বলিভিয়ায় রাজনৈতিক সংকট

নিজেকে অন্তর্র্বর্তী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা নারী সিনেটরের

রাজনৈতিক শূন্যতা চলতে পারে না, তাই প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিচ্ছি :জেনিন আনেজ এমন ঘোষণার নিন্দা করেছেন মেক্সিকোয় আশ্রয় নেয়া ইভো মোরালেস

প্রকাশ | ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বিরোধীদলীয় সিনেটর জেনিন আনেজ
যাযাদি ডেস্ক নিজেকে বলিভিয়ার অন্তর্র্বর্তী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন দেশটির বিরোধীদলীয় সিনেটর জেনিন আনেজ। মঙ্গলবার দেশটির কংগ্রেসে তিনি এ ঘোষণা দেন। কিন্তু এ সময় মোরালেসের পার্টির সদস্যরা কংগ্রেসের অধিবেশন বর্জন করায় কোরাম সংকটে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার নিয়োগে প্রয়োজনীয় সমর্থন ছিল না বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। সংবাদসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি, আল জাজিরা জেনিন আনেজের ঘোষণার পর বলিভিয়ার রাজপথে বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়েছে। মোরালেসের সমর্থকরা কংগ্রেস ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। গত ২০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে তৈরি হওয়া অসন্তোষের জেরে রোববার সেনাবাহিনীর চাপের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দেন বলিভিয়ার প্রথম আদিবাসী প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস। পরদিন তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়ার কথা জানায় মেক্সিকো। মঙ্গলবার তিনি মেক্সিকোয় পৌঁছালেও রাজনৈতিক লড়াই অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। মোরালেসের পদত্যাগের পর প্রেসিডেন্ট পদের জন্য তার সাংবিধানিক উত্তরাধিকার হতে সক্ষম সবাই পদত্যাগ করেন। ফলে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে কোন প্রক্রিয়ায় কে নতুন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। সংবিধান অনুযায়ী মোরালেসের পদত্যাগ কার্যকর করতে কংগ্রেসের উভয় কক্ষের অনুমোদন পেতে হবে। আইনগতভাবে অন্তর্র্বর্তী প্রেসিডেন্ট হতে হলেও সিনেটের অনুমোদন লাগবে। মঙ্গলবার মোরালেসের অনুগত আইনপ্রণেতারা সিনেটে যোগ না দেয়ায় অধিবেশন বসার জন্য প্রয়োজনীয় কোরাম পূর্ণ হয়নি। এমন প্রেক্ষাপটে সাময়িকভাবে সিনেটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিজেকে অন্তর্র্বর্তী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন সিনেটর জেনিন আনেজ। তিনি বলেন, 'মোরালেসের অনুসারীরা এই প্রক্রিয়ার অংশ হতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে আর বলিভিয়ায় রাজনৈতিক শূন্যতা চলতে পারে না।' আনেজ দাবি করেন, সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার কাতারে ছিলেন তিনি। একইসঙ্গে শিগগিরই নতুন নির্বাচনের প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন বিরোধীদলীয় এই সিনেটর। জেনিন আনেজের ঘোষণার নিন্দা জানিয়ে তাকে অভু্যত্থানের ষড়যন্ত্রকারী ডানপন্থি সিনেটর আখ্যা দিয়েছেন ইভো মোরালেস। এক টুইট বার্তায় তিনি এই ঘোষণাকে ইতিহাসের সবচেয়ে ঘৃণ্য, গোপন অভু্যত্থান বলে মন্তব্য করেন। জেনিন আনেজের ঘোষণার পর রাজধানী লা পাজের মূল কেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টা করে মোরালেসের অনুসারীরা। তবে তাদের আটকে দেয় নিরাপত্তা বাহিনী। আকাশে টহল দিতে দেখা যায় সামরিক বিমান। তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা 'আমরা ভীত নই' স্স্নোগান দিতে থাকে। ৩৫ বছর বয়সি মারিয়া আপাসা বলেন, 'ইভো আমার কাছে ছিলেন বাবার মতো। আমাদের কণ্ঠস্বর ছিল, অধিকার ছিল।' সিনেটর আনেজকে নিয়োগ দেয়ার জন্য ডাকা কংগ্রেসের অধিবেশন বর্জন করে মোরালেসের দল 'মুভমেন্ট ফর সোশালিজম'। প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনেজের নিয়োগকে অবৈধ বলে দাবি করেছে দলটি। আনেজকে 'অভুত্থানের ইন্ধনদাতা ডানপন্থি সিনেটর' অভিহিত করে তার ঘোষণার নিন্দা করেছেন মেক্সিকোয় স্বেচ্ছা নির্বাসনে যাওয়া মোরালেস।