ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ :নোবেলজয়ী অভিজিৎ

প্রকাশ | ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
নোবেলজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি
যাযাদি ডেস্ক চলতি বছর স্ত্রী এস্তার ডুফলো এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইকেল ক্রেমারের সঙ্গে যৌথভাবে অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী বাঙালি অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি ভারতের অর্থনীতির অবস্থা 'খুবই খারাপ' বলে মন্তব্য করেছেন। নোবেলজয়ের পর সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের 'ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অভিজিৎ এসব বলেছেন। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি সংবাদ সম্মেলনে বাঙালি এ অর্থনীতিবিদকে ভারতের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ নিয়ে মত দিতে বলা হলে তিনি বলেন, 'ভবিষ্যতে কী হবে আমার বিবৃতি তার ওপর নয়, বরং এখন কী হচ্ছে তা নিয়ে। আমি এ বিষয়ে মত দিতে পারি। আমার দৃষ্টিতে ভারতের অর্থনীতি খুবই খারাপ।' এর পেছনে যুক্তি দিতে গিয়ে অভিজিৎ প্রতি দেড় বছর পরপর প্রকাশিত ভারতের 'ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভ'র করা দেশটির গ্রাম ও শহরের বাসিন্দাদের গড় ব্যয়ের ভারসাম্যহীনতার তথ্য টানেন। অভিজিৎ বলেন, 'যদি আমরা ২০১৪-১৫ ও ২০১৭-১৮ সালের তথ্যের দিকে তাকাই, তাহলে দেখব, গড় ব্যয় সামান্য হলেও কমে গেছে। অনেক অনেক বছর পর প্রথমবার এ চিত্র দেখা গেল, যা স্পষ্টতই সতর্কীকরণ চিহ্ন।' ভারতের সরকার তাদের জন্য অস্বস্তিকর যে কোনো তথ্য-উপাত্তকেই ভুল বলে চিহ্নিত করতে চাইলেও সাম্প্রতিক সময়ে তারাও সংকট স্বীকার করে নিচ্ছে বলে মত তার। তিনি বলেন, কোন্‌ উপাত্ত যে সঠিক, তা নিয়ে ভারতে তুমুল বিতর্ক চলছে। যেসব উপাত্ত অস্বস্তিকর, সেগুলো ভুল হিসেবে দেখাতে সরকারের সুনির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গিও আছে। এরপরও, এমন কিছু একটা আছে, যে আমার মনে হচ্ছে, সরকারও ধীরে ধীরে সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে নিচ্ছে। অর্থনীতি শ্লথ হচ্ছে দ্রম্নতগতিতে। কতটা দ্রম্নতগতিতে হচ্ছে, তা আমরা জানি না, কেননা এ-সংক্রান্ত উপাত্ত নিয়ে বিতর্ক আছে; কিন্তু আমার মনে হয় বেশ দ্রম্নতগতিতেই হচ্ছে।' সংকট নিরসনে সুনির্দিষ্টভাবে কী করা দরকার, তা বলতে পারেননি ৫৮ বছর বয়সি এ অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, সরকারের আর্থিক ঘাটতি বিশাল, কিন্তু এই মুহূর্তে তার উচিত, বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা ও আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রাখার ভান করে হলেও সবাইকে কিছুটা সন্তুষ্ট করার প্রয়াস নেয়া।' এমআইটির এ অধ্যাপক বলেন, তার বিবেচনায়, অর্থনীতি যখন 'নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ঘুরপাক খায়' তখন 'আর্থিক স্থিতিশীলতা নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন না হয়ে চাহিদা নিয়েও কিছুটা উদ্বিগ্ন হওয়া দরকার'। অভিজিৎ বলেন, 'আমার মনে হয় চাহিদা এই মুহূর্তে অর্থনীতির জন্য বিরাট সমস্যা।' কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে ১৯৮৮ সালে হার্ভার্ডে পিএইচডি করা অভিজিৎ এখন এমআইটিতে অর্থনীতি পড়াচ্ছেন 'ফোর্ড ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল প্রফেসর' হিসেবে।