বিক্ষোভে নিহত ১৪, আহত ৮৬৫

গুলিতে রক্তাক্ত ইরাকের কারবালা

সরকারি বাহিনীর হাতে কেউ মারা যায়নি : কর্তৃপক্ষ সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৫০

প্রকাশ | ৩০ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
কাঁদানে গ্যাসের 'ক্যানিস্টার' হাতে এক বিক্ষোভকারী
যাযাদি ডেস্ক ইরাকের পবিত্র নগরী কারবালায় সোমবার রাতভর সরকারি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১৪ জন সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী নিহত ও ৮৬৫ জন আহত হয়েছেন। কারবালার এ ঘটনার পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর নাসিরিয়ায় আহত আরও তিন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে বলে মেডিকেল ও নিরাপত্তা সূত্রগুলো মঙ্গলবার নিশ্চিত করেছে। এ ঘটনার পর রাজধানী বাগদাদে কারফিউ জারি করা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের হাতে কোনো বিক্ষোভকারীর মৃতু্য হয়নি। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, বিবিসি প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদির সরকার ও রাজনৈতিক অভিজাতদের বিরুদ্ধে চলতি মাসে দ্বিতীয়বারের মতো শুরু হওয়া প্রতিবাদে সোমবার ইরাকিরা টানা চতুর্থ দিনের মতো রাস্তায় নেমে আসে। ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও জনবিচ্ছিন্নতার অভিযোগ এনেছে প্রতিবাদকারীরা। সরকারবিরোধী এ বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে নিহতের সংখ্যা এখন অন্ততপক্ষে ২৫০ জনে দাঁড়িয়েছে। ২০০৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত টানা বিদেশি দখলদারিত্ব, গৃহযুদ্ধ ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে যাওয়া ইরাক তুলনামূলকভাবে গত দুই বছর ধরে কিছুটা স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু ক্ষমতাসীন ও রাজনৈতিক অভিজাতদের সীমাহীন দুর্নীতিতে সৃষ্ট অসন্তোষে দেশটিতে ফের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মাহদির হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও এদিন হাজার হাজার প্রতিবাদকারী রাজধানী বাগদাদের রাস্তায় নেমে আসে। স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। বাগদাদের দুটি এলাকায় সেনাদের স্কুল শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করতে দেখা যায়। ইরাকের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ ঘটনার নিন্দা করে ওই সেনারা কোনোভাবেই ইরাকি সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিত্ব করে না বলে মন্তব্য করা হয়েছে। তবে ওই ঘটনায় জড়িত সেনাদের শাস্তি হবে কি-না, বিবৃতিতে তা জানানো হয়নি। এর আগে দেশটির পার্লামেন্টের সবচেয়ে বড় জোটের সমর্থক জনপ্রিয় শিয়া ধর্মীয় নেতা মোকতাদা আল-সদর আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মাহদির নড়বড়ে জোট সরকারকে ক্ষমতায় আনতে তিনিই সাহায্য করেছিলেন। কর্মসংস্থান সংকট, নিম্নমানের সরকারি সেবা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে অক্টোবরের শুরু থেকে বাগদাদের রাজপথে নামেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। পরে এই বিক্ষোভ আরও কয়েকটি শহরে ছড়িয়ে পড়ে। এক বছর আগে প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদি ক্ষমতা গ্রহণের পর এটাই দেশজুড়ে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। কারবালার স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান দাবি করেছেন, বিক্ষোভের ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর ৬৬ সদস্যসহ ১২২ জন আহত হয়েছে। আর কারবালার পুলিশ প্রধান এক বিবৃতিতে কোনও বিক্ষোভকারী নিহত হওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।