তুর্কি-মার্কিন সমঝোতা

প্রতিশ্রম্নতি ভঙ্গ হলে ফের অভিযান :এরদোয়ান

সিরিয়া নিয়ে আজ পুতিনের সঙ্গে বৈঠক তুর্কি প্রেসিডেন্টের সিরিয়া পুরোপুরি ছেড়ে না যাওয়ার ঘোষণা ট্রাম্পের

প্রকাশ | ২৩ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক তুর্কি-মার্কিন সমঝোতা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রতিশ্রম্নতি না রাখলে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ফের অভিযান শুরু হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়ে্যপ এরদোয়ান। সীমান্ত এলাকা থেকে কুর্দি গেরিলাদের সরে যাওয়ার শর্তে ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় গত সপ্তাহে 'অপারেশন পিস স্প্রিংয়ে' পাঁচ দিনের বিরতি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল আঙ্কারা। মঙ্গলবার এই যুদ্ধবিরতি শেষ হয়। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, এএফপি অনলাইন রাশিয়া সফরে যাওয়ার আগে মঙ্গলবার তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, 'সিরিয়ার সীমান্ত এলাকায় তুরস্ক যে 'নিরাপদ অঞ্চল' গড়তে চায়, যুদ্ধবিরতির মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র সেখান থেকে কুর্দিদের সরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিল; ওয়াশিংটন তা না রাখলে আঙ্কারা 'দৃঢ় সংকল্পসহ' ফের ওই অভিযান শুরু করবে।' তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে তৎপরতা চালানো কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে ওয়াইপিজি গেরিলাদের সংযোগ রয়েছে সন্দেহে আঙ্কারা সিরীয় এই কুর্দিদেরও 'সন্ত্রাসী' হিসেবে বিবেচনা করে আসছে। যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে তারা যুক্তরাষ্ট্রকে সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চল থেকে ওয়াইপিজি গেরিলাদের নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সকে (এসডিএফ) সরিয়ে নিতে বলেছিল। রাশিয়া সফরে আজ এরদোয়ান দেশটির প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিনের সঙ্গে সিরিয়ার সাংবিধানিক কমিটি কী করে সত্যিকারের অগ্রগতি অর্জন করতে পারে, তা নিয়েও কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন এরদোয়ান। অক্টোবরের শেষদিকে সিরিয়ান এই সাংবিধানিক কমিটির বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। এর আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়ে্যপ এরদোয়ানের দাবি মেনে তুর্কি-মার্কিন সমঝোতায় করা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী সিরিয়ার সীমান্ত শহর রাস আল-আইন থেকে যোদ্ধাদের প্রত্যাহার করে নেয় সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ)। তারা জানিয়েছে, তুর্কি বাহিনী ও এর মিত্রদের কাছে শহরটির নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অঞ্চলটি থেকে নিজ দেশের সেনাদের সরিয়ে নেয়ার পর থেকেই শহরটিতে অস্থিরতা বিরাজ করছিল। তুর্কি-সিরিয়া সীমান্তের ২০ মাইল এলাকা নিয়ে একটি নিরাপদ অঞ্চল তৈরিতে আগ্রহী তুরস্ক। ফলে দেশটি চাইছে, রাস আল-আইনের মতো সীমান্তবর্তী অন্য শহরগুলোও ছেড়ে যাক বিদ্রোহীরা। তবে কোবানে ও আল-দারবাসিয়াহসহ তুরস্কের প্রত্যাশিত নিরাপদ অঞ্চলের অন্যান্য স্থানে কুর্দি বিদ্রোহীরা এখনো রয়ে গেছে। হঠাৎ করে এই মিত্রদের ছেড়ে আসার সিদ্ধান্তের কারণে ট্রাম্প দেশ-বিদেশে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন। এই পরিস্থিতিতে পূর্ব সিরিয়ার ইরাক সীমান্তে প্রায় ২০০ মার্কিন সেনা রেখে দেয়ার একটি পরিকল্পনায় সমর্থন জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য অনুরোধে করা হলে হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি। উলেস্নখ্য, গত ৯ অক্টোবর তুর্কি সীমান্তবর্তী সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় এলাকা থেকে সিরিয়ার কুর্দি বিদ্রোহীদের উৎখাতে অভিযান শুরু করে তুরস্ক। পরে ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় আঙ্কারা। সিরিয়া পুরোপুরি ছেড়ে না যাওয়ার ঘোষণা ট্রাম্পের এদিকে, সিরিয়ার তুরস্ক সীমান্ত থেকে নিজ দেশের সব সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার পর এবার দেশটি পুরোপুরি ছেড়ে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নিজ প্রশাসনের এমন অবস্থানের কথা জানান তিনি। ট্রাম্প বলেন, 'জর্ডানের দক্ষিণ সীমান্তে একটি গ্যারিসন স্থাপন এবং দেশের অন্য কোথাও তেলের সুরক্ষা নিশ্চিতে সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বল্প মাত্রার সামরিক উপস্থিতি বজায় থাকবে। সীমিত সংখ্যক সেনাসদস্য দেশটিতে অবস্থান করবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, 'তেলের সুরক্ষার বাইরে সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতির আর কোনো প্রয়োজন রয়েছে বলে আমি মনে করি না। আমাদের তেল সুরক্ষিত রাখা দরকার। ইসরাইল ও জর্ডানের অনুরোধে দক্ষিণ সিরিয়াতেও সীমিত সংখ্যক মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বজায় থাকবে।' এর আগে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে; এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার। তিনি বলেন, 'তেলের খনিগুলোর নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে কিছু সেনা উত্তর সিরিয়ায় রেখে দেয়া হতে পারে। সেখানে কুর্দি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা তেল ক্ষেত্রগুলো যাতে আইএস বা অন্য কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর দখলে চলে না যায়, সে বিষয়টি তদারকির জন্য ওই অঞ্চলে ২০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন রাখা হবে।