উদ্ধার অভিযানের মধ্যেই লম্বোকে ফের শক্তিশালী ভ‚মিকম্প

প্রকাশ | ১০ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ধ্বংসস্তূপ থেকে একজনকে উদ্ধার করা হচ্ছে
যাযাদি ডেস্ক ইন্দোনেশিয়ায় ভ‚মিকম্প-বিধ্বস্ত লম্বোক দ্বীপ বৃহস্পতিবার আবারও দুলে উঠলো। উদ্ধার অভিযান চলার মধ্যেই ফের শক্তিশালী ভ‚মিকম্পে থমকে গেছে দেশটির পযর্টনপ্রিয় এই দ্বীপ। বৃহস্পতিবারের ৬ দশমিক ২ মাত্রার এই ভ‚মিকম্পে নতুন করে বেশ কিছু ভবন ধসে পড়েছে বলে প্রত্যক্ষদশীর্রা জানিয়েছেন। গত দুই সপ্তাহ মধ্যে পরপর আঘাত হানা ভ‚মিকম্পে লম্বোকে এখন পযর্ন্ত ৩৪৭ জন মারা গেছেন। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টাসর্ গত রোববারের ভ‚মিকম্পে আহত হয়েছেন এক হাজার ৪৪৭ জন। ভ‚মিকম্পের তাÐবে ঘরবাড়ি হারিয়েছেন এক লাখ ৬৫ হাজার তিনজন। ভ‚মিকম্পে দ্বীপের প্রায় ৮০ ভাগ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রোববারের ৬ দশমিক ৯ মাত্রার ভ‚মিকম্পে লÐভÐ হওয়ার পর থেকে একটার পর একটা পরাঘাতে দ্বীপটি বারবার কেঁপে উঠছে বলে জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া ও ভ‚-পদাথির্বদ্যা সংস্থা (বিএমকেজি)। কতৃর্পক্ষ জানিয়েছে, রোববারের পর দ্বীপটিতে ৩৫০ বারের মতো পরাঘাত বা আফটার শক অনুভ‚ত হয়েছে। দ্বীপটির উত্তরাঞ্চলে অবস্থানরত এক প্রত্যক্ষদশীর্ সাংবাদিক জানিয়েছেন, সবের্শষ এই ভ‚মিকম্পের পর আতঙ্কিত লোকজন দৌড়ে রাস্তায় বের হয়ে আসে এবং কিছু ভবন ধসে পড়ে। টুইটারে ইন্দোনেশিয়ার দুযোর্গ প্রশমণ সংস্থার (বিএনপিবি) মুখপাত্র সুতোপো পুবোর্ নুগ্রোহো বলেন, ‘৬ দশমিক ২ মাত্রার ভ‚মিকম্পের শক্তিশালী কম্পন অনুভব করার পর লোকজন দৌড়ে ঘরে ছেড়ে বেরিয়ে আসে। লোকজন এখনো আতঙ্কিত হয়ে আছে। এই ভ‚মিকম্পে আরও কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’ এই ভ‚মিকম্পটির উপকেন্দ্র ভ‚মিতে হওয়ায় এতে সুনামির কোনো ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন দেশটির কমর্কতার্রা। ভ‚মিকম্পটির উৎপত্তি ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে এবং এর মাত্রা ৫ দশমিক ৯ বলে রেকডর্ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্তি¡ক জরিপ সংস্থা (ইউএসএজিএস) । রোববারের ভ‚মিকম্পে মৃতের সংখ্যা বুধবার পযর্ন্ত ৩১৯ জন ছিল বলে জানিয়েছেন বিএনপিবির কমর্কতার্রা। এ সত্তে¡ও মৃতের সংখ্যা ৩৪৭ জন বলে দাবি করেছেন দেশটির কিছু কমর্কতার্। সুতোপো মৃতের সবের্শষ সংখ্যা জানাননি। শুধু বলেছেন, ‘মৃতের সংখ্যার বড় ধরনের বৃদ্ধি ঘটবে।’ এদিকে, লম্বোকে মানবিক সংকটও প্রকট হচ্ছে। গৃহহীন হয়ে পড়া কয়েক হাজার লোকের পরিষ্কার পানি, খাদ্য, ওষুধ ও আশ্রয় দরকার। রোববারের ভ‚মিকম্পের ফলে লম্বোকের উত্তর অংশের গ্রামীণ এলাকা বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন কমর্কতার্রা। তবে এরই মধ্যে দ্বীপটির অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়মিত হয়েছে। ভ‚মিকম্পে সেতু ধসে পড়ায় ও রাস্তা ধ্বংস হওয়ায় কিছু দুগর্ত গ্রামে ত্রাণকমীের্দর পেঁৗছানো কঠিন হয়ে পড়েছে। রোববারের পর থেকেই ফের ভ‚মিকম্পের আশঙ্কায় থাকা কয়েক হাজার পযর্টক দ্বীপটি ছেড়ে যেতে শুরু করেন। তাদের অনেক এয়ারলাইন্সগুলোর ব্যবস্থা করা অতিরিক্ত ফ্লাইটে করে দ্বীপটি ছেড়েছেন, অন্যরা ফেরিতে করে পাশের দ্বীপ বালিতে চলে গেছেন। ভ‚মিকম্পপ্রবণ অঞ্চল ‘রিং অব ফায়ার লাইনে’ অবস্থানের কারণে ইন্দোনেশিয়ায় প্রায়ই ভ‚মিকম্প হয়। এ ছাড়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতপ্রবণ অঞ্চলের মধ্যে অবস্থান হওয়ায় এখানে ভ‚মিকম্পের ঘটনা বেশি। এই অঞ্চলে পৃথিবীর অধেের্করও বেশি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির অবস্থান রয়েছে। ২০১৬ সালে সুমাত্রা দ্বীপের উত্তর-পূবার্ঞ্চলীয় এলাকায় সাড়ে ছয় মাত্রার এক ভ‚মিকম্পের কারণে বেশ কয়েকজনের প্রাণহানি ছাড়াও বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ।