অভিশংসন তদন্তের শুনানি

সাক্ষীরা মিথ্যাচার করছেন :ট্রাম্প

রুডি গিলানি, ডেভিড হোমস এবং সন্ডল্যান্ডের বিচার দাবি মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভুল করলেও তা অভিশংসনের পর্যায়ে নয়; মত রিপাবলিকানদের

প্রকাশ | ২৫ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
যাযাদি ডেস্ক নিজের বিরুদ্ধে চলমান অভিশংসন তদন্তে সাক্ষীদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের সাবেক ব্যক্তিগত আইনজীবী রুডি গিলানিসহ আরও দুইজনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তোলেন তিনি। অভিযুক্ত অন্য দুইজন হচ্ছেন ইউক্রেনে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা ডেভিড হোমস ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত গর্ডন সন্ডল্যান্ড। গত শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তদন্ত কমিটির কাছে মিথ্যাচারের দায়ে তাদের সবার বিচার দাবি করেন ট্রাম্প। সংবাদসূত্র: ফক্স নিউজ, রয়টার্স সম্প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ট্রাম্পের ওই ফোনালাপ ফাঁস হলে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে ঝড় ওঠে। ফাঁস হওয়া ফোনালাপে দেখা যায়, সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে রীতিমতো চাপ দিচ্ছেন ট্রাম্প। ওই ফোনালাপের ভিত্তিতে গোয়েন্দা সংস্থার একজন সদস্য আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করার পর ট্রাম্পের অভিশংসনের দাবি সামনে আসে। তাকে প্রেসিডেন্সি থেকে সরাতে তদন্ত শুরু করে ডেমোক্রেট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদ। তবে এই তদন্তকে ন্যক্কারজনক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তাকে অভিশংসনের ক্ষমতা বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেই। তিনি আরও বলেন, 'তার দৃঢ় বিশ্বাস, পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ডেমোক্রেট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদ তাকে অভিশংসন করতে পারবে না।' অভিশংসন তদন্তে দুই সপ্তাহে ১২ জন প্রত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দির পর এমন মন্তব্য করলেন ট্রাম্প। তবে গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই তদন্তে এরই মধ্যে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি হুমকির মুখে পড়েছে; এমনকি ২০২০ সালে পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার অংশগ্রহণকেও এটি অনিশ্চিত করে তুলেছে। তদন্তে গত দুই সপ্তাহে ১২ জন প্রত্যক্ষদর্শী প্রকাশ্য শুনানিতে অংশ নিয়েছেন। এতে অংশ নিয়ে খোদ হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারাই বলছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপ স্বাভাবিক ছিল না। তবে শুনানিতে অংশ নেওয়া একাধিক সাক্ষীর তীব্র সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে ডেমোক্রেটদের হাতে। তাদের নেতৃত্বেই পরিচালিত হচ্ছে অভিশংসন তদন্ত। এটি শেষ হলে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হতে পারে। তারপর সিনেটে বিচার অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় দোষী সাব্যস্ত হলে ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে। তবে সিনেটের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে রিপাবলিকানদের হাতে। সেক্ষেত্রে তাকে সরানো কঠিন হয়ে পড়বে ডেমোক্রেটদের জন্য। প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, পরিষ্কার প্রমাণ রয়েছে, ট্রাম্প ব্যক্তিগত স্বার্থে তার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। আর তা করতে গিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন করেছেন। রিপাবলিকানদের ভরসার জায়গা হচ্ছে, তদন্তের শুনানিতে কোনো সাক্ষীই সরাসরি এটা বলেননি যে, কাঙ্ক্ষিত তদন্ত করাতে ট্রাম্প সরাসরি ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার শর্ত দিয়েছেন। রিপাবলিকান সদস্য উইল হার্ড বলেন, 'আমি এমন কোনো প্রমাণের কথা শুনিনি যে, প্রেসিডেন্ট ঘুষ বা চাঁদা দেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন।' অন্য অনেক রিপাবলিকানের মতো তিনিও মনে করেন ট্রাম্প যা করেছেন তা ঠিক নয়; কিন্তু এটা অভিশংসন করার মতো বিষয়ও নয়। এদিকে অভিশংসন তদন্তের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের একটি 'এথিকস গ্রম্নপ' জানিয়েছে, তাদের হাতে ইউক্রেন ইসু্যতে ট্রাম্পের সাবেক ব্যক্তিগত আইনজীবী রুডি গিলানির সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও'র ফোনালাপের তথ্য আছে। তথ্য অধিকারের ভিত্তিতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত নথি সংগ্রহে সমর্থ হয়েছে 'আমেরিকান ওভারসাইট' নামের সংস্থাটি।