যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আর আলোচনায় বসবে না উত্তর কোরিয়া

শত্রম্নতা বন্ধ না করলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আর কোনো আলোচনায় না বসার ঘোষণা দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে দুই দেশের মধ্যকার বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার একদিনের মাথায় এ ঘোষণা দিলো পিয়ংইয়ং। সংবাদসূত্র : পার্স টুডে, নিউজ ১৮ উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র বিদ্বেষী আচরণ ত্যাগ করার কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এ ধরনের 'ঘৃণা উদ্রেককারী' আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা পিয়ংইয়ংয়ের নেই। ওয়াশিংটনকে বিদ্বেষী আচরণ পরিহারের জন্য চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে পিয়ংইয়ং। উত্তর কোরীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভাগ্য এখন ওয়াশিংটনের হাতে রয়েছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ পর্যন্ত তাদের সময় দেয়া হলো। স্টকহোম আলোচনা ভেঙে যায়নি এবং দুই সপ্তাহ পর ফের উভয় দেশের কর্মকর্তারা আলোচনায় বসবেন বলে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে ঘোষণা দিয়েছে, তাও প্রত্যাখ্যান করেছে পিয়ংইয়ং। উত্তর কোরিয়া বলছে, যুক্তরাষ্ট্র সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন গল্প প্রচার করছে। তাদের বিদ্বেষী আচরণের কারণে দুই দেশের সম্পর্কে যে ঘৃণা তৈরি হয়েছে, তা দুই সপ্তাহের মধ্যে শেষ করা সম্ভব নয়। দুই দেশের পরমাণু আলোচনা বাতিলের পর ওয়াশিংটনকে দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর পরামর্শ দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ আলোচক কিম মিয়ং গিল। শনিবার সুইডেনে উত্তর কোরীয় দূতাবাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পুরনো ধ্যান-ধারণার কোনো পরিবর্তন হয়নি। দেশটিকে অবশ্যই দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। গত শনিবার সুইডেনের স্টকহোমে বৈঠকে বসেন যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধিরা। গত জুনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উনের সাক্ষাতের পর এটাই প্রথম আনুষ্ঠানিক আলোচনা। বৈঠককে স্বাগত জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, পরমাণু অস্ত্রমুক্ত হতে কিছু একটা করতে চায় পিয়ংইয়ং। তবে কিছুক্ষণ পর উত্তর কোরীয় কর্মকর্তারা জানান, আর আলোচনা হবে না। দেশটির পরমাণুবিষয়ক সর্বোচ্চ দূত কিম মিয়ং গিল বলেন, 'সংলাপে আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি এবং শেষ পর্যন্ত তা ব্যর্থ হয়েছে।' সম্প্রতি সাবমেরিন (ডুবোজাহাজ) থেকে সফলভাবে 'ব্যালিস্টিক' ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করার দাবি করেছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির কর্মকর্তারা জানান, সমুদ্রসীমাকে বাইরের হুমকি থেকে সুরক্ষায় ও আত্মপ্রতিরক্ষার সক্ষমতা জানান দিতে এই পরীক্ষা চালিয়েছে তারা। ৩০ সেপ্টেম্বের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু আলোচনার ব্যাপারে ঘোষণা দেয়ার পরই পরীক্ষা চালায় তারা। ফেব্রম্নয়ারিতে হ্যানয়ে ট্রাম্প-কিম বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়াকে সব পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগের কথা বললে পিয়ংইয়ং মার্কিন নেতৃত্বাধীন সব আন্তর্জাতিক অবরোধ তুলে নেয়ার দাবি করে। দুই পক্ষ পারস্পরিক সম্মতিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় ভেস্তে যায় আলোচনা। হ্যানয়ের বৈঠক ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার পর গত ৩০ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক বৈঠকে 'ওয়ার্কিং লেভেলে' আলোচনা পুনরায় শুরুর বিষয়ে সম্মত হন উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন। তবে এখনো সেই আলোচনা শুরু হয়নি।