হংকংয়ে বিক্ষোভ

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা বন্ধ স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়

সহিংসতায় উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের

প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক হংকংজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় নিরাপত্তাজনিত শঙ্কায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে শহরটির বেশ কয়েকটি স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়। মঙ্গলবার এসব স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার ঘোষণা এসেছে। এদিন বিস্তৃত পুলিশি তলস্নাশিতে হংকংয়ের রেলস্টেশনগুলোতে দীর্ঘ লাইনের সৃষ্টি হয়। কর্তৃপক্ষ অনেক স্থানে রেল যোগাযোগ স্থগিত কিংবা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে। সংবাদসূত্র : বিবিসি বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়লে চায়নিজ ইউনিভার্সিটি অব হংকংয়েও দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বাধে। কয়েকমাস ধরে চলা সরকারবিরোধী এ সংঘর্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সোমবার পুলিশকে বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা এদিন বেইজিংপন্থি এক সমর্থকের গায়ে আগুনও ধরিয়ে দেয়। মঙ্গলবার হংকংয়ের পুলিশ জানিয়েছে, তারা শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ওই ঘটনাকে 'হত্যাচেষ্টা' হিসেবে বিবেচনা করছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিক্ষোভ ও সহিংসতার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে আশঙ্কায় কয়েক ডজন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক স্কুল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়। অভিভাবকদের মোবাইল ফোনে পাঠানো বার্তায় তারা স্কুল বন্ধের কারণ হিসেবে 'নিরাপত্তা শঙ্কা'কে দেখিয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। শহরটির ইংলিশ স্কুল ফাউন্ডেশন (ইএসএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'শিক্ষার্থী ও কর্মীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় ইএসএফ মঙ্গলবারের সব ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিক্ষার্থীদের এ পরিস্থিতিতে স্কুলে আসা উচিত হবে না।' স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় তাদের প্রতিষ্ঠানের আশপাশে সহিংসতা ও কাঁদানে গ্যাসের কারণে শিক্ষার্থী ও কর্মীদের ক্ষতি হতে পারে শঙ্কায় স্কুল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। হংকংয়ে সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের এদিকে, হংকংয়ে ক্রমবর্ধমান সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা বাহিনী ও বিক্ষোভকারী উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মর্গান ওর্তেগাস এক বিবৃতিতে নিজ দেশের এমন উদ্বেগের কথা জানান। তিনি বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র গভীর উদ্বেগের সঙ্গে হংকং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।' বিবৃতিতে বলা হয়, 'যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষের সহিংসতার নিন্দা জানাচ্ছে। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছে। পুলিশ ও বিক্ষোভকারী সব পক্ষকেই আমরা শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।' সোমবার হংকংয়ে পুলিশ কর্তৃক দুই বিক্ষোভকারীকে গুলিবর্ষণের পর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ বিবৃতি এলো। বিবৃতিতে হংকংয়ের কর্তৃপক্ষকে অঞ্চলটির বাসিন্দা ও বিক্ষোভকারীদের উদ্বেগ প্রশমনে তাদের সঙ্গে সংলাপের আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষের তরফে এমন উদ্যোগ এলে তাতে সাড়া দিতে আন্দোলনকারীদের প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে। এক সময়ের ব্রিটিশ উপনিবেশ হংকং এখন চীনের অংশ। 'এক দেশ, দুই নীতি'র অধীনে কিছু মাত্রায় স্বায়ত্তশাসন ভোগ করছে হংকং। অঞ্চলটির নিজস্ব বিচার ও আইন ব্যবস্থা রয়েছে, যা মূল চীনের চেয়ে ভিন্ন। গত ৯ জুন থেকে সেখানে কথিত অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের আশঙ্কা, ওই বিল অনুমোদন করা হলে ভিন্নমতাবলম্বীদের চীনের কাছে প্রত্যর্পণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। লাখো মানুষের উত্তাল গণবিক্ষোভের মুখে একপর্যায়ে ওই বিলকে 'মৃত' বলে ঘোষণা দেন হংকংয়ের চীনপন্থী শাসক ক্যারি লাম। তবে এতে আশ্বস্ত হতে না পেরে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে সেখানকার নাগরিকরা।