কাশ্মীর নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে ট্রাম্পকে বারণ মোদির

জানালেন অমিত শাহ

প্রকাশ | ১২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
অমিত শাহ
ভারতের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সভাপতি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বলেছেন, কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ ইসু্য, আর এতে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ করার প্রয়োজন নেই। শুক্রবার মহারাষ্ট্রের বুলধানা শহরে এক নির্বাচনী সমাবেশে একথা জানান অমিত শাহ। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, ইনডিয়া টুডে গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এর প্রতিবাদে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করাসহ ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকে বহিষ্কার করেছে পাকিস্তান। ভারতের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরালো করেছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রশাসন। আর কাশ্মীরকে বরাবর নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয় দাবি করে আসছে ভারত। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কাশ্মীর ইসু্যতে দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবারের নির্বাচনী সমাবেশে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেন, 'বহু বছর ধরেই আমাদের অবস্থান হলো, আমরা কাশ্মীরে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ সহ্য করব না। যদি কোনো দেশ কাশ্মীর নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করে, তাহলে আমরা বলি যে, এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, সেটা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হোন বা যেই হোন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পরিষ্কার করে বলেছেন, কাশ্মীর আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, আর আপনার এতে হস্তক্ষেপ করার দরকার নেই'। অমিত শাহ বলেন, কংগ্রেস ৩৭০ ধারা বাতিলের বিরোধিতা করেছে। মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনে ভোটারদের উচিত কাশ্মীর ইসু্যতে তাদের কাছে তাদের অবস্থান জানতে চাওয়া। তিনি আরও বলেন, কাশ্মীরকে ভারতে অঙ্গীভূত করার ক্ষেত্রে বড় বাধা ছিল ৩৭০ ধারা। গত ৭০ বছরে কোনো প্রধানমন্ত্রী এই ধারা বাতিলের সাহস দেখাননি। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি তা দেখিয়েছেন। আগামী ২১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে মহারাষ্ট্রের বিধানসভার নির্বাচন। এতে বিজেপি শিবসেনার সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে অংশ নিচ্ছে। আর বিরোধী শিবিরে রয়েছে কংগ্রেস ও এনসিপি জোট। আগামী ২৪ অক্টোবর এই বিধানসভার ভোট গণনা হবে। ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কংগ্রেসের গোলাম নবী আজাদ পার্লামেন্টে বলেছিলেন, '৩৭০ ধারা বাতিল হলে কাশ্মীরে রক্তের নদী বয়ে যাবে। কিন্তু আমি আপনাদের বলতে চাই, ৩৭০ ধারা বাতিল হলেও কাশ্মীরে একফোঁটা রক্তও ঝরেনি।' প্রসঙ্গত, ৩৭০ ধারা বাতিলকে কেন্দ্র করে কাশ্মীরে আগস্টের শুরু থেকেই সেখানে মোতায়েন করা হয় বিপুলসংখ্যক অতিরিক্ত সেনা সদস্য। গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেখানকার শত শত নেতাকর্মীকে। বন্ধ করে দেয়া হয় টেলিফোন, মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা। দুই মাস পার হলেও কাশ্মীরে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হচ্ছে ভারত সরকার। যদিও বিশেষ মর্যাদা বাতিলের ৬৪ দিন গত বৃহস্পতিবার পর্যটকদের জন্য কাশ্মীরের দ্বার খুলে দিয়েছে ভারত সরকার। তবে পর্যটকদের জন্য কাশ্মীরের দ্বার খুললেও ব্যাপক সেনা অধু্যষিত অঞ্চলটি আগের মতো পর্যটক পাবে কিনা, তা নিয়েও শঙ্কা অনেকের। কর্তৃপক্ষ অবশ্য পর্যটকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে। উলেস্নখ্য, কাশ্মীরের অর্থনীতিতে পর্যটন একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত।