিলতে পারে তাদের। সহকমীর্ নাসিমা আল-সাদাহর সঙ্গে গত সপ্তাহে নারী অধিকার আন্দোলন কমীর্ সমর বাদাউয়িকেও আটক করার খবর দেয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো। সৌদি আরবের ‘পুরুষ অভিভাবক’ আইনের বিরুদ্ধে দীঘির্দন ধরে উচ্চকণ্ঠ বাদাউয়ি ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ পুরস্কারে ভ‚ষিত হয়েছিলেন। অনলাইনে ‘ইসলামকে অপমান’ করায় সামারের ভাই রাইফকে ২০১৪ সালে ১০ বছরের কারাদÐ ও এক হাজার বেত্রাঘাতের আদেশ দিয়েছিল সৌদি আদালত। রাইফের স্ত্রী এনসাফ হায়দার দীঘির্দন ধরেই কানাডায় বসবাস করছেন, সম্প্রতি তাকে কানাডার নাগরিকত্বও দেয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী টুইটারে বাদাউয়িকে আটকের খবরে উদ্বেগের কথা জানান। পরদিন কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে সৌদি আরবে আটক অধিকার কমীের্দর ‘দ্রæত মুক্তির’ আহŸান জানায়।