মহারাষ্ট্রে মহানাটক

সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস

ফড়নবিশ সরকারের বৈধতা নিয়ে আজ সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত

প্রকাশ | ২৬ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
আস্থাভোট নিয়ে আজ (মঙ্গলবার) সিদ্ধান্ত জানাবে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। তার মধ্যেই ভারতের মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট। সোমবার সকালে একদিকে দেশটির শীর্ষ আদালতে যখন শুনানি চলছিল, তখন রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির সঙ্গে দেখা করতে রাজভবনে যান তিন দলের প্রতিনিধিরা। সেখানে গিয়ে মোট ১৬২ জন বিধায়কের স্বাক্ষর সংবলিত চিঠি জমা দেন তারা। বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাতারাতি সরকার গঠন করা অজিত পাওয়ার এবং তাকে সমর্থন দেওয়া দুই বিধায়ক ছাড়া ৫১ জন এনসিপি বিধায়কই ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন বলে জানা গেছে। সংবাদসূত্র : এবিপি নিউজ, পিটিআই ২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় ম্যাজিক সংখ্যা ১৪৫। বিধানসভা নির্বাচনে ৫৬টি আসনে জয়ী হলেও, জোটের পক্ষে সাত স্বতন্ত্র বিধায়কসহ মোট ৬৩ জনের সমর্থনের স্বাক্ষর জমা দেয় শিবসেনা। কংগ্রেসের পক্ষে ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন ৪৪ জন বিধায়ক। অজিত পাওয়ারের সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারে অংশ নেওয়া তিন বিধায়ক ছাড়া এনসিপির ৫১ জন বিধায়ক চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। এর পাশাপাশি, শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোটের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে সমাজবাদী পার্টিও। তাদের দুই বিধায়কও ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। এখনো অবশ্য নিজেদের অবস্থানেই অনড় বিজেপি। এনসিপি এবং স্বতন্ত্র বিধায়কসহ তাদের পক্ষে ১৭০ জনের সমর্থন রয়েছে বলে সোমবারও আদালতে জানিয়েছে তারা। অন্যদিকে, শারদ পাওয়ার এখনো দাবি করছেন, অজিত পাওয়ার ছাড়া বাকি ৫৩ বিধায়কের সমর্থন তাদের সঙ্গে রয়েছে। শিবসেনার সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গড়তে যে চিঠি তৈরি করা হয়েছিল, সবাইকে অন্ধকারে রেখে তাতেই দলীয় বিধায়কদের স্বাক্ষর করিয়ে নেন অজিত। কিন্তু পরে সত্যিটা জানতে পেরে সবাই ফিরে এসেছেন। একটি হোটেলে এনসিপির চার বিধায়ককে 'আটকে' রাখা হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। তার দাবি, এই মুহূর্তে মাত্র দুই জন বিধায়ক রয়েছেন অজিত পাওয়ারের সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়েই মূলত বিজেপির সঙ্গে দীর্ঘ তিন দশকের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে শিবসেনার। কিন্তু অজিত পাওয়ার এবং এনসিপি বিধায়কদের দলে টানতে সেই বিজেপির পক্ষ থেকে ওই মুখ্যমন্ত্রী পদের টোপই দেওয়া হয় বলেও দাবি করেন রাউত। তার অভিযোগ, অজিত পাওয়ারকে আড়াই বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্বের লোভ দেখানো হয়েছিল। রাজ্য মন্ত্রিসভায় ২০টি আসন দেওয়া হবে বলে লোভ দেখানো হয়েছিল এনসিপি বিধায়কদেরও। ফড়নবিশ সরকারের বৈধতা নিয়ে আজ সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত গত শনিবার ভোরে যেভাবে তড়িঘড়ি করে বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন রাজ্যপাল, সে প্রক্রিয়া কি সাংবিধানিকভাবে বৈধ ছিল? যা জানা যাবে আজ। এদিন স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার প্রায় এক ঘণ্টা ২০ মিনিট ধরে বিজেপি তথা সরকার পক্ষ এবং শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি জোটের যুক্তি, পাল্টা যুক্তি শোনে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এন ভি রমণ, বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চ। এরপর জানানো হয়, সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে মঙ্গলবার সকালে। দেশটির শীর্ষ আদালতে বিজেপি সোমবার দাবি করে, তাদের কাছে ১৭০ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। অন্যদিকে, শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি জোটের পাল্টা দাবি করে, তাদের জোটকে সমর্থন করছেন বেশির ভাগ বিধায়ক। দু'পক্ষই আদালতে নিজেদের দাবির পক্ষে চিঠি ও তথ্যপ্রমাণ জমা দিয়েছে।