অবরুদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়

হংকংয়ে পুলিশ-বিক্ষোভকারী তীব্র সংঘর্ষ

হামলা বন্ধ করা না হলে বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছুড়বে নিরাপত্তা বাহিনী

প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে পুলিশের জলকামান নিক্ষেপ
হংকংয়ের পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতভর গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর তীব্র সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাসটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। সোমবার সকালে আন্দোলনকারীরা অবরুদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়টি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। ওই সময় কয়েকশ' গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারী ব্যারিকেডের পেছন থেকে পুলিশের দিকে পেট্রল বোমা ও তীর ছুড়ে মারে। এতে হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে বড় ধরনের অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার কিছুক্ষণ আগে পুলিশের পক্ষ থেকে বিক্ষোভকারীদের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, পুলিশের ওপর হামলা বন্ধ করা না হলে বিক্ষোভকারীদের দিকে তারা গুলি ছুড়বে। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স এক সময়ের ব্রিটিশ উপনিবেশ হংকং এখন চীনের অংশ। 'এক দেশ, দুই নীতি'র অধীনে কিছু মাত্রায় স্বায়ত্তশাসন ভোগ করছে হংকং। অঞ্চলটির নিজস্ব বিচার ও আইন ব্যবস্থা রয়েছে, যা মূল চীনের চেয়ে ভিন্ন। গত ৯ জুন থেকে সেখানে কথিত অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের আশঙ্কা, ওই বিল অনুমোদন করা হলে ভিন্নমতাবলম্বীদের চীনের কাছে প্রত্যর্পণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। লাখো মানুষের উত্তাল গণবিক্ষোভের মুখে একপর্যায়ে ওই বিলকে 'মৃত' বলে ঘোষণা দেন হংকংয়ের চীনপন্থী শাসক ক্যারি লাম। তবে এতে আশ্বস্ত হতে না পেরে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন সেখানকার নাগরিকরা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে হংকংয়ের স্বাধীনতার দাবি। সর্বশেষ গত ৮ নভেম্বর বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের গুলিতে আহত এক শিক্ষার্থীর মৃতু্যতে অঞ্চলটির গণতন্ত্রপন্থীদের চীনবিরোধী বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। কয়েকদিন ধরেই হংকংয়ের পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয় দখল করে রেখেছে বিক্ষোভকারীরা। রোববার নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে তারা সংঘর্ষে জড়ায়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের টিয়ার গ্যাস ও জল কামানের হামলার জবাব দেয় পেট্রল বোমা, ইট ও তীর নিক্ষেপ করে। এতে এক পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। রাতে সংঘর্ষের সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশের একটি গাড়িও পুড়িয়ে দেয়। রোববার রাতের সংঘর্ষে ৩৮ জন আহত হয়েছেন বলে নগর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। ?পুলিশের জলকামান থেকে ছিটানো পানি গায়ে পড়ার পর কয়েকজন আন্দোলনকারীর শরীর পুড়ে যেতে দেখা যায়। রাসায়নিক ব্যবহারজনিত কারণে এমনটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, সোমবার স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ক্যাম্পাসের দখল নেওয়ার জন্য পুলিশ অগ্রসর হতে শুরু করলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা পুলিশের দিকে পেট্রল বোমা ছুড়লে ক্যাম্পাসে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। কিছুক্ষণ সংঘর্ষ চলার পর পুলিশ পিছু হটে। ক্যাম্পাসের ভেতরে এখনো শত শত বিক্ষোভকারী রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দখল নিয়ে রাখা শিক্ষার্থীদের রোববার সন্ধ্যার মধ্যে ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে বলা হলেও অনেকেই এখনো ক্যাম্পাসে রয়েছেন। পুলিশের মুখপাত্র লুইস লাউ এক ফেসবুক পোস্টে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলেছেন, 'তারা যদি পুলিশের দিকে পেট্রল বোমা, তীরের মতো বিপজ্জনক অস্ত্র ছুড়ে মারা অব্যাহত রাখে; তাহলে গুলিবর্ষণ ছাড়া পুলিশের জন্য আর কোনো পথ খোলা থাকবে না।'