ট্রাম্পের হুশিয়ারি

হয় ইরান, নইলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পকর্

মাকির্ন আলোচনার প্রস্তাব মনস্তাত্তি¡ক যুদ্ধ : রুহানি জ্জ ট্রাম্পের আগ্রহকে তেহরানের গুরুত্ব দেয়া উচিত: বোল্টন

প্রকাশ | ০৮ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
হাসান রুহানি ডোনাল্ড ট্রাম্প
ইরানের সম্পকর্ রাখলে যুক্তরাষ্ট্রকে ভুলে যান বলে বাণিজ্যিক মিত্রদের কড়া হুশিয়ারি দিয়েছেন মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানের ওপর নতুন করে অবরোধ আরোপের পর মঙ্গলবার টুইটারে এই হুশিয়ারি দেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, ‘ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা করা যাবে না।’ মঙ্গলবার থেকে কাযর্কর হওয়া ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার রয়েছে ইরানিদের মাকির্ন ডলার ক্রয়, ধাতু আমদানি-রপ্তানি, কয়লা, শিল্পায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ও অটোমোবাইল খাত। এদিকে, এ ধরনের পদক্ষেপকে ‘মনস্তাত্তি¡ক যুদ্ধ’ অভিহিত করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। সংবাদসূত্র : বিবিসি, পাসর্ টুডে ইরানের ওপর নতুন অবরোধের মধ্যে কিছু এখনই কাযর্কর হয়েছে। তেল রপ্তানিসহ কঠোর অবরোধ কাযর্কর হবে নভেম্বর থেকে। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে করা ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির করা পরমাণু চুক্তি থেকে সম্প্রতি বেরিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প ওই চুক্তিকে ‘একপক্ষীয়’ ও ‘বিপযর্য়কর’ বলেও আখ্যায়িত করেন। এরপর চলতি বছরের ৬ আগস্ট থেকে ইরানের বিরুদ্ধে আবারও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে ইরান চুক্তি থেকে সরে আসেনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক অবরোধের বিরুদ্ধেও কথা বলছেন ইউরোপীয় নেতারা। তারা বলছেন, ইরানের সঙ্গে বৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাবেন। আলোচনার প্রস্তাব মনস্তাত্তি¡ক যুদ্ধ : রুহানি এদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসার যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা ‘মনস্তাত্তি¡ক যুদ্ধ’ ছাড়া কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন কংগ্রেস নিবার্চনে এ বিষয়টিকে ব্যবহার করে ট্রাম্প রিপাবলিকান পাটিের্ক জিতিয়ে দিতে চান। ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পুনবর্হালের সিদ্ধান্ত কাযর্করের আগের দিন ট্রাম্পের আলোচনার প্রস্তাব সম্পকের্ এই মন্তব্য করেন তিনি। সোমবার রাতে ইরানের টিভি চ্যানেলকে দেয়া সরাসরি এক সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে রুহানি বলেন, ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। কারণ, গোটা ইউরোপসহ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ এই ইস্যুতে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। বিষয়টি উপলব্ধি করে ট্রাম্প ইরানের প্রতি আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে এ দেশের জনগণকে ধেঁাকা দেয়ার চেষ্টা করছেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যে আলোচনায় বসতে চায়, তার জানা উচিত আলোচনার প্রথম শতর্ সততা। কিন্তু আমাদের আলোচনার প্রস্তাব দিচ্ছেন এমন এক ব্যক্তি, যিনি তার দেশের আন্তজাির্তক প্রতিশ্রæতি লঙ্ঘন করে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি ও ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গেছেন। তিনি যে আবার আলোচনায় বসে অজির্ত সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাবেন না, তার কোনো গ্যারান্টি নেই। কাজেই এ ধরনের মানুষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে না তেহরান। অন্যদিকে, দেশটির ওপর নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা কাযর্কর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে সোমবার ‘ফক্স নিউজ’কে হোয়াইট হাউসের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণ করতে অথবা নতুন অথৈর্নতিক নিষেধাজ্ঞায় আরও দুভোের্গ পড়ার মধ্য থেকে একটি বেছে নিতে ইরানের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন। এ সময় ইরানের সঙ্গে মধ্যস্থতার ব্যাপারে ট্রাম্পের আগ্রহকে তেহরানের গুরুত্ব দেয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বোল্টন বলেন, ‘মধ্যস্থতার বিষয়ে প্রেসিডেন্টের প্রস্তাব গ্রহণ করা উচিত তাদের, উচিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক অস্ত্র কমর্সূচি সম্পূণর্ ও যাচাইযোগ্য উপায়ে পরিত্যাগ করা। আয়াতুল্লাহ খামেনি যদি চাপ থেকে বেরিয়ে আসতে চান, তাহলে তাদের উচিত আলোচনায় বসা। আলোচনার সময় চাপ থাকবে না।’ দশকের পর দশক ধরে পরস্পরের শত্রæ হিসেবে পরিচিত ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক‚টনৈতিক সম্পকর্ আরও নাজুক হয়েছে। ২০১৭ সালে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব নেয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের রাজনৈতিক ও সামরিক উপস্থিতির পরিমাণও বেড়েছে। চলতি সপ্তাহ থেকে তেহরানের ওপর নতুন করে যে মাকির্ন নিষেধাজ্ঞা কাযর্কর হয়েছে, ২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের চুক্তির পর তা তুলে নিয়েছিল ওবামা প্রশাসন। পারমাণবিক কমর্সূচির লাগাম টানার বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার শতের্ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জামাির্ন, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে স্বাক্ষরিত ইরানের ওই জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশনের (জেসিপিওএ) তীব্র বিরোধী ট্রাম্প চলতি বছরের মে মাসে চুক্তি থেকে ওয়াশিংটনকে সরিয়ে নেন।