কংগ্রেসের ওয়াকআউট

গান্ধী পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে হট্টগোল লোকসভায়

হইচই স্স্নোগানের মুখে পার্লামেন্ট ছেড়ে বেরিয়ে যান অমিত শাহও

প্রকাশ | ২০ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
লোকসভায় কংগ্রেসের প্রতিবাদ
তিন দশকের বেশি সময় ধরে থাকা গান্ধী পরিবারের বিশেষ নিরাপত্তা প্রটোকল (এসপিজি) প্রত্যাহারকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় লোকসভায়। শীতকালীন অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে জবাব চান বিরোধীরা। মোদি ছিলেন না, আর প্রবল হইচই স্স্নোগানের মধ্যে পার্লামেন্ট ভবন ছেড়ে বেরিয়ে যান অমিত শাহ। এরপর ওয়াকআউট করে কংগ্রেসও। সংবাদসূত্র : এবিপি নিউজ, এনডিটিভি চলতি মাসেই কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, এখন থেকে আর বিশেষ নিরাপত্তা পাবেন না গান্ধী পরিবারের সদস্যরা। এসপিজির বদলে 'জেড পস্নাস' নিরাপত্তা পাবেন পরিবারের তিন সদস্য সোনিয়া, রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। বিরোধীরা তখনই প্রশ্ন তোলে, যে পরিবারের দু'জন সদস্য সন্ত্রাসীদের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন, কীভাবে সেই পরিবারের নিরাপত্তা কমানোর সিদ্ধান্ত নিল সরকার? এদিন অধিবেশন চলাকালে এই বিষয়টি নিয়েই সরব হয় কংগ্রেস। লোকসভায় চেয়ার ছেড়ে ওঠে দাঁড়িয়ে স্স্নোগান দিতে থাকেন কংগ্রেস সাংসদরা। স্পিকার ওম বিড়লা তাদের বারবার জায়গায় ফিরে যেতে অনুরোধ করলেও তাতে কাজ হয়নি। ওম বিড়লা বলেন, 'নিম্নকক্ষে কৃষকদের বিষয়ে কথা হবে এমনটা পূর্বনির্ধারিত ছিল। এত গুরত্বপূর্ণ বিষয়টি থেকে দৃষ্টি সরানো ঠিক নয়।' এরপরই কংগ্রেস নেতারা ওয়াকআউট করেন। ১৯৮৪ সালে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার পরের বছরই প্রধানমন্ত্রী এবং তার পরিবারের নিরাপত্তার জন্য ক্যাবিনেট সচিবের নির্দেশে বিশেষ বাহিনী 'স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রম্নপ' (এসপিজি) তৈরি হয়। পরে ১৯৮৮ সালের ২ জুন পার্লামেন্টে 'এসপিজি বিল' পেশ করে পাস করানো হয়। বর্তমানে ওই বাহিনীতে রয়েছে তিন হাজারের বেশি সদস্য। নিরাপত্তা নিয়ে তাদের প্রশিক্ষণ বিশ্বের প্রথম সারির বলে ধরা হয়। ১৯৮৪ সালে আততায়ীদের হাতে ইন্দিরা গান্ধী নিহত হওয়ার পরের বছরই ১৯৮৫ সালে বিশেষ প্রশিক্ষিত বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে গঠিত হয় এসপিজি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্ব তুলে দেয়া হয় তাদের হাতে। ১৯৯১ সালে গান্ধী পরিবার থেকেই ফের রাজীব গান্ধী খুন হলে বদল আনা হয় ওই আইনে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং তার পরিবারের সদস্যদের জন্যও এসপিজি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। ঠিক হয়, তিন হাজার সুশৃঙ্খল বাহিনী সারাক্ষণ তাদের নিরাপত্তা দেবে। ২০০৩ সালে অটলবিহারি বাজপেয়ির আমলে আবার ওই আইনে বদল ঘটিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীদের ক্ষেত্রে এসপিজি নিরাপত্তার মেয়াদ ১০ থেকে কমিয়ে এক বছর করা হয়। তবে হামলার আশঙ্কা পর্যালোচনা করে বিশেষ ক্ষেত্রে ছাড় দেয়ার ব্যবস্থাও রাখা রাখা হয় সেই সময়। এর আগে সোমবার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেও উত্তপ্ত ছিল লোকসভা। সেদিন বিরোধীরা একযোগে কাশ্মীরের নেতা ফারুক আবদুলস্নাহর উপস্থিতির দাবি জানানোর পাশাপাশি কাশ্মীর পরিস্থিতির জন্য শাসক দলের সমালোচনা করেন। স্পিকার ওম বিড়লা তখন জানান, ফারুককে গ্রেপ্তারের খবর সেই সময় তার কাছে ছিল না। এখন আছে। তিনি বলেন, রীতি মেনে কাশ্মীরসহ সব প্রসঙ্গ আলোচিত হবে। কিন্তু অধিবেশনের শিষ্টাচার নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।