ভারতের কেন্দ্রশাসিত জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের নতুন মানচিত্র

প্রকাশ | ০৪ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের নতুন মানচিত্র
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশটির নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের বিস্তৃত সীমানা চিহ্নিত করে একটি নির্দেশনা জারি করেছে। শনিবার প্রকাশিত ওই নির্দেশনার ফলে ভারতের একটি নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র সৃষ্টি হয়েছে বলে দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছে। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ জম্মু-কাশ্মীরকে ভেঙে দুটি আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর এবং সেখানে দুইজন লেফটেন্যান্ট গভর্নর নিয়োগ দেয়ার দুইদিন পর এই নির্দেশনা দিল দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সাবেক ব্যয় সচিব গিরিশচন্দ্র মুর্মু জম্মু-কাশ্মীরের নতুন লেফটেন্যান্ট গভর্নর হয়েছেন। আর লাদাখের দায়িত্ব পেয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের সাবেক প্রতিরক্ষা সচিব রাধাকৃষ্ণ মাথুর। শনিবারের নির্দেশনায় কারগিল ও লেহ্‌কে লাদাখের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ১৯৪৭ সালের মানচিত্রের বাকি অংশ থাকছে কাশ্মীরে। নির্দেশনায় ৭২ বছর আগে যে ১৪টি জেলা নিয়ে জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যটি গঠিত হয়েছিল, সেগুলোর নামও উলেস্নখ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- কাঠুয়া, জম্মু, উধমপুর, রিয়াসি, অনন্তনাগ, বারমুলস্না, পুঞ্চ, মিরপুর, মুজাফফরাবাদ, লেহ্‌ অ্যান্ড লাদাখ, গিলগিট, গিলগিট ওয়াজারাত, চিলহাস এবং ট্রাইবাল টেরিটরি। ৫৬০টির বেশি 'প্রিন্সলি স্টেট'কে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার দাবিদার সর্দার বলস্নভভাই প্যাটেলের ১৪৪তম জন্মশতবার্ষিকীতে গত বৃহস্পতিবার জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখে আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রের শাসন শুরু হয়। ভারতের পার্লামেন্ট কাশ্মীরের রাজ্য মর্যাদা কেড়ে নেয়ায় দেশটিতে এখন রাজ্যের সংখ্যা কমে ২৮টিতে দাঁড়িয়েছে। আর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯টি। গত ৫ আগস্ট ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে অঞ্চলটিকে দুই টুকরা করে দেয় দিলিস্ন। ওইদিন সকাল থেকে কার্যত অচলাবস্থার মধ্যে নিমজ্জিত হয় দুনিয়ার ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীর উপত্যকা। পুরো রাজ্য নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়। বিশেষ মর্যাদা তুলে নেয়ার আগে থেকেই কেন্দ্রীয় সরকার সেখানকার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুলস্নাহ, মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুলস্নাহসহ কয়েকশ রাজনীতিককে আটক ও গৃহবন্দি করে। জারি করা হয় কারফিউ। এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে অঞ্চলটিতে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুলসংখ্যক অতিরিক্ত সেনা। গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেখানকার বহু স্বাধীনতাপন্থি ও ভারতপন্থি রাজনৈতিক নেতাকে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আর যুক্তরাষ্ট্র গত দুই মাস ধরে ভারত সরকারের কাশ্মীর নীতির তীব্র সমালোচনা করে আসছে। যদিও মোদি সরকারের দাবি, ওই অঞ্চলে জঙ্গি দমনে তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে। টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার উপত্যকার বিশেষ মর্যাদা তুলে নেয়ার পরই রাজ্যটিকে দ্বিখন্ডিত করার এই প্রক্রিয়া শুরু করে। মোদি সরকার সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫-এ অনুচ্ছেদকে 'সংবেদনশীল' ও বৈষম্যমূলক অ্যাখ্যা দিয়ে বলেছে, কাশ্মীরের এই বিশেষ মর্যাদাই সেখানকার উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সরকার অবশ্য পরে বলেছে, জম্মু-কাশ্মীরকে বিভক্ত করে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার এই সিদ্ধান্ত 'সাময়িক'। কাশ্মীর উপত্যকায় 'স্বাভাবিক অবস্থা' ফিরে এলে 'উপযুক্ত সময়' তাকে ফের রাজ্যের মর্যাদা দেয়া হবে বলেও প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে তারা।