ইইউ-যুক্তরাজ্য ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে সমঝোতা

জ্জ চূড়ান্ত হওয়ার আগে ব্রিটিশ ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনুমোদন নিতে হবে জ্জ শনিবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে স্পষ্ট হবে নতুন ব্রেক্সিটের গতিপথ

প্রকাশ | ১৮ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ব্রাসেলসে বরিস জনসন ও জঁ্য ক্লদ জাঙ্কার
দীর্ঘ টানাপড়েন আর অনিশ্চয়তার পর অবশেষে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছেছে যুক্তরাজ্য। বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় নেতাদের বৈঠকের আগে দুই পক্ষের প্রতিনিধিরা চুক্তির বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছান। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, এএফপি তবে চূড়ান্ত চুক্তি হওয়ার আগে তাতে ব্রিটিশ ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনুমোদন নিতে হবে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এক টুইটে সেই ঘোষণা দিয়ে বলেন, 'দারুণ একটা সমঝোতায় আমরা পৌঁছেছি, পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণও ফিরেছে।' ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ্য ক্লদ জাঙ্কার এক চিঠিতে বলেন, 'ইইউয়ের ২৭ সদস্য রাষ্ট্রকে চুক্তিতে অনুমোদন দেয়ার সুপারিশ করবেন তিনি।' কারণ তিনি বলেন, 'ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার শেষ সময় এখনই।' ব্রেক্সিট ইসু্যতে সমঝোতায় পৌঁছতে ব্যর্থ হয়ে চলতি বছরের গত মে মাসে পদত্যাগের ঘোষণা দেন যুক্তরাজ্যের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তিনি সরে দাঁড়ানোর পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন কট্টর ব্রেক্সিটপন্থি কনজারভেটিভ নেতা বরিস জনসন। নির্বাচিত হওয়ার পর আগামী ৩১ অক্টোবর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন তিনি। প্রয়োজনে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটেরও ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন তিনি। এদিকে ব্রেক্সিট প্রশ্নে দুই পক্ষের বোঝাপড়া সম্ভব হলেও এ যাত্রায় ইইউ আগের তুলনায় আরও সতর্ক হয়ে উঠেছে। সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ও ইইউয়ের সঙ্গে বিচ্ছেদ চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। তা সত্ত্বেও তিন-তিনবার তিনি পার্লামেন্টে তা অনুমোদন করতে ব্যর্থ হন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন দেশটির পার্লামেন্টে নিরঙ্কুশ সমর্থন আদায় করতে পারবেন কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে ৩১ অক্টোবরে প্রক্রিয়া মাফিক ব্রেক্সিট শেষ করার পথ সুগম করতে শনিবারই ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনে চুক্তির বিষয়ে অনুমোদন পাওয়ার আশা করছেন তিনি। অন্যদিকে, উত্তর আয়ারল্যান্ডে সরকারি জোটের শরিক দল নতুন চুক্তির বিরোধিতা করছে। দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য এই চুক্তি মেনে নিলে তবেই ইইউ আনুষ্ঠানিকভাবে এই সমঝোতা মেনে নিতে প্রস্তুত। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কয়েকটি বিষয় নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর হয়নি। ইউরোপীয় সরকারগুলোর পরিষদের প্রধান ডোনাল্ড টাস্ক আগেই জানিয়েছিলেন, নীতিগতভাবে চুক্তির মৌলিক ভিত্তি প্রস্তুত হয়ে গেছে। এমন প্রেক্ষাপটে ব্রাসেলসে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা ব্রেক্সিট চুক্তি স্বাক্ষর করবেন কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ব্রিটিশ সরকার এবং পার্লামেন্ট চুক্তি অনুমোদন করলে চলতি মাসে আরেকটি জরুরি শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করে ইইউ নেতারা চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। শনিবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বিশেষ জরুরি অধিবেশনে নতুন ব্রেক্সিট চুক্তির পক্ষে সমর্থনের মাত্রা স্পষ্ট হয়ে যাবে। তবে সব পক্ষ সম্মতি জানালেও ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করার জন্য যথেষ্ট সময় আর নেই বলে ইইউ কর্মকর্তারা মনে করছেন। সে ক্ষেত্রে শুধু প্রক্রিয়াগত কারণে এই তারিখ কিছুদিন পিছিয়ে দেয়া হতে পারে। ইউরোপীয় কমিশনের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জঁ্যা ক্লদ জাঙ্কার রসিকতা করে বলেন, 'সবাই ইংরেজি বোঝে, কিন্তু কেউ ইংল্যান্ডকে বোঝে না।'