সিরিয়ায় তুরস্কের অভিযান

সীমান্ত টপকে সিরিয়ায় ঢুকছে তুর্কি বাহিনী

ম উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে পেন্টাগনের সঙ্গে আলোচনা ট্রাম্পের

প্রকাশ | ১০ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক সিরিয়ার উত্তর-পূর্ব সীমান্ত এলাকা থেকে কুর্দি ওয়াইপিজি গেরিলাদের সরিয়ে দিতে দেশটির ভেতর প্রবেশ শুরু করেছে তুরস্কের সেনাবাহিনী। বুধবার ভোরের দিকে সেনাবাহিনীর অগ্রবর্তী দলগুলো তাল আবায়েদ ও রাস আল-আইন শহরের দুটি পয়েন্ট দিয়ে সিরিয়ায় ঢুকে বলে তুরস্কের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। নাম না প্রকাশ করার শর্তে তথ্য দেয়া ওই কর্মকর্তা এর বাইরে বিস্তারিত কিছু বলেননি। সংবাদসূত্র : রয়টার্স গত রোববার তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়ে্যপ এরদোয়ানের সঙ্গে ফোনালাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক ডজন সৈন্যকে সরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রম্নতি দেয়ার পরপরই আঙ্কারা ওই এলাকায় অভিযানের কথা ঘোষণা করেছিল। সীমান্তে একটি 'নিরাপদ অঞ্চল' প্রতিষ্ঠা করে সিরীয় শরণার্থীদের দেশে ফেরার পথ করে দিতে এ অভিযান হবে বলেও জানিয়েছিল তারা। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারই এরদোয়ানকে কুর্দি ওয়াইপিজি গেরিলাদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানের পথ করে দেয়। আঙ্কারা এ গেরিলাদের তাদের দেশে নিষিদ্ধ বিচ্ছিন্নতবাদী কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) সহযোগী মনে করে। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটবিরোধী লড়াইয়ে ওয়াইপিজি মার্কিন বাহিনীর ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত ছিল। এভাবে সেনা সরিয়ে নিয়ে ট্রাম্প মিত্রদের 'পেছন থেকে ছুরি মেরেছেন' বলে তারা এখন অভিযোগও করছেন। কুর্দিদের ঝুঁকিতে ঠেলে দেয়ার পদক্ষেপ দেশে-বিদেশে তুমুল সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। মার্কিন রিপাবলিকান দলের অনেক প্রভাবশালী সদস্যও ট্রাম্পকে তার সিদ্ধান্ত বদলাতে অনুরোধ করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার সিদ্ধান্তে অবিচল থাকার কথা জানিয়ে বলেছেন, 'সীমা ছাড়ালে' তিনি তুরস্কের অর্থনীতিকে গুঁড়িয়ে দেবেন। পেন্টাগনও পরে এক বিবৃতিতে তুরস্কের অভিযানে 'সমর্থন দেয়া হবে না' বলে জানায়। সিরিয়ায় তুর্কি বাহিনীর প্রবেশ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কুর্দি গেরিলাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার গেরিলাদের এক কমান্ডার নিজেদের জনগণকে রক্ষায় সর্বোচ্চ প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন। পেন্টাগনের সঙ্গে আলোচনা ট্রাম্পের এদিকে তুরস্কের সামরিক অভিযানের মুখে সিরিয়া সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের সঙ্গে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত কয়েকদিন ধরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এস্পার ছাড়াও কথা বলেছেন জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান মার্ক মাইলির সঙ্গে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক বিবৃতিতে মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে পেন্টাগনের মুখপাত্র জোনাথন হফম্যান বলেন, 'দুর্ভাগ্যক্রমে তুরস্ক একতরফাভাবে পদক্ষেপ বেছে নিয়েছে। ফলে আমরা উত্তর সিরিয়ায় তুর্কি অভিযান থেকে মার্কিন বাহিনীর সদস্যদের সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য তাদের সরিয়ে নিয়েছি। সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতির কোনো পরিবর্তন করা হয়নি। অন্যদিকে, তুর্কি সামরিক অভিযানের মুখে দেশটির সিরীয় সীমান্ত থেকে মার্কিন সেনা সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তে সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রেসিডন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজ দল রিপাবলিকান পার্টি এবং বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির সমালোচনার মুখে ট্রাম্প মনে করিয়ে দিয়েছেন, তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার এবং ন্যাটো মিত্র। এর আগে সোমবার সিরিয়ায় আইএসবিরোধী অভিযান চালানোর ঘোষণা দেয় তুরস্ক। দেশটির প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলেন, সন্ত্রাসী আস্তানা গুঁড়িয়ে দিতেই তুর্কি সীমান্তবর্তী সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে সামরিক অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আঙ্কারা। তুরস্কের অভিযান চালানোর ঘোষণার পর ওই অঞ্চল থেকে নিজেদের সেনা সরিয়ে নিতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।