বিক্ষোভ দমনে ইরানে ইন্টারনেট বন্ধ

প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বিক্ষুব্ধরা মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেয়
পেট্রলের মূল্যবৃদ্ধির জেরে ইরানে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর গোটা দেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির সরকার। ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা 'ইরানিয়ান স্টুডেন্টস নিউজ এজেন্সি'র (ইসনা) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে। ইসনার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শনিবার রাত থেকেই ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। আর এই নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি।' সংবাদসূত্র : নিউইয়র্ক, টাইমস, আল-জাজিরা ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্তটি নিয়েছে দেশটির সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ। বিক্ষোভ শুরু হওয়ার রাতেই তারা ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কথা বলে এ নির্দেশ দেয়। বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। টেলিভিশনটির অভিযোগ 'শত্রম্ন গণমাধ্যমগুলো' মিথ্যা সংবাদ এবং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে বিক্ষোভ আরও বড় ও বিস্তৃত করার পাঁয়তারা করছিল। তিনদিনের এই বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত দুজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও অনেকে। কিন্তু ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমগুলো বলছে দেশে এখন শান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন সংবাদ ও ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাজধানী তেহরানসহ আরও বেশকিছু শহরে বিক্ষোভ চলছেই। বাবাক টাগভায়ে নামে দেশটির এক প্রবাসী নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও ইতিহাসবিদ বলেন, 'সম্পূর্ণরূপে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমি (ইরানের) কারোর সঙ্গেই যোগাযোগ করতে পারছি না। মানুষ শুধুমাত্র টেলিফোনের মাধ্যমে দেশের বাইরে (কিছু দেশে) কল করতে পারছে। তাও আবার সেটাতে নজরদারি করা হচ্ছে।' এদিকে, বিক্ষোভ দমনে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়ায় ইরান সরকারের কড়া সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইরানের বিক্ষোভ নিয়ে বলেছেন, 'আমরা ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তাদেরকে (বিক্ষোভকারীদের) কথা বলতে দিতে হবে।' শুক্রবার ইরানের এক সরকারি ঘোষণায় জানানো হয়, দেশটিতে এক লিটার পেট্রলের নিয়মিত মূল্য ১০ হাজার রিয়াল থেকে ১৫ হাজার রিয়াল হয়ে যাবে। এছাড়া মাসে প্রত্যেকটি ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য বরাদ্দ থাকবে ৬০ লিটার জ্বালানি। এছাড়া নির্ধারিত পরিমাণের বাইরে পেট্রল কিনতে চাইলে প্রত্যেক লিটারের দাম পড়বে ৩০ হাজার রিয়াল। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে ইরানের অর্থনীতি জর্জরিত। তাই পেট্রলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির অর্থনৈতিক সমন্বয়বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের পরিষদ। পরিষদটি গঠিত হয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট, বিচার বিভাগের প্রধান ও পার্লামেন্টের স্পিকারের সমন্বয়ে। তাতে সমর্থন দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুলস্নাহ খামেনি।