আজ মোদি-শি বৈঠক

কাশ্মীর প্রসঙ্গ থাকছে না দুই নেতার আলোচনায়

জ্জ দুই দেশের সীমান্ত বিরোধ ও বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে হতে পারে আলোচনা

প্রকাশ | ১১ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
নরেন্দ্র মোদি ও শি জিনপিং -ফাইল ছবি
যাযাদি ডেস্ক চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দুই দিনের সফরে ভারতে আসছেন আজ। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হতেই জিনপিংয়ের এই সফর। বৈঠকে ভারত ও চীনের মধ্যকার সীমান্ত বিরোধ ও বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এর আগে চীনা কর্মকর্তারা জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে আলোচনার আশাবাদ ব্যক্ত করলেও বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকে কাশ্মীর প্রসঙ্গে আলোচনা হবে না। উলেস্নখ্য, ভারতের তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ের মামালস্নাপুরামে আজ ও আগামীকাল দুই দিনের বৈঠকে মিলিত হবেন এই দুই শীর্ষ নেতা। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। লাদাখ ও কাশ্মীরকে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে পার্লামেন্টে বিল পাস হয়। এ পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে কাশ্মীরজুড়ে মোতায়েন করা হয় বিপুলসংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী। জারি করা হয় বিধিনিষেধ। গ্রেপ্তার করা হয় সেখানকার শত শত নেতাকর্মীকে। সেখানে উন্নয়নের জন্য এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এবং এটা দেশটির 'সম্পূর্ণ অভ্যন্তরীণ বিষয়' ভারতের পক্ষ থেকে এমন দাবি করা হলেও পাকিস্তান বলছে, সেখানে কাশ্মীরিদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে চীন সফর করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সফরে তিনি বৈঠক করেন চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে। গত বুধবার বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে কাশ্মীর সংকট ও চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, তিনি কাশ্মীর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে পাকিস্তানকে সমর্থন করবে তার সরকার। এ সময় কাশ্মীর সংকটকে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের ওপর জোর দেন তিনি। এরপর কাশ্মীর ইসু্যতে সমর্থন দেয়ার জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানায় ইসলামাবাদ। চীনের প্রেসিডেন্টের এমন বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় দিলিস্ন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাভিশ কুমার বলেন, 'কাশ্মীর বিষয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট এবং অনড় রয়েছে। আমরা আগেই বলেছি যে, কাশ্মীর আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। চীনও আমাদের এই অবস্থান ভালো করেই জানে। ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে অন্য কোনো দেশ কথা বলুক, এটা আমরা চাই না।' ভারত-চীনের সম্পর্ক গত কিছুদিন ধরে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে কাশ্মীর ইসু্যতে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে ভারতের সমালোচনা। অরুণাচলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি সামরিক মহড়া নিয়ে চীনের উদ্বেগের মধ্যেই এই দুই নেতা শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের আগে গত বছর সীমান্ত বিরোধের জেরে অচলাবস্থা সৃষ্টির পর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে চীনের ইউহান শহরে প্রথম ঘরোয়া বৈঠক করেন এই দুই শীর্ষ নেতা। বুধবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'ভারত-চীনের নিবিড় উন্নয়নের অংশীদারিত্ব জোরদার এবং দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ ইসু্যতে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য দুই নেতাকে সুযোগ করে দেবে আসন্ন বৈঠক।' ভারতের জওয়াহেরলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চায়না স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক শ্রীকান্ত কোন্দাপালি বলেন, 'দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যে এ রকম দ্বিতীয় অনানুষ্ঠানিক বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ।'