জনপ্রিয় বিরোধী নেতার অভাবেই মোদি জয়ী :অভিজিৎ

সরকারি নীতির ফলে নির্বাচনী জয় হয়, এমন তত্ত্ব ভুল

প্রকাশ | ২১ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়
যাযাদি ডেস্ক নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ভারতে জনপ্রিয় নেতার অভাবের কারণেই নরেন্দ্র মোদি জয়ী হয়েছেন। যখন ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতাদের ক্রমাগত আক্রমণের মুখে পড়তে হচ্ছে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎকে, তখনই এই কথা বললেন তিনি। সংবাদসূত্র : এবিপি নিউজ, এনডিটিভি, ইনডিয়ান এক্সপ্রেস মোদির দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা নিয়ে অর্থনীতিতে সদ্য নোবেলজয়ী অভিজিৎ বলেন, 'আমার মনে হয়, যেকোনো সরকার ১০০টা জিনিস করে, আর মানুষকে তার পরিপ্রেক্ষিতেই ভোট দিতে হয়। মানুষ নরেন্দ্র মোদিকে ভোট দিয়েছে, কারণ আর কোনো জনপ্রিয় নেতা ভোটারদের কাছে ছিলেন না। মানুষের কাছে আর কোনো নেতা ভোটের যোগ্য ছিলেন না। দেশটির একটি বেসরকারি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অভিজিৎ বুঝিয়ে দেন, সরকারি নীতির ফলে নির্বাচনী জয় হয়, এমন তত্ত্ব মানতে নারাজ তিনি। তবে নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তার কৃতিত্ব যে তাকে দিতেই হবে, তাও নিঃসংকোচে বলেছেন এই নোবেলজয়ী। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, মোদির জয় মানেই এটা ঠিক নয় যে, তার নেয়া সব সিদ্ধান্তই সঠিক। গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রস্তাবিত 'ন্যায়' প্রকল্পের অন্যতম রূপকার ছিলেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'ন্যায় মূলত একটি ভাবধারা। ন্যায়তে শুধু স্কিম ডিজাইন আমি করেছি।' সাক্ষাৎকারে দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সমালোচনা করতেও পিছপা হননি অভিজিৎ। তিনি বলেন, দেশে বিরোধী দল হিসেবে কংগ্রেস অনেকটাই ক্ষীণ। তবে মূল আশঙ্কার বিষয়টা যে এখানেই, তা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন নোবেলজয়ী। অভিজিৎ বলেন, জোরালো বিরোধী শক্তি এই মুহূর্তে ভারতে প্রয়োজন। নাহলে গণতন্ত্রের জন্য তা ভালো হবে না। অমর্ত্য সেনের পর নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে নোংরা খেলায় মেতেছে বিজেপি। অভিজিৎ বাঙালি না মারাঠি, সেই বিষয়ে অকারণ প্রশ্ন তুলেছেন ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়। অন্যদিকে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বুদ্ধি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় রেল ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযুষ গয়াল। তথাগত রায় টুইট করে অভিজিতের জন্ম কলকাতায় না মহারাষ্ট্রে সেই প্রশ্ন তুলেছেন। পাশাপাশি অভিজিৎ কেন নামের মাঝে বিনায়ক ব্যবহার করেন, সেই প্রশ্নও করেন তিনি। নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদকে নিয়ে প্রশ্ন তোলায় অনেক ব্যঙ্গর মুখে পড়তে হয় তাকে। আর দেশটির কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও রেলমন্ত্রী পীযুষ গয়াল আরও একধাপ এগিয়ে সোজা অভিজিতের বুদ্ধি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, অভিজিৎ কংগ্রেসের ন্যায় প্রকল্পের অনেক গুণগান করেছিলেন। কিন্তু দেশবাসী সেই ন্যায় প্রকল্পকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, তার বোধবুদ্ধি কোন্‌ স্তরের। বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের এমন মন্তব্য নিয়ে এরই মধ্যেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে। আর এক নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গেও বরাবর বিরোধ বিজেপির। আবার অভিজিৎও মোদি সরকারের নীতি-নিয়মের ঘোর সমালোচক বলে পরিচিত। তাই ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে নিয়ে চযড়ঃড় ঈধঢ়ঃরড়হ কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে বলে দাবি বামসহ একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতাদের।