ডোনাল্ড টুস্কের ঘোষণা

৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ব্রেক্সিট পেছাতে সম্মত ইইউ

পার্লামেন্টে চুক্তি অনুমোদন হয়ে গেলে এ সময়ের আগেও ইইউ ত্যাগ করতে পারবে : টুস্ক তবে নির্ধারিত সময় থেকে ব্রেক্সিট পিছিয়ে না দিতে সবসময় অটল ছিলেন বরিস জনসন

প্রকাশ | ২৯ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক
যুক্তরাজ্যের বহুল আলোচিত ব্রেক্সিট আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পিছিয়ে দিতে সম্মত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউ'য়ের সদস্যভুক্ত ২৭টি দেশ এ সময়সীমায় রাজি হয়েছে বলে সোমবার এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক। যুক্তরাজ্য ইইউ থেকে বিচ্ছেদের পর এই 'বস্নকে' (ইইউতে) রয়ে যাবে ওই ২৭টি দেশই। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স ডোনাল্ড টুস্ক বলেন, 'ইইউ সময় শিথিল রেখেই এই সময়সীমা নির্ধারণ করেছে।' অর্থাৎ, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন হয়ে গেলে যুক্তরাজ্য এ সময়সীমার আগেও ইইউ ত্যাগ করতে পারে। তাই এ সময় বাড়ানোকে টুস্ক 'ফ্লেক্সটেনশন' (ফ্লেক্সিবল এক্সটেনশন) আখ্যা দেন। গত শুক্রবারেই ইইউয়ের ব্রেক্সিট পেছানোর সিদ্ধান্ত জানানোর কথা থাকলেও ফ্রান্স সময় বেশি বাড়াতে আপত্তি করার কারণে সিদ্ধান্ত হতে দেরি হয়। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এমপিরা প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ১২ ডিসেম্বরে আগাম সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তাবের ওপর ভোট করার প্রস্তুতি নেয়ার সময়ে ডোনাল্ড টুস্ক এ ঘোষণা দিলেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জনসনের পাশাপাশি এসএনপি এবং লিব ডেম দলও ৯ ডিসেম্বরে নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে। পার্লামেন্ট জনসনের প্রস্তাব অনুমোদন করলে যুক্তরাজ্য পরের মাসের ১ তারিখে, ১ ডিসেম্বর কিংবা ১ জানুয়ারিতেও ইইউ ত্যাগ করতে পারে। ব্রেক্সিটের জন্য আগের নির্ধারিত সময়সীমা ৩১ অক্টোবর থেকে পিছিয়ে না দিতে সব সময় অটল ছিলেন জনসন। কিন্তু গত মাসে পার্লামেন্টে বিরোধীদের পাস করা একটি আইন অনুযায়ী, ব্রেক্সিটের চূড়ান্ত সময়সীমা ৩১ জানুয়ারি (২০২০) পর্যন্ত পিছিয়ে দেয়ার অনুরোধ করে ইইউয়ের কাছে চিঠি পাঠাতে বাধ্য হন তিনি। ইইউ এই অনুরোধই রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডোনাল্ড টুস্ক। ব্রেক্সিট ইসু্যতে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে টালমাটাল অবস্থা তৈরি হয়েছে। ব্রেক্সিট চুক্তি কার্যকরে ব্যর্থ হওয়ার পর চলতি বছর দেশটির প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে পদত্যাগ করেন। এরপর নতুন করে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব আসে বরিস জনসনের কাঁধে। পূর্বসূরিদের মতো বরিস জনসনও এই চুক্তি কার্যকরে বারবার হোঁচট খাচ্ছেন। চলতি মাসের শুরুর দিকে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে বরিসের একটি পরিকল্পনা প্রস্তাব পার্লামেন্টে আটকে যায়। ওই প্রস্তাব আটকে যাওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে ব্রেক্সিট কার্যকরে সময় বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে স্বাক্ষরবিহীন চিঠি লেখেন বরিস। সে সময় চুক্তিবিহীন বা 'নো-ডিল ব্রেক্সিট'র প্রস্তুতির দায়িত্বে থাকা ব্রিটিশ মন্ত্রী মাইকেল গোভ বলেছিলেন, 'আমরা ৩১ অক্টোবরেই ইইউ ছাড়ছি। এমনটি করার সামর্থ্য ও যোগ্যতা আমাদের রয়েছে।' প্রধানমন্ত্রীর দেরি করার অনুরোধের চিঠির বিষয়ে গোভ বলেন, 'পার্লামেন্টের আবশ্যকতার জন্য চিঠিটি পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পার্লামেন্ট প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারেনি, সরকারের নীতি বা দৃঢ় প্রতিজ্ঞা পাল্টাতে পারে না।' ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্কের কাছে বরিস জনসন মোট তিনটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। এর মধ্যে একটি 'বেন অ্যাক্ট' নামের সেই আইনের ফটোকপি, যা তাকে চিঠি লিখতে বাধ্য করেছে। দ্বিতীয়টি, ব্রিটিশ সরকার শুধু এ আইন অনুযায়ী কাজ করছে, এমনটি জানিয়ে ইইউতে নিযুক্ত ব্রিটিশ দূতের পাঠানো একটি নোট এবং তৃতীয় আরেকটি চিঠি; যেটিতে বরিস জানিয়েছেন, তিনি সময় আর বাড়াতে চান না।