ফের রাজপথে বিক্ষোভকারীরা

হংকংয়ে মুখোশ নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে

প্রকাশ | ০৮ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
চার মাসের টানা সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমাতে ঔপনিবেশিক যুগের জরুরি আইনের আওতায় হংকংয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশে মুখোশ পরা নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছেই। এই ইসু্যতে সোমবারও বিক্ষোভ দেখিয়েছে শত শত বিক্ষোভকারী। তারা এদিন একটি শপিং মলে জড়ো হয়ে স্বাধীনতার দাবিতে স্স্নোগান দিয়েছে। শপিং মলের ভেতর বৃত্তাকারে সমবেত হয়ে বিক্ষোভকারীরা 'হংকং পুলিশ বাহিনী ভেঙে দাও,' 'স্বাধীনতার জন্য লড়ো,' 'আমার মুখোশ পরার অধিকার আছে' বলে স্স্নোগান দেয়। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স এর আগে রোববার বিক্ষোভকারীরা মুখোশের ওপর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মুখোশ পরেই হংকংয়ের কেন্দ্রস্থলে বিক্ষোভ করে। পুলিশ কয়েক জাগায় টিয়ার গ্যাস ছুড়লেও তা উপেক্ষা করেই বিক্ষোভ হয়েছে। বৃষ্টিও উপেক্ষা করে বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ চালিয়ে গেছে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের হঠাতে জলকামানও ব্যবহার করেছে। বিক্ষোভকারীদের মুখ থেকে মুখোশ সরিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন মানুষ আহতও হয়েছে। পেট্রলবোমায় মুখে আঘাত পাওয়া এক সাংবাদিককে গত রোববার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার মুখের কিছু অংশ পুড়ে গেছে এবং মাথায় ও ঘাড়ে আগুনের আঁচ লেগেছে। যদিও তিনি সোমবার হাসপাতাল ছেড়েছেন। চিকিৎসায় অবস্থার উন্নতি হলে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি। তবে দগ্ধ সাংবাদিকের নাম জানা যায়নি। হংকংয়ের নেতা ক্যারি লাম গত শুক্রবার মুখোশ নিষিদ্ধের ঘোষণা দেয়ার পরই এর প্রতিক্রিয়ায় রাস্তায় একটি ছোটখাটো বিক্ষোভ হয়েছিল। শনিবার সেই বিক্ষোভে সামিল হয় আরও বেশি মানুষ। রোববার তা আরও বড় আকার ধারণ করে এবং এখনো বিক্ষোভ থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মুখোশবিরোধী আইনে ক্ষোভ বাড়ছে। ফলে আরও অনেক মানুষ এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামবে বলে মনে করা হচ্ছে। উলেস্নখ্য, হংকংয়ে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাস থেকে বাঁচতে এবং তাদের যেন শনাক্ত করা না যায়, এ জন্য প্রায়ই মুখোশ পরে। হংকং পুলিশের ভাষ্য, বিক্ষোভকারীরা বেআইনিভাবে সমাবেশে যোগ দিচ্ছে, প্রধান প্রধান সড়ক বন্ধ করে দিচ্ছে। হংকংয়ের নেতা লামও আর কোনো সহিংসতা না হতে দেয়ার অঙ্গীকার করে বলেছেন, 'আমরা আর দাঙ্গা-বিক্ষোভকারীদের আমাদের প্রিয় হংকংকে ধ্বংস করতে দিতে পারি না।' হংকংয়ের জননিরাপত্তাকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়া বিক্ষোভকারীদের 'চরম সহিংসতা'র প্রেক্ষাপটেই মুখোশবিরোধী আইন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। নতুন আইনের আওতায় মুখ ঢেকে রাখার জন্য বিক্ষোভকারীদের এক বছরের জেল হতে পারে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নতুন আইনটি খুবই বিতর্কিত এবং এটি কার্যকর করাও কঠিন হবে। এ ছাড়া, হংকংয়ে বিক্ষোভের বিরুদ্ধে এটিই সম্ভবত প্রথম, এমন কড়া পদক্ষেপ বলে সতর্ক করেছেন সমালোচকরাও। চীনের মূল ভূখন্ডে বন্দি প্রত্যর্পণ নিয়ে একটি প্রস্তাবিত বিল বাতিলের দাবিতে গত জুন মাসে হংকংয়ে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। টানা আন্দোলনের মুখে ওই বিল প্রথমে 'মৃত' এবং পরে বাতিল ঘোষণা করা হলেও আন্দোলন থামেনি। বরং গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীরা এখন হংকংয়ের চীনপন্থি সরকারের পদত্যাগ দাবি করছে।