অযোধ্যা মামলায় নতুন মোড়

জমির দাবি ছাড়তে রাজি নয় মুসলমানদের একাংশ

প্রকাশ | ১৯ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
উগ্র হিন্দুরা ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙচুর করে
যাযাদি ডেস্ক ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণা এখনো বাকি। তার আগেই অন্য মোড় নিল উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যার রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলা। জমির দাবি ছাড়ার প্রস্তাবে একেবারেই রাজি নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে অযোধ্যা মামলায় মুসলমান পক্ষের একাংশ। তাদের দাবি, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড যে প্রস্তাব দিয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে, তাতে হতবাক তারা। এই মামলার অন্যতম পক্ষ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড বিতর্কিত ওই জমিতে নিজেদের 'দাবি ছেড়ে দিতে প্রস্তুত' বলে জানিয়েছে। আদালতে জমা দেয়া মধ্যস্থতাকারী কমিটির এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে। সংবাদসূত্র : এবিপি নিউজ, এনডিটিভি মুসলমান ওই পক্ষের প্রতিনিধিদের দাবি, শীর্ষ আদালত নিযুক্ত মধ্যস্থতাকারী কমিটির সঙ্গে তাদের কোনো সমঝোতাই হয়নি। যদি হয়ে থাকে, তা একমাত্র সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের সঙ্গে। কিন্তু শর্তসাপেক্ষে মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বোর্ডের কোনো সমঝোতা হলেও, তা সংবাদমাধ্যমে কীভাবে ফাঁস হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা। ইচ্ছাকৃতভাবেই বিষয়টি ফাঁস করা হয়ে থাকতে পারে বলে দাবি তাদের। এর আগে, বুধবার বন্ধ খামে একটি প্রতিবেদন জমা দেয় সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত মধ্যস্থতা কমিটি। ওই প্রতিবেদনে বিতর্কিত জমির দাবি ছাড়তে রাজি হয় সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড। কিন্তু শুক্রবার বিবৃতি দিয়ে সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেন অযোধ্যা মামলায় মুসলমান পক্ষের আবেদনকারী এম সিদ্দিকের আইনজীবী এজাজ মকবুল। তিনি বলেন, 'সংবাদ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া প্রতিবেদনে সমঝোতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই ধরনের কোনো প্রস্তাবে আমরা রাজি নই। যে পদ্ধতিতে মধ্যস্থতা হয়েছে এবং মীমাংসার মাধ্যমে জমির দাবি ছেড়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে, তাতেও একমত নই আমরা।' এজাজ মকবুলের দাবি, 'কোনোরকম সমঝোতায় যেতে রাজি নয় বলে মামলায় প্রধান হিন্দুপক্ষ আগেই জানিয়েছিল। মুসলমান আবেদনকারীরাও মীমাংসায় রাজি হননি। একমাত্র ব্যতিক্রম সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড। এমন পরিস্থিতিতে কোনোরকম সমঝোতা প্রস্তাব গ্রহণ করা সম্ভব নয়।' সমঝোতার খবর ইচ্ছাকৃত ভাবে সংবাদ মাধ্যমে ফাঁস করা হয়েছে বলেও দাবি করেন এজাজ মকবুল। তার কথায়, 'উত্তরপ্রদেশের সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড জমির দাবি ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে। সমঝোতার এই বিষয়টি জানাজানি হলো কীভাবে? কারণ সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি চলাকালীনই সমঝোতা প্রক্রিয়া শুরু হয়ে থাকবে।' মধ্যস্থতাকারী কমিটির প্রতিবেদনে যেসব প্রস্তাব ও শর্ত আছে, রায়ে তার প্রতিফলনই দেখা যাবে বলেও অনেকে ধারণা করছেন। এ ব্যাপারে জাফর ফারুকি এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য না করলেও বৃহস্পতিবার একটি সংবাদমাধ্যমে বোর্ডের আইনজীবী শহিদ রিজভি জানান, মধ্যস্থতাকারীদের নিজেদের মতামত জানিয়েছে বোর্ড। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। তাই এখনই এ নিয়ে মন্তব্য করা উচিত হবে না। তবে মধ্যস্থতাকারী কমিটির প্রতিদেনে হিন্দু-মুসলমান দুই পক্ষই খুশি হবে বলে দাবি করেন তিনি। কিন্তু মামলায় মুসলমান পক্ষের একাংশ ওয়াকফ বোর্ডের সঙ্গে একমত না হওয়ায়, অযোধ্যা মামলার নিষ্পত্তি আদৌ সম্ভব কি-না, নতুন করে এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।