দুই নেতার ফোনালাপ

ইমরানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ট্রাম্প

আফগানিস্তানে জিম্মিদের মুক্ত করতে অবদান রাখায় উচ্ছ্বসিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট কাশ্মীরের মানুষ ১০০ দিনের বেশি অবরুদ্ধ : পাক প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ২৩ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ইমরান খান ও ডোনাল্ড ট্রাম্প -ফাইল ছবি
চলতি সপ্তাহের শুরুতে আফগানিস্তানে পশ্চিমা জিম্মিদের মুক্ত করতে পাকিস্তানের চেষ্টার জন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই নেতা বৃহস্পতিবার এক ফোনালাপে দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক ইসু্যতে আলাপ করেছেন। আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনতে ও পারস্পরিক স্বার্থকে এগিয়ে নিতে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন তারা। সংবাদসূত্র : ডন, এনডিটিভি একটি চুক্তির অধীন আফগান কারাগার থেকে তিন তালেবান কমান্ডারকে মুক্তির বিনিময়ে মার্কিন কেভিন কিং ও অস্ট্রেলীয় টিমথি উইকসকে ছেড়ে দেয় আফগান তালেবান। এতে শান্তিপ্রক্রিয়া নতুন করে শুরু হওয়ার আশা জাগিয়েছে। একটি ইতিবাচক ফলকে সহজ করে দিতে পাকিস্তানের এই চেষ্টায় দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এদিন ইমরান খান বলেন, 'আফগানিস্তানে পশ্চিমা জিম্মিদের মুক্তি একটি ইতিবাচক ফল। তারা মুক্ত ও নিরাপদ থাকায় পাকিস্তান সন্তুষ্ট।' ফোনালাপে আফগানিস্তানের শান্তিপ্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে পাকিস্তানের প্রতিশ্রম্নতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। এ ছাড়া যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা ও শান্তিপ্রক্রিয়া নতুন করে শুরু করার কথাও বলেন তিনি। কাশ্মীরের মানুষ ১০০ দিনের বেশি অবরুদ্ধ :ইমরান এদিকে, অধিকৃত কাশ্মীরে ৮০ লাখ লোক ১০০ দিনের বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ রয়েছে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে দাবি করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এ সময় কাশ্মীরের চলমান পরিস্থিতি ট্রাম্পকে অবগত করেন তিনি। মধ্যস্থতার প্রস্তাবসহ অব্যাহত অঙ্গীকারের কথা স্বীকার করে ইমরান জোর দেন যে, বিরোধপূর্ণ জম্মু ও কাশ্মীরের শান্তিপূর্ণ সমাধানকে সহজ করতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। এ ছাড়া কাশ্মীর ?নিয়ে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাবের প্রশংসা জানিয়ে ইমরান খান বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে কাশ্মীরে শান্তিপূর্ণ সমাধানে চাপ প্রয়োগ করে যেতে হবে। ট্রাম্পও বারবার মধ্যস্থতার আগ্রহ দেখিয়ে যাচ্ছেন। তবে ভারতের দাবি, কাশ্মীর তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এদিকে, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে দাবি করেছেন, সেখানকার পরিস্থিতি এখন 'পুরোপুরি স্বাভাবিক'। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বলছে, বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর কাশ্মীরে যে ধরনের প্রতিরোধ আর বিক্ষোভের আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তেমন কিছু ঘটেনি। এর কারণ সম্পর্কে বিশ্লেষকরা বলছেন দুই লাখ অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের প্রভাবের কথা। স্বভাবতই অমিত শাহের এই মন্তব্য নিয়ে ভারতে ও বাইরে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। হঠাৎ করে বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার পর কাশ্মীর 'ক্ষোভে ফুঁসছে' বলে বহু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম প্রতিবেদন করেছিল, সেখানে এত তাড়াতাড়ি কীভাবে 'স্বাভাবিকতা' ফিরে আসতে পারে, এটা অনেকের কাছেই একটা বড় প্রশ্ন। আশঙ্কা করা হচ্ছিল, ১০ মিনিটের জন্য কারফিউ তুলে নেয়া হলেই পুরো কাশ্মীর পথে নেমে আসবে। অথচ কারফিউ প্রত্যাহারের প্রায় দুই মাস পরেও সেখানে বড় আকারের তেমন কোনো বিক্ষোভ বা প্রতিবাদ সমাবেশ হয়নি। উলেস্নখ্য, গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে কাশ্মীরজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুলসংখ্যক অতিরিক্ত সেনা। জারি করা হয়েছিল বিধিনিষেধ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেখানকার শত শত নেতাকর্মীকে।