অভিশংসন তদন্ত

শুনানির মধ্যেই সাক্ষীকে ভয় দেখাচ্ছেন ট্রাম্প

ট্রাম্পের এ আচরণকে 'আগ্রাসন' বলে বিবেচনা ডেমোক্রেটদের

প্রকাশ | ১৭ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
ইউক্রেন কেলেঙ্কারি নিয়ে যখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসন তদন্তের শুনানি চলছে, তখন এক সাক্ষীকে টুইটারে রীতিমতো কঠিন বাক্যবাণে জর্জরিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি সাক্ষীকে ভয় দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তদন্ত চলাকালে ট্রাম্পের এমন আচরণকে 'আগ্রাসন' বলে বিবেচনা করছেন ডেমোক্রেটরা। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ওই নির্বাচনে ট্রাম্প তার সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ডেমোক্রেট নেতা জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনোস্কিকে টেলিফোনে চাপ দিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা ওই ফোনালাপের তথ্য হাতে পেয়েছে। যার ভিত্তিতে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ডেমোক্রেট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদ গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন তদন্তের ঘোষণা দেয়। গত কয়েক সপ্তাহের রুদ্ধদ্বার শুনানি প্রক্রিয়া চলার পর বুধবার প্রকাশ্য শুনানি শুরু হয়। শুক্রবার শুনানিতে সাক্ষ্য দেন ইউক্রেনে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মেরি ইউভানোভিচ। কংগ্রেসের সামনে ইউভানোভিচ ইউক্রেনে নিযুক্ত থাকার সময় কীভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এবং কীভাবে ট্রাম্প প্রশাসন হঠাৎ করেই এ বছরের শুরুতে তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেন, তার বর্ণনা দেন। ডেমোক্রেটদের দাবি, তাদের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে নতুন করে দুর্নীতি তদন্ত শুরু করতে ইউক্রেনকে চাপ দেয়ার পথ বাধাহীন করতেই ইউভানোভিচকে ওয়াশিংটন ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেন ইউক্রেনের একটি জ্বালানি কোম্পানির পরিচালনা পর্যদের সদস্য ছিলেন। কংগ্রেসে সাক্ষ্য দেয়ার সময়ই ট্রাম্প একের পর এক টুইটে ইউভানোভিচকে আক্রমণ করেন। টুইটে ট্রাম্প প্রশ্ন করেন, 'মেরি ইউভানোভিচ সব জায়গাতেই দুর্নীতি করেছেন। তিনি সোমালিয়া থেকে শুরু করেন, কীভাবে সেটাকে যেতে দেয়া হলো? পরে তাকে ইউক্রেন পাঠানো হলে যেখানে দ্বিতীয় দফার ফোনালাপে দেশটির প্রেসিডেন্ট আমাকে তার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। নতুন করে কাউকে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেয়ার পূর্ণ ক্ষমতা আমার রয়েছে।' হাউস ইনটেলিজেন্স কমিটির প্রধান ট্রাম্পের ওই টুইটের বিষয়ে ইউভানোভিচের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'প্রেসিডেন্ট যেটা করার চেষ্টা করছেন, আমি সেটা নিয়ে কথা বলতে পারি না। কিন্তু আমার মনে হয় তিনি যেটা করছেন, সেটাকে ভয় দেখানো বলা যায়।' তবে ট্রাম্প তার টুইটকে মোটেও ভয় দেখানোর চেষ্টা বলে মনে করছেন না। হোয়াইট হাউসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'আমার কথা বলার অধিকার আছে। অন্যরা যেভাবে মতপ্রকাশ করে, আমারও তেমন স্বাধীনতা আছে।' চলতি বছরের মে মাসে ইউক্রেনে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের পদ থেকে ইউভানোভিচকে সরিয়ে নেয়া হয়। ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী রুডি গিলিয়ানির বিরাগভাজন হওয়ার কারণেই তাকে চাকরি হারাতে হয়। ইউভানোভিচ বলেন, 'দেশের পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করা ছাড়া আমার আর কোনো লক্ষ্য নেই। বিদেশি ও ব্যক্তিগত স্বার্থ এভাবেও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে অবজ্ঞা করতে পারে?'