কাশ্মীরে আবারও সন্ত্রাসীদের গ্রেনেড হামলা, আহত ৭

পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে দোকান খোলার আহ্বান প্রশাসনের

প্রকাশ | ১৩ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
হামলার পর ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক অবস্থান
কঠোর নজরদারির মধ্যেও ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের শ্রীনগরে শনিবার গ্রেনেড হামলায় অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। এদিন মধ্য শ্রীনগরের হরি সিং মহাসড়কে ওই গ্রেনেড হামলা হয়। এই হামলার জন্য সন্ত্রাসীদের দায়ী করেছে পুলিশ। বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর অবরুদ্ধ কাশ্মীরে এটি দ্বিতীয় গ্রেনেড হামলা। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, এনডিটিভি, দ্য হিন্দু গত ৫ আগস্ট কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে অঞ্চলটিকে দুই টুকরো করে দেয় দিলিস্ন। ওই দিন সকাল থেকে কার্যত অচলাবস্থার মধ্যে নিমজ্জিত হয় দুনিয়ার ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীর উপত্যকা। এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে কাশ্মীরজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক অতিরিক্ত সেনা। ঘটনার আগের দিন থেকে ইন্টারনেট-মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেখানকার বিপুলসংখ্যক স্বাধীনতাপন্থী ও ভারতপন্থী রাজনৈতিক নেতাকে। এরপর থেকে সেখানে চলছে অচলাবস্থা। তার মধ্যেই আবারও গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটল। কাশ্মীর পুলিশ টুইট বার্তায় জানিয়েছে, 'শ্রীনগরের হরি সিং মহাসড়কে সন্ত্রাসীরা একটি গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে। আহতদের অবস্থা স্থিতিশীল। এলাকাটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। সেখানে তলস্নাশি অভিযান চলছে।' নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা ও মহারাজা হরি সিং হাসপাতালের অন্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওই হামলায় আহতদের এই হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। এর আগে গত ৬ অক্টোবর ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের অনন্তনাগে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এক গ্রেনেড হামলা হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। ওই সময়ও হামলার জন্য সন্ত্রাসীদের দায়ী করে পুলিশ প্রশাসন। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে দোকান খোলার আহ্বান এদিকে জঙ্গিদের হুমকিতে ভীত না হয়ে নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য পুনরায় শুরু করতে দোকান খোলার আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের প্রশাসন। শুক্রবার পত্রিকায় এই বিজ্ঞাপন প্রকাশ হয়েছে। স্বায়ত্তশাসন বাতিলকে কেন্দ্র করে বিধিনিষেধ আরোপের ৬৮তম দিনে স্থানীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোতে পূর্ণ পৃষ্ঠাজুড়ে দেয়া বিজ্ঞাপনে এই আহ্বান জানানো হয়। ৩৭০ ধারা বাতিলকে কেন্দ্র করে আগস্টের শুরু থেকেই কাশ্মীরে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক অতিরিক্ত সেনা সদস্য। দুই মাস পার হলেও কাশ্মীরে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হচ্ছে ভারত সরকার। এমন প্রেক্ষাপটে শুক্রবার কাশ্মীরের স্থানীয় দৈনিকগুলোতে বিজ্ঞাপন দেয় রাজ্য প্রশাসন। ওই বিজ্ঞাপনে প্রশাসন 'কোন্‌ সিদ্ধান্তটি সঠিক' তা বেছে নিতে বাসিন্দাদের আহ্বান জানিয়েছে। বিজ্ঞাপনে লেখা হয়েছে, দোকান বন্ধ, গণপরিবহন বন্ধ, লাভবান কে? বিজ্ঞাপনে লেখা হয়েছে, আজ আমরা এক ক্রান্তিকালে দাঁড়িয়ে আছি। আমরা কি হুমকি বা প্রভাবিত করতে বলপ্রয়োগের পুরভনো যুগ চলতে দেব? হুমকি আর গুজব চলবে, নাকি আমরা যথাযথ তথ্যের ভিত্তিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবো? এর আগে ৬৬তম দিনে বুধবার সেখানে কলেজ খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। রাজ্যে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফেরাতে এই উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতিতে সেই উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে। এর আগে সেখানকার স্কুল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও কোনো শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়নি। এদিকে, জম্মু ও কাশ্মীরে সোমবার থেকে পোস্টপেইড মোবাইল সংযোগ ফের চালু করা হবে বলে শনিবার ঘোষণা করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।