উদ্ধারে সেনা মোতায়েন

হাগিবিসে লন্ডভন্ড জাপান মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৬

কয়েক দশকের মধ্যে শক্তিশালী হাগিবিসের ছোবলের পর ভয়াবহ বন্যার কবলে দেশটি

প্রকাশ | ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন হাগিবিসের আঘাতে জাপানের রাজধানী টোকিও ও পার্শ্ববর্তী উত্তর-পূর্ব অঞ্চল লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। জাপানের প্রধান দ্বীপ হনশুতে শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় আঘাত হানা প্রবল এই সুপার টাইফুনে অন্তত ২৬ জনের মৃতু্য ও দুই শতাধিক আহত হওয়ার খবর রোববার স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে। এ ছাড়া ১৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এদিকে, আটকেপড়া মানুষদের উদ্ধারে কাজ শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স হাগিবিসের প্রভাবে এরই মধ্যে জাপানের আট শতাধিক ফ্লাইট, দ্রম্নতগামী বুলেট ট্রেনসহ যাবতীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। প্রায় ৩০ লাখ মানুষ শনিবার থেকে বিদু্যৎবিহীন রয়েছে। প্রায় ৬০ লাখ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা এ পর্যন্ত ২৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করলেও এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। উদ্ধার তৎপরতা চলছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা রোববার সকালে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'আমরা আপাতত জরুরি বৃষ্টিপাতের সতর্কতা লেবেল-৫ প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। তবে টোকিও, গুনমা, সায়তামা, কানাগাওয়া, ইয়ামানাশি, নাগানো, শিজুওয়াকা, নিগাতা ও ফুকুশিমা অঞ্চলের বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ভূমিধস ও বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।' প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এদিন সাংবাদিকদের বলেন, 'এটা একটি ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এরই মধ্যে কয়েক হাজার এসডিএফ (সেনাবাহিনী) উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে। আমরা জনগণকে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। টাইফুনের ব্যাপকতা কমে এলেও আমরা এখন বন্যার কবলে পড়েছি। সবাইকে সতর্কভাবে চলার অনুরোধ করছি।' স্থানীয় কোস্টগার্ড কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার রাতে টোকিও সাগরে ১২ জন ক্রুসহ পানামানিয়ান নামের একটি কার্গো ডুবে যায়। রোববার সকালে তিনজনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও আরও ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। টেলিভিশন ফুটেজে নাগানো প্রদেশে চিকুমা নদীর আশপাশে বাড়িঘর জলমগ্ন দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বয়ে চলছে। শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার কিছুক্ষণ আগে টাইফুন হাগিবিস টোকিওর দক্ষিণ-পশ্চিমে ইজু উপদ্বীপের উপকূল দিয়ে স্থলে উঠে আসে। ঘণ্টায় একটানা সর্বোচ্চ ২২৫ কিলোমিটার বাতাসের বেগ নিয়ে হাগিবিস হনশুর পূর্ব উপকূল ধরে উত্তর দিকে এগিয়ে যায়। রোববার ভোরের আগে টাইফুনটি জাপানের উত্তর-পূর্ব উপকূলের দিকে সরে যায়। রোববার সন্ধ্যায় টাইফুন হাগিবিস ফের সাগরমুখী হয়ে জাপানের উত্তরাঞ্চলীয় দ্বীপ হোক্কাইডোর দিকে এগিয়ে যায়। হাগিবিস ১৯৫৮ সালের পর থেকে টোকিওতে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন বলে আগেই সতর্ক করেছিল জাপান সরকার। এর প্রভাবে বহু জায়গায় আগের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়া বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানা গেছে। দেশটির সরকার বলছে, মধ্যাঞ্চলের নাগানো ও এর আশপাশের এলাকায় ঝড়ের তান্ডবে আটকেপড়া মানুষকে উদ্ধারে জাপানের আত্ম-প্রতিরক্ষা বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও কোস্টগার্ডের প্রায় ২৭ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। গণমাধ্যম বলছে, দেশটির অধিকাংশ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানা যায়নি। উলেস্নখ্য, ফিলিপাইনে তাগালোগ ভাষার শব্দ 'হাগিবিস' মানে 'গতি'।