তুরস্কে নতুন নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের

প্রকাশ | ১৮ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ডোনাল্ড ট্রাম্প রিসেপ তাইয়ে্যপ এরদোয়ান
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে কুর্দিবিরোধী অভিযান বন্ধ করা না হলে তুরস্কের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভ মুচিন জানান, তারা নতুন নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে ভাবছেন। তবে তুরস্ক নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন নয় বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়ে্যপ এরদোয়ান। এদিকে, রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স গত সপ্তাহে তুর্কি সীমান্তবর্তী সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে 'অপারেশন পিস স্প্রিং' নামে সামরিক অভিযান শুরু করে তুরস্ক। এ অভিযানের মাধ্যমে অঞ্চলটি থেকে আইএস জঙ্গি ও কুর্দি বিদ্রোহীদের বিতাড়িত করে সেখানে একটি 'সেফ জোন' বা নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করতে আগ্রহী আঙ্কারা। এই সেফ জোনে দীর্ঘদিন ধরে তুরস্কে বসবাসরত সিরীয় শরণার্থীদের বসবাসের ব্যবস্থা করতে চায় তারা। তুর্কি অভিযানের আগে সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে অভিযান শুরুর পর তুরস্কের দুইজন মন্ত্রী এবং তিনজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। সমালোচকদের মতে, গত সপ্তাহে ওই অঞ্চল থেকে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সেনা সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেয়ার মধ্য দিয়ে তুরস্ককে হামলার 'সবুজ সংকেত' দিয়েছে। এরপর থেকেই সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনকে। স্টিভ মুচিন বলেন, 'তারা অস্ত্রবিরতিতে সম্মত না হলে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। আমি আশা করছি, তারা এখন নিষেধাজ্ঞাকে গুরুত্ব দিয়ে অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হবে।' তবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়ে্যপ এরদোয়ান বলে দিয়েছেন, 'সিরিয়ার তুর্কি সীমান্ত এলাকায় সামরিক অভিযান বন্ধ করতে অনেক চাপ এসেছিল। কিন্তু আঙ্কারা নিষেধাজ্ঞার ভয়ে উদ্বিগ্ন নয়। বীরেরা এসবের পরোয়া করে না।' ট্রাম্পের চিঠি আবর্জনার স্তূপে ফেললেন এরদোয়ান! এদিকে, সিরিয়া ইসু্যতে রিসেপ তাইয়ে্যপ এরদোয়ানকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন, সেই চিঠি আবর্জনার স্তূপে ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হওয়ার পর দেশটির উত্তরাঞ্চলে কুর্দিদের ওপর তুরস্কের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ অক্টোবর হোয়াইট হাউস চিঠিটি পাঠায়। এরদোয়ানকে পাঠানো ওই চিঠিতে ট্রাম্প লিখেছেন, 'কঠোর হবেন না। বোকা হবেন না।' তুরস্কের প্রেসিডেন্টের দপ্তর জানায়, এরদোয়ান চিঠিটি কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। যেদিন চিঠিটি আসে, সেদিন কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) বিরুদ্ধে আন্তঃসীমান্ত হামলা শুরু করে। ট্রাম্প ওই চিঠিতে এরদোয়ানের উদ্দেশে লিখেছেন, 'চলুন আমরা একটা ভালো চুক্তির জন্য কাজ করি। হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করার জন্য আপনি যেমন দায়ী হতে চান না, তেমনি আমিও তুরস্কের অর্থনীতি ধ্বংস করে দেয়ার জন্য দায়ী হতে চাই না। কিন্তু আমি তুরস্কের অর্থনীতি ধ্বংস করব।' এরদোয়ানকে এমন হুঁশিয়ারি দেয়ার পর ট্রাম্প আরও লিখেছেন, 'আপনি যদি সঠিক ও মানবিক উপায়ে এটা করেন, তাহলে ইতিহাসও আপনাকে সেভাবে স্মরণ করবে। যদি আপনি ভালোভাবে তা না করেন, তাহলে ইতিহাস আপনাকে চিরদিনের জন্য শয়তান হিসেবে বিবেচনা করবে।' তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের দপ্তর জানায়, 'প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এমন চিঠি দেখার পরপরই চরম উত্তেজিত হয়ে যান এরদোয়ান। তিনি চিঠিটি পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা পাশে থাকা আবর্জনার স্তূপে ছুড়ে মারেন।'