রয়টার্সের বিশ্লেষণ

মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব বাড়ছে পুতিনের

'রিয়াদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে মস্কোর দহরম মহরম সত্ত্বেও সৌদিতে পুতিনের উষ্ণ অভ্যর্থনা মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান প্রভাব বৃদ্ধিরই ইঙ্গিত'

প্রকাশ | ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সৌদি রাজপ্রাসাদে দেশটির বাদশাহ সালমানের সঙ্গে দাঁড়িয়ে গার্ড অব অনার গ্রহণ করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন -রয়টার্স
যাযাদি ডেস্ক সিরিয়ায় রুশ সামরিক বাহিনীর শক্তিশালী উপস্থিতি এবং রিয়াদের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে মস্কোর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও জ্বালানি সহযোগিতা সত্ত্বেও দর্শককালের মধ্যে সৌদি আরবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিনের প্রথম সফর মধ্যপ্রাচ্যে দেশটির ক্রমবর্ধমান প্রভাববৃদ্ধিরই ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। সংবাদসূত্র : রয়টার্স চার বছর আগে, ২০১৫ সালে সিরিয়ায় সামরিক বাহিনী পাঠিয়ে রাশিয়া মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের শক্তির জানান দিয়েছিল। তাদের ও ইরানের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত বাশার আল-আসাদ ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হন, মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরোধ টপকে তিনি ফের সিরিয়ার বেশির ভাগ অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। টানা কয়েক বছরের ওই গৃহযুদ্ধে আসাদবিরোধীদের সঙ্গেই সৌদি আরবের সখ্য ছিল। সিরিয়ার সংঘাতে রিয়াদ ও মস্কোর অবস্থান প্রতিপক্ষ শিবিরে হলেও পুতিনকে এবার রাজকীয় অভ্যর্থনাই দিয়েছে সৌদি আরব। সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ এ দেশটি যে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নেও আগ্রহী, মিলেছে তারও ইঙ্গিত। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, রুশ প্রেসিডেন্টের রিয়াদ সফরের আগে আগেই যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে সেনা সরিয়ে নিয়ে ওই অঞ্চলে পুতিনের প্রভাব বৃদ্ধির আরও সুযোগ করে দিয়েছেন। মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের সুযোগে তুরস্ক ওই এলাকায় কুর্দিবিরোধী অভিযান শুরু করে, যা থেকে বাঁচতে কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্স (এসডিএফ) পরে আসাদ সমর্থিত বাহিনীর সঙ্গে একটি চুক্তিতেও রাজি হয়। ওই চুক্তির সূত্র ধরেই কয়েক বছর পর কুর্দি নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে অবাধে ঢুকতে পারছে ক্রেমলিন ঘনিষ্ঠ সিরীয় সেনাবাহিনী। মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরবের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সঙ্গেই সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মস্কোর দহরম মহরম দেখা যাচ্ছে। কেবল সিরিয়াতেই নয়, গত বছর যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিলে যে উত্তেজনার আবহ সৃষ্টি হয়, তাতেও তেহরানের পাশেই রাশিয়াকে দেখা গেছে। চলতি বছরের মাঝামাঝি থেকে উপসাগরে বিভিন্ন তেলবাহী ট্যাংকারে এবং সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের দুটি তেলের পস্ন্যান্টে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনাতে পশ্চিমারা ইরানকে দায়ী করলেও মস্কো সে সুরে গলা মেলায়নি। তেহরান শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে ওঠা এ অভিযোগগুলো অস্বীকার করে আসছে। গত সোমবার সৌদি সফরে এসে পুতিন দেশটির বাদশা সালমান এবং ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বলে জানিয়েছে গণমাধ্যম। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আগে থেকেই এ দুজনের সঙ্গে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে বলেও দাবি করে আসছিলেন। টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে পুতিন ও সৌদি বাদশা সালমান দুজনই আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় যৌথ বিনিয়োগের পাশাপাশি সিরিয়া ও ইয়েমেনে সংঘাতের বিষয়গুলো স্থান পেয়েছে জানিয়ে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বলেন, জ্বালানি খাতে সৌদি আরব ও রাশিয়ার সহযোগিতা স্থিতিশীলতা অর্জনে ভূমিকা রাখতে পারে।